আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"তাও তে চিং" তরিকা।।।

যখন আমি হবো শুধুই স্মৃতি, আমার এই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা গুলো সবার সামনে আমাকে আরো স্মৃতিময় করে তুলবে।
মানুষ নানা কারণে মন্দ থাকে। কেন এই মন্দ থাকা? এ নিয়ে হাজার বছর ধরে দার্শনিকরা চিন্তা করে করে চুল পাকিয়েছেন। উত্তর এসেছে অসংখ্য। আড়াই হাজার বছরের পুরনো দর্শন তাওবাদ।

দার্শনিক লাওৎস মানুষকে ভালো থাকার তরিকা বলে দিয়েছেন। বুদ্ধের মতো নিঃসঙ্কোচে বলেছেন, বাসনাই সব দুঃখের কারণ। বাসনাকে বশে রাখো, মন্দ থাকবে না। কিন্তু বাসনাকে বশে রাখা কি অত সহজ! আজ থেকে প্রায় আড়াই হাজার বছর আগে মহামানব লাওৎস চীন দেশে জন্মগ্রহণ করেন বলে জানা যায়। নিশ্চিত করে কিছুতেই আজ এ কথা বলার কারণ নেই যে, ঠিক কোন সালে, কোন মাসে ও কোনখানে জন্মেছিলেন তিনি।

তিনি ছিলেন মহান চীনা দার্শনিক কনফুসিয়াসের সমসাময়িক। লাওৎস সম্পর্কে এর চেয়ে বেশি কিছুই জানা যায় না। তবে একাধিক লাওয়ের অস্তিত্ব সম্পর্কে ঐতিহাসিকরা মত ও মতান্তর প্রকাশ করেছেন। খ্রিস্টপূর্ব ৬০৪ সালকে মনে করা হয় লাওৎসের আবির্ভাব বছর। লাওৎস নামের মানে হচ্ছে ‘বৃদ্ধ-তরুণ’।

লাওৎসের দর্শন মানেই সহজিয়া দর্শন। একটি সহজ-সরল, নির্ভেজাল জীবনবোধের প্রবক্তা হিসেবে তাঁকে চিহ্নিত করা যায়। তাও মানে এমন এক সার্বভৌম সত্তা, যাকে সংজ্ঞার মধ্যে গ্রেফতার করা যায় না। তাওকে বিদ্যাবুদ্ধি দিয়ে অর্জন করা সম্ভব নয়। তাও বুদ্ধির অতীত।

কেবল হৃদয়বোধ দিয়ে তাওকে অনুভব করা সম্ভব। প্রায় পাঁচ হাজার চীনা অক্ষরের সমন্বয়ে রচিত ‘তাওতে চিং’ গ্রন্থটিতে বার বার এক কৌতূহলবোধক স্ববিরোধিতামূলক অনুষঙ্গকে আবিষ্কার করা যায়। সাম্প্রতিক দর্শনে যেমন ‘বায়োনারি অপজিশন’র সাক্ষাৎ মেলে তেমনি তাও দর্শনেও পাওয়া যায় সুন্দর-অসুন্দর, সত্য-মিথ্যা, সুখ-অসুখ, জ্ঞান-অজ্ঞান, ক্ষুধা-তৃপ্তি এ জাতীয় বিরোধমূলক অনুষঙ্গের সুষম সম্পর্ককে। তাও দর্শনের মূল লক্ষ্যই হচ্ছে ‘অন্তর্গত প্রশান্তি’ অর্জন। দেহের দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে অভিলাষমুক্ত হৃদয়ের অধিকারী হয়ে বিশ্বাস ও কর্মগত ঐক্যের সোপান রচনা করেছেন লাও।

মানসিক ভারসাম্যপূর্ণ চিত্তের সুস্থিরতা ও একটি সমাহিত চিত্ত রচনা করাই যেন তাও দর্শনের মূল কথা। আমাদের বর্তমান জীবন প্রতিযোগিতাময়। সর্বত্রই ইঁদুর দৌড়। লাও বর্ণিত ভালো থাকার তরিকার প্রথম সবকই হলো ধৈর্য ধারণ ও চিত্তকে বাসনামুক্তকরণ। যা বলা সহজ, কিন্তু করা কঠিন।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।