আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমি...আমার বাসা...আর ভূত...

সত্য অথবা মিথ্যা দুটোই হতে পারে। বিশ্বাস করা আর না করা আপনার ব্যপার।

নতুন বাসায় আমাদের ৫ মাস পূর্ণ হল। বেশ সুন্দর আর খোলামেলা একটা বাসা। বাসার ঠিক সামনে একটা বিশাল কৃষ্ণচুড়া গাছ।

বারান্দা গুলো বেশ বড়। সব মিলিয়ে আমাদের সবার এই বাসাটা অনেক পছন্দ হয়েছে। এই বাসায় সব রুম আলাদা আলাদা। মানে এক রুম থেকে অন্য রুমে যাওয়া যায় না। আমার রুমটা একদম এক সাইডে।

শুধু ড্রইং রুমটা কেউ পছন্দ করে না। কারন এই রুমের ২ পাশে ২ টা বিল্ডিং থাকায় রুমটা বেশ অন্ধকার থাকে সবসময়। বাসার একটা ধারনা দিলাম। এবার আসি মূল কাহিনিতে। আমাদের এই বাসায় আসার পর থেকেই আমরা বেশ কিছু আজব ব্যপার লক্ষ্য করেছি।

যা ঠিক স্বাভাবিক না। যেমন, নতুন বাসায় আসার ঠিক ২ দিন পর সকালে ঘুম ভেঙ্গে গেল। ঘড়িতে ৬ টার মত বাজে। দরজায় কেউ শব্দ করছে। দরজা লক করা ছিল না।

তবুও ভিতরে না এসে শব্দ করবে কেন?? যাই হোক উঠলাম। দরজা খুললাম। একি!!! কেউ নাই ওখানে!!! আম্মুর কাছে গেলাম। আম্মু আমাকে দেখে বলে, এত সকালে উঠছ কিভাবে?? সূর্য ঠিকমত উঠে নাই?? বুঝলাম আম্মু তো যায় নাই। তারপর সব বললাম আম্মুকে।

মা বলল, ভুল শুনছ। আমিও মেনে নিলাম। কিন্তু ঠিক একই ঘটনা যখন ভাইয়ার সাথে ঘটল তখন সবাই একটু অবাক হল। রোজার সময়। সেহরির জন্য সবাই উঠেছে।

ভাইয়া অজু করতে গিয়েছিলেন। একটু পরে এসে বলেন, আমার দরজার কে আওয়াজ করছে??দরজার সামনে দাড়ায় থাকে। অথচ কথা বলে না। আমরা তাকিয়ে ছিলাম বোকার মত। আমি তো পা ভেঙ্গে বসে আছি, নড়ার উপায় নাই।

মা আর ভাবি তো রান্নাঘরে। তাহলে এমন করল কে?? তখন মা আমার ঘটনা টা বলল ভাইয়াকে। ভাইয়া বলে, কিরে তোরে তো দেখি আমার আগে ভুতে ধরছে। তবে ভুতটা ভালই। খালি ঠক ঠক করে।

আর কিছু করে না। ভদ্র ভূত!! আর ভাবি তো প্রায়ই বলে কে যেন দুপুরে ভাবির রুমের দরজার হাতল ধরে ঘুরায়। ঠিক ২ দিন আগে দুপুরে ৩ টার দিকে ভাবি পাশের রুম থেকে আমাকে ফোন দিল তুমি কি আমার রুমের সামনে আসছ একটু আগে?? মানে দরজার সামনে এসেছিলে?? আমি বলি, এ কেমন কথা?? তোমার দরজায় তো ফুটা নাই যে আমি দাড়ায়ে দাড়ায়ে দেখব!! ভাবি হেসে বলে, অনেকক্ষণ থেকে খেয়াল করছি কে যেন দরজার সামনে আসছে আর যাচ্ছে। একদিন ইফতার করে বসে আছি নিজের রুমে। মা পাশে শুয়ে আছেন।

আমি ক্যামেরা অন করে জানালার দিকে ছবি তুলছি। ক্যামেরা টা বারান্দার দিকে নিতেই আমি খেয়াল করলাম সেখানে ফেস ইন্ডিকেটর শো করছে। আমি সাথে সাথে মা কে ডাকলাম। মা দেখ এটা কি। মা ফিরতে ফিরতে দেখি সেটা সরে গেল মা তো সব শুনে হাসতে হাসতে সবাইকে বলে দিলেন।

ভাবি ছাড়া বাকি সবাই খুব হাসল অনেক তো ভয়ের কাহিনি বললাম। এবার লাস্টে রোম্যান্টিক ভয়ের কাহিনি বলে শেষ করি আগেই তো বলেছি ড্রইং রুমটা কেউ পছন্দ করে না। আমাদের ঐ রুমের বারান্দা থেকে পাশের বাসার বারান্দা মাত্র ২ হাত দূরে। ঐ বাসায় কেউ থাকে না। একদম ফাকা।

মনে হয় ঐ বাসার ভূত গুলাই বারান্দা দিয়ে আমাদের বাসায় এসে পরে। আমি আর আমার ভাগ্নিরা মিলে একটা খেলা খেলি। সেটা হচ্ছে কাগজের ছোট ছোট বল বানিয়ে ঐ বাসার বারান্দায় ছুড়ে দেয়া। যে বেশি ফেলতে পারবে সে জিতবে। এভাবে কাগজের টুকরো ফেলতে ফেলতে স্তুপ হয়ে যায়।

মাঝে মাঝে একটা বুয়া এসে ঝাড়ু দেয়। কিন্তু আর কাউকে ঐ বাসায় কখনো দেখিনি। সেদিনও আমি একা একা কাগজ নিয়ে বল বানাচ্ছি আর ঐ বারান্দায় ফেলছি। একসময় দেখি কাগজ শেষ। নিয়ে আসলাম আবার।

এসে যখন আবার দাঁড়ালাম দেখি অইখানে সাদা কাপড় পরা এক ছেলে দাঁড়ানো হঠাৎ দেখে সত্যি ভঁয় পেয়েছিলাম। এদিকে পিঠ দিয়ে দাঁড়ানো। আওয়াজ শুনে এদিকে ফিরল। মারাত্তক সুন্দর একটা ছেলে। চশমা পরা।

মোবাইলে কথা বলছিল। তখন শিওর হলাম না এটা মানব প্রজাতি। ভূত হলে তো আর মোবাইলে কথা বলত না। তারপর ভদ্র মেয়ের মত ঘরে চলে আসলাম। ভাবছিলাম, ওইটা ভূত হলেই ভাল হত


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।