আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বয়স ও মেধা ডাকাতি এবং ভিকারুন্নেসা!

সুদুরে সকালের ডাক শোনা যায়, ভোরের লাল আভার পরেই শুভ সকাল

বাংলাদেশের একটি নামকরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিকারুন্নেসা। এ প্রতিষ্ঠানে নিজের মেয়েকে ভর্তি করার জন্য পিতা মাতারা দারুন ভাবে উৎসুক। এ বিদ্যালয়টিকে ঘিরে অধিকাংশ কন্যা সন্তানদের পিতা-মাতার আগ্রহের শেষ নেই। এ আগ্রহটা কিছু কিছু বাবা মায়ের ভেতর মাত্রাতিরিক্ত। এরকম একজন আমার ভাবী।

আমার ভাবীর শখ তার মেয়ে ভিকারুন্নেসায় পড়বে। সেই স্বপ্ন পূরনে সে তার মেয়ের বয়স যখন ২.৫ বছর তখন থেকে সংগ্রাম করে আসছে। এখন তার মেয়ের বয়স ১০.৫ বছর। গত ২ বছর তিনি তার মেয়েকে ভিকারুন্নেসায় কাস ওয়ানের জন্য ভর্তি পরীক্ষা দিয়িয়েছেন। চান্স হয়নি।

এবার আবার তিনি চেষ্টা চালাচ্ছেন। সে উদ্দেশ্যে ময়েকে ৩ টি কোচিং করারচ্ছেন। তিনটি কোচিং করে মধ্যরাত অবধি পড়া লেখা করতে করতে মেয়ে বারবার অসুস্থ্য হয়ে যাচ্ছে তাতে কোন সমস্যা নেই। যেভাবেই হোক ময়েকে ভিকারুন্নেসায় ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করাতেই হবে। ভাবীর এ স্বপ্ন পূরণের জন্য ইতমধ্যেই আমার ভাতিজীর জন্মনিবন্ধন সার্টিফিকেটের সংখ্যা হয়েছে তিনটি।

আগামীবার হবে আরো একটি। ১১ বছর বয়সেও ভাতিজীর বয়স প্রতি বছর ৫ বছর হচ্ছে। এটাকে কি বয়স চুরি না ডাকাতি বলে আখ্যয়িত করা যায়? বয়স চুরীর ব্যপারে ভাবীর ভাষ্য হলোঃ ১২ বছরের নিচে কোন মেয়ে ভিকারুন্নেসায় ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয়না, হওয়া সম্ভবও না এবং এ বিষয়টি স্কুল কর্তৃপক্ষও খুব ভাল ভাবে জানেন। কিন্তু তারা বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে থাকেন। একটি মেয়ে যদি ১২ বছর বয়সে ক্লাস ওয়ানে ভর্তি হয় তাহলে এ মেয়েটি যখন এসএসসি পরীক্ষা দেবে তখন তার বয়স হবে ২২ বছর।

কিন্তু সার্টিফিকেটে এ মেয়েটির এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করার বয়স উল্লেখ করা থাকে ১৬-১৭ বছর। এ স্কুলের মেয়েরা যখন এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে তখন তারা তাদের থেকেও ৫-৬ বছর কম বয়সী পরীক্ষার্থীদের সাথে তারা প্রতিযোগিতা করছে। অর্থাৎ এ স্কুলের মেয়েরা মাস্টার্স পড়ার বয়সে (২২ বছরে) এসে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। এভাবেই এ স্কুলটি শিশুদের বয়স ও মেধা ডাকাতি করে তরুনীদের দিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিয়িয়ে প্রতিবছর জিপিএ তালিকার শীর্ষে অবস্থান করছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।