আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নদী রক্ষায় হাইকোর্টের রায়

কুড়াই প্রহরব্যেপে স্মৃতিলগ্ন ধূলি

জনাব বিচারপতি এবিএম খায়রুল হক ও জনাব বিচারপতি মো: মমতাজ উদ্দিন আহমেদ-এর সমন্বয়ে গঠিত মহামান্য সুপ্রীমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের ডিভিশন বেঞ্চ আজ ২৫ জুন, ২০০৯ নদী দখল রোধে এবং নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনতে এক জনস্বার্থমূলক মামলায় রায় প্রদান করেন। প্রেস বিজ্ঞপ্তি হিউম্যান রাইটস এ্যান্ড পীস ফর বাংলাদেশ-এর দায়েরকৃত মামলায় পরবর্তীতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) পক্ষভূক্ত হয়। মামলার শুনানীকালে আদালত পরিবেশ অধিদপ্তর, সংশ্লিষ্ট চার জেলা প্রশাসক, ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটিএ, ওয়াসা ও সিটি কর্পোরেশনের প্রতিনিধিদের বক্তব্য শোনেন। শুনানীকালে বেলা কর্তৃক নদীর দখল ও দূষণ সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ দলিলাদী এবং বিশেষজ্ঞ মতামত আদালতে উপস্থাপন করা হয়। শুনানী অন্তে নদীর দখল ও প্রবাহ হারানো বিষয়ে আদালত গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে যে রায় প্রদান করেন তাতে সরকারকে নিম্নলিখিত নির্দেশাবলী প্রদান করা হয়েছে: সি.এস ম্যাপ অনুসারে ভূমি জরিপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের সার্বিক সহযোগিতায় ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসকগণ আগামী ৪ মাসের (১ জুলাই - ১ নভেম্বর, ২০০৯) মধ্যে বালু, তুরাগ, শীতলক্ষ্যা, বুড়িগঙ্গা নদীর সীমানা চিহ্নিত করবে এবং ১৫ ডিসেম্বর, ২০০৯ এ বিষয়ে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করবে; পরবর্তী ৬ মাসের মধ্যে নদীগুলোর সীমানা দৃশ্যমান (ড়হ ংরঃব) করতে খুঁটি গাঁথতে হবে, সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করতে হবে এবং ভরাটকৃত অংশ হতে মাটি অপসারণ করতে হবে; অবৈধ স্থাপনা যারই হোক না কেন কোন প্রকার পক্ষপাতমূলক আচরণ ছাড়াই অপসারণ করা হবে; পরবর্তী ১ বছরের মধ্যে নদীর তীরে ওয়াকওয়ে নির্মাণ/সারিবদ্ধভাবে গাছ লাগাতে হবে, প্রয়োজনে কোন কোন জায়গায় দেয়াল নির্মাণ করতে হবে, স্থানভেদে এ দায়িত্ব পালন করবে সিটি কর্পোরেশন, সংশ্লিষ্ট পৌরসভা, গণপূর্ত বিভাগ ও বিআইডব্লিউটিএ; নদীগুলোর সীমানা নির্ধারণ না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা, নারায়নগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ ও গাজীপুরের জেলা প্রশাসককে অন্যত্র বদলী করা যাবেনা; উপরোক্ত কার্যাবলী সম্পাদনের জন্য অর্থের প্রয়োজনে অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ যোগান দিবে; এ কাজের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেয়া হয়; অপসারণের পর সরকার অবৈধ স্থাপনা নির্মাণকারী ও মাটি ভরাটকারীদের কাছ থেকে অপসারণ বাবদ খরচ পাবলিক ডিমাণ্ড রিকভারী আইন অনুযায়ী আদায় করতে পারবে; সীমানা নির্ধারণের সময়সীমার মধ্যে এ চারটি নদীকে পরিবেশ সংরক্ষণ আইন, ১৯৯৫ এর ধারা ৫ অনুযায়ী বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয় পরিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা ঘোণনার করবে; ভূমি মন্ত্রণালয় পোর্ট এলাকার ভূমি বিআইডব্লিউটিএ বরাবর ৬ মাসের মধ্যে হস্তান্তর করবে।

আদালত উপরোক্ত চারটি নদীকে বাঁচাতে বংশী ও ধলেশ্বরী নদী এবং পুঙ্গলী, ট্গংী ও তুরাগ খালের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ এবং নদীগুলোর সাথে এ খালগুলোর এবং যমুনা নদীর প্রয়োজনীয় সংযোগের বিষয়ে কার্যক্রম গ্রহণে সরকারের প্রতি আহবান জানান। একইসাথে দেশের সকল নদীর সার্বিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নৌ পরিবহণযোগ্য নদী রক্ষায় সুপারিশ প্রণয়নে জাতীয় পর্যায়ে একটি কমিটি গঠনের আহবান জানান। মামলাটির রায় প্রদান করা হলেও আদালত বিষয়টিকে চলমান মোকদ্দমা হিসেবেই বিবেচনায় রেখেছেন এবং প্রতি ৬ মাস অন্তর কাজের অগ্রগতি বিষয়ে প্রতিবেদন প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন। বেলা’র পক্ষে আইনজীবী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান ও মো: ইকবাল কবির মামলা পরিচালনা করেন। আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী মানজিল মুর্শেদ এবং সরকার পক্ষে ডেপুটি এটর্নী জেনারেল জনাব মোস্তফা জামান ইসলাম নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন।

বার্তা প্রেরক: মো. ইকবাল কবির আইনজীবী, বেলা ০১৭১১৫৬৭৪৮০

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।