আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গান শুনতে শুনতে মনে পড়ে গেল গান'অলাকে দেখা আমলাতান্ত্রিক জটিলতা সম্পন্ন এক কনসার্টের কথা - শেষ পর্ব (লিংকসহ অখন্ড)



প্রথম অংশ: Click This Link দ্বিতীয় অংশ: Click This Link ৫. গান শেষ করে সুমন ঢুকে গেলেন গ্রীনরুমে। আমরা সেদিকে রওয়ানা হলাম। অল্পদুর যেতেই পথ আগলে দাঁড়ালেন আয়োজকদের একজন, না ভাই যাওয়া যাবেনা। অনেক চেষ্টা করে বোঝাতে ব্যার্থ হলাম। শরনাপন্ন হলাম অনুষ্ঠান কাভার করতে আসা একটি বেসরকারী চ্যানেলের প্রডিউসর , বড় ভাই রনি ভাইয়ের।

রনি ভাই নিয়ে গেলেন গ্রীনরুম পর্যন্ত। আমরা সেখানে গিয়ে আমাদের পথ আগলে দাঁড়ানো লোকটির দিকে ব্যাপক তাচ্ছিল্যের সাথে তাকালাম। দৃষ্টি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করলাম, আটকে তো রাখতে পারলা না। হঠাৎ রনি ভাইয়ের কি এক কাজের ব্যাস্ততায় চলে যেতে হলো। আমরা সুমনকে দেখার যতটুকু আলো দেখেছিলাম সব অন্ধকারে ডুবে গেলো।

আবার সেই লোকের দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকালাম। সে এবার উল্টো ভাব নিল। এদিকে আমাদের মতো অনেক সুমন ভক্ত নানা সিষ্টেমে এসে হাজির। সকলেরই লক্ষ্য সুমনকে সামনে থেকে একবার দেখা। সবাই ইতিমধ্যে সে লক্ষ্যেই চেষ্টা তদবীর চালাতে লাগলো।

আয়োজকদের বরাবর। কারন গ্রীনরুমের দরজা বন্ধ। একবার ভেতরে যাবার জন্য সবাই প্রমাণ করার চেষ্টা চালাচ্ছে, কে সুমনের কত বড় ভক্ত। একজনের বর্ণনায় জানলাম, সুমনের গান না শুনলে তার ঘুম আসেনা। আরেকজন জানালো, সে ঘুম থেকে জেগে আগে সুমনের গান শোনে তারপর অন্য কাজ করে।

আরো অনেকের অনেক কথা। কিন্তু আয়োজকদের এক কথা, না। ঢুকতে দেয়া যাবেনা। অনেকন চেষ্টা কদবীর করে সেখানে ডিউটি দিতে আসা পুলিশের বদান্যতায় ঢুকলাম। তবে যা বুঝলাম, তিনি আমাদের ভালোবাস দেখে এ ব্যবস্থা করেননী।

তিনি এজন্য করেছেন যে সুমন যতক্ষণ এখানে আটকা থাকবে ততক্ষণ তার ডিউটি চলবে। তাই নিজের জন্যই আমাদের এই সুবিধা প্রদান কার্যক্রম। ৬. গ্রীণরুমে ঢুকেই সিরিয়ালে দাঁড়ালাম। এক এক করে সুমন ভক্তরা হাত মেলাতে ব্যাস্ত। কেউ তার দিকে তাকিয়ে অযথাই হাসছে।

কেউ জড়িয়ে ধরে ছবি তোলার চেষ্টা করছে। এর মাঝে এক অতি উৎসাহি স্মার্ট যুবক 'তোমাকে চাই' গানটি কাকে নিয়ে লেখা হয়েছে জানতে চেয়ে সুমনকে বিব্রত করে দিল এবং নিজেকেও বিব্রত পরিস্থিতিতে পড়তে হলো। সুমন বললো, সেটা তোমাকে কেন বলবো, বাবা? বোকা সেই তরুণের দিকে হতাশ দৃষ্টিতে তাকালাম, ব্যাটা বলদ এখানে সাবিনা আছে বোঝা উচিত ছিল। একসময় আমারও সিরিয়াল আসলো। এগিয়ে গেলাম।

হাত বাড়ালাম । গান'অলাও বাড়িয়ে দিল তার হাত। কাধে হাত রেখে একটা ছবিও তুললাম। শখ পুরণ হলেও কেউ যেতে চাচ্ছেনা। এদিকে পুলিশ কর্মকর্তার তাড়া, ভাই চলে যান, চলে যান।

বের হবার আগে আবার একবার সুমনের দিকে তাকালাম। মনে হলো এ সুমন নয়। জীবনমুখী বাংলা গানের একটি প্রবাহমান নদী। যে নদীর বয়স ষাটের কাছাকাছি এবং যা তিরিশ চল্লিশ বছরেরও অধিক সময় ধরে বাংলার গান পাগল মানুষের পিপাষা মিটিয়ে চলছে অবিরাম। কারন, সে সুমন চট্টোপাধ্যায়ই হোক অথবা কবীর সুমন, এই বাংলায় গান'অলা একজনই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।