আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মূল্যবোধ ও ধর্মকে আলাদা করে দেখার পথ নেই

---

একটি জাতিসত্তার চেতনাবোধ ও তা থেকে উৎসারিত সামাজিক শৃঙ্খলার সাথে তার আধ্যাত্মিক চেতনাবোধের এক অকর্তনীয় সম্পর্ক রয়েছে। এই আধ্যাত্মিক চেতনাবোধকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করতে গিয়ে সমাজবিজ্ঞানীরা বিভিন্ন তাত্ত্বিক জটিলতার সম্মুখীন হয়। যেমন: যৌন তাড়নায় কেউ তার পরম পিতৃ ও মাতৃজনের সাথে যৌনাচার করে না। সংস্কৃতির এই অংশটি সামাজিক শৃঙ্খলা টিকিয়ে রাখতে ব্যাপক সহায়ক। কিন্তু সমাজবিজ্ঞানীদের প্রশ্ন , এই আচরণের উৎস কোথায়? বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠির আচার-আচারণ, কৃষ্টি কালচারের উপর দীর্ঘ গবেষণার পর দেখা গেল স্পষ্টত তার উৎস হচ্ছে ধর্ম।

দেখা যায় কালের কোন এক সময়ে প্রত্যেক জাতির কাছে একজন আধ্যাত্মিক গুরুর আবির্ভাব, যে তার সমাজকে এমন কিছু চেতনাবোধে আবদ্ধ করে , যা মানুষের সাধারণ বুদ্ধিমত্তার গণ্ডিতে ধরা পরে না। চেতনাবোধের সেই শৃঙ্খলা সামাজিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে ব্যাপক সফলতা পায়। অত:পর সমাজবিজ্ঞানীরা বুঝতে পারলেন সমাজ থেকে আধ্যাতিকতা একেবারে বিচ্ছিন্ন করে দিলে সমাজে ব্যাপক অরাজকতা সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই চেষ্টা করা হল ধর্মীয় চেতনাবোধের কিছু অংশকে সমাজশৃঙ্খলার স্বার্থে টিকিয়ে রাখার। যেমন: সত্য কথা বলা, লেনদেনে বিশ্বস্ততা, যৌনাচারে সুশৃঙ্খলতা ইত্যাদি।

তাই তারা সমাজব্যবস্থার ধর্ম নিরুপেক্ষতার রূপ প্রণয়ন করলেন যেন আধ্যাতিকতাকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করলেও , সামাজিক শৃঙ্খলার ধর্ম-উৎসারিত সুকুমারবৃত্তিগুলো যেন টিকে থাকে। কিন্তু তাও ছিল ত্রুটিপূর্ণ। কারণ আধ্যাতিকতার মূলকে বিচ্ছিন্ন করে তার কিছু সদগুন দীর্ঘকাল ধরে টিকিয়ে রাখা , প্রাকৃতিক নিয়মেই , সম্ভব নয়। যেমন: একটি গাছ থেকে কিছু ডাল পালা কেটে নিলে , সেই ডালপালা গুলোর সজীবতা অল্প সময়ের জন্যই স্থায়ী হয়। অল্পক্ষণের মধ্যেই সেই সজীব ডালপালাগুলো মৃত কাঠখন্ডে পরিণত হয়।

আধ্যাতিকতার মূল অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু সদগুণাবলির পরিণতি ঠিক তাই! তাইতো আমরা দেখি, ধর্ম নিরুপেক্ষতা প্রয়োগের প্রাথমিক সময়টা কিছুটা শৃঙ্খলা পূর্ণ হলেও অধুনাকালের আমেরিকা ও ইউরোপের সমাজ অতি নিকটাত্মীয়ের মধ্যে যৌনাচার, বিকৃত যৌনাচার , পশুকাম , গে লেজবিয়ানিজম, লেনদেনে চরম অসততা ইত্যাদিতে অতিষ্ঠ। এবং যে অবশিষ্ট সদগুন এদের মধ্যে যা রয়েছে তাও প্রচণ্ড গতিতে নিম্নগামী। এই অবশিষ্ট সুকুমারবৃত্তিগুলো যে একদিন মৃত কাঠখণ্ডে পরিণত হবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। সুতরাং মুহাম্মদ , যিশু অথবা মুসার মূল দীক্ষা থেকে বিচ্ছিন্ন করে কয়েকটি সদগুন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়। যারা কোন জাতির চেতনাবোধকে ধর্ম অথবা আধ্যাতিকতা থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন রেখে, সমাজ শৃঙ্খলা স্বার্থে কয়েকটি সদগুন টিকিয়ে রাখতে চান তারা নিজের অজান্তেই সমাজকে দূর্নিতীপরায়ণ , অসৎ , ঠগবাজ, নিকটাত্মীয় যৌনাচারপরায়ণ , পশুকামী ও সমকামি সমাজে পরিণত করেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।