কিছুক্ষণ আগে একটা সরকারি অফিস থেকে ঘুরে এলাম। আমার এক বন্ধু সেখানে কাজ করে। ছোট্ট একটা কাজ করতে দিয়ে এলাম। বন্ধুকে জিজ্ঞাসা করলাম, কাল পরশুর মধ্যে হবেনা?
সে জানালো, নারে...মিনিমাম দশ দিন সময় দিতে হবে।
আমি অবাক হলাম, একদিনের কাজ এতো দিন কেন?
সে আমাকে বলল, আয় দেখাই কেন?
সে তার পুরো অফিস ঘুরে দেখালো।
অফিসে খুব কম ষ্টাফ উপস্থিত। তার রুমের সাতজনের মধ্যে এসছে দুইজন। সে আরো জানালো, ম্যানেজারই আসেনা চারদিন হলো। এর আগিও আমি একটা সিগ্নেচারের জন্য তিনদিন কাটিয়েছি।
আমি চুপ করে গেলাম।
মিনমিন করে বললাম, তাহলে মাসখানেক পরে ফোন দেই। কি কস?
আমাদের সরকারি অফিসগুলো এইভাবেই চলছে। আরেকদিনের ঘটনা বলি, মাত্র দশটা পোস্ট কার্ড কিনতে আধঘন্টা কাটাতে হয়েছিল পোষ্ট অফিসে। দুই জন কর্মকর্তা কাজ না থাকার পরও কি কাজ যে করে আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন সেই রহস্য এখনো ভেদ করতে পারি নাই। পনের মিনিট দাঁড় করিয়ে শুধু সামনের ডেস্ক-ই গোছলেন।
আমি তিনবার নিজের অস্তিত্ব জানান দিলাম।
লাভ হলো না। উত্তর, একটু দাঁড়ান।
তারপরের বারো তেরো মিনিট লাগলো দশটা পোষ্ট কার্ড গুনতে। একটা গোনে আর পাশের কলিগের দিকে মুখ ঘুরিয়ে রসালোচনা, শুনছেন নাকি জহির সাহেবের মেয়ে তো এক ছেলের সাথে পালিয়েছে।
আবার, গুনছেন।
আবার মেয়েটাই খারাপ যা শুনেছি।
আবার, প্রথম থেকে গোনা...এক ...দুই...।
আবার জহির সাহেবের মেয়ে।
বিস্ময়কর এই সরকারি সেবা।
দশটা পোষ্টকার্ড কিনতেই এই যন্ত্রণা! আর ...
জ্বীনের সেই গল্পটা তো সবারই জানা। এক সরকারি অফিসের কর্মকর্তা এক চেরাগের জ্বিনকে পেলেন। জ্বিন জানালো, তিনটা দাবী পুরণ করা হবে। লোকটা রাজি হলো। প্রথমে একটা সুন্দর নিজস্ব দ্বীপ চাইলো।
নিয়ে গেল সেখানে
তারপর সেখানে গাড়ী বাড়ী।
পেল।
তারপর বলল, এমন একটা কাজ চাই যেখানে কাজ না করে বেতন পাওয়া যাবে।
জ্বিন তাকে পুনরায় তার সরকারি অফিসে এনে রেখে দিল।
এর চেয়ে কাজের জায়গা আর কোথায় আছে? কাজ না করে বেতন।
তাই ইদানিং আমার অফিসে না যেতে ইচ্ছে করা, কাজ করতে না চাওয়া এবং বসে বসে বেতন নিতে চাওয়ার শখ জাগছে।
ইস! জ্বিনটাকে যদি একটু পাওয়া যেত।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।