আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

১০০ ঘণ্টা পরও অক্ষত সাদিক

ধ্বংসস্তূপে ১০০ ঘণ্টা চাপা থাকার পর ছেলেকে অক্ষত অবস্থায় ফিরে পাবেন—এ কথা বিশ্বাসই করতে পারছিলেন না কাজী আহসান ফারুক। ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে কাঁদছিলেন তিনি। বললেন, ‘আমার ছেলে সাদিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। ও কথা বলতে পারে। ’
গতকাল রোববার দুপুর ১২টার দিকে একেবারে অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করা হয় কিউ এম এ সাদিককে।

তবে পানিশূন্যতায় প্রচণ্ড রকমের দুর্বল হয়ে পড়েছেন তিনি। তৃতীয় তলার নিউওয়েভ বটমস কারখানার মাননিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপক তিনি।
সাদিককে উদ্ধারের পর রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপে হইচই পড়ে যায়। শোকের মধ্যেও আনন্দে হাততালি দেয় আশপাশে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজন।
ভবনধসের ঘটনার পর থেকেই পরিবার হন্যে হয়ে হাসপাতালে হাসপাতালে খুঁজছিল সাদিককে।

চার দিন ধরে বাবাসহ অন্য স্বজনেরা দিনভর কাটিয়েছেন ধ্বংসস্তূপ আর অধরচন্দ্র স্কুলের মাঠে। ওই মাঠে কোনো লাশ আসার সঙ্গে সঙ্গেই তাঁরা সবাই মিলে খুঁজতে থাকেন সাদিককে। তবে কোথাও কোনো খোঁজ মেলেনি। ভবনধসের তিন দিন পার হওয়ার পর তাঁরা একরকম আশা ছেড়েই দিয়েছিলেন।
গতকাল বিকেলে সাভার সেনানিবাসে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে কথা হয় সাদিকের বাবার সঙ্গে।

বললেন, ‘ছেলের সঙ্গে কথা হয়েছে, ভালো আছে। শরীরের কোথাও আঘাত লাগেনি। শুধু কথা বলার সময় বারবার মাথা ঝাঁকাচ্ছে। চিকিৎসকেরা তাকে নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে রেখেছেন। ’
স্বজনেরা জানান, উদ্ধারের পরপরই তাঁদের জানানো হয়, সাদিক জীবিত আছেন।

তাঁকে সিএমএইচে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ সময় আরেকটি ফোনে বলা হয় অধরচন্দ্র স্কুলে যেতে। তবে সাদিকের বাবা সিএমএইচেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উদ্ধারের পর সাদিক খুবই হাঁপাচ্ছিলেন। দীর্ঘ সময় অন্ধকারে কাটানোর পর আলোতে তাঁর চোখ মেলতেও সমস্যা হচ্ছিল।


সাদিকের মামাতো ভাই উদ্ধারকর্মী মাজেদুল আলম তাঁকে উদ্ধারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। মাজেদুল বলেন, সাদিক তাঁকে জানিয়েছেন, ভবনটি ধসে পড়ার সময় তিনি স্তম্ভের (পিলার) পাশে আশ্রয় নেন। সেখানে তিনটি পানির বোতল রাখা ছিল। অল্প অল্প করে সেই পানি পান করে সাদিক নিজেকে বাঁচিয়ে রেখেছিলেন। সঙ্গে থাকা মুঠোফোনটি বন্ধ করে রেখেছিলেন সাদিক।

কারণ, নেটওয়ার্ক ছিল না। তবে একটু পরপর সময় দেখতেন তিনি। ভেতরে প্রচণ্ড অন্ধকার ছিল। তাঁর সঙ্গে আরও কয়েকজন ছিলেন। সেই লোকগুলো অনেকটা উন্মাদের মতো আচরণ করছিলেন।

সাদিক উদ্ধারকর্মীদের তৎপরতা, হাঁকডাক শুনতে পেয়েও কোনো আওয়াজ করেননি। সাদিক তাঁকে বলেছেন, আতঙ্ক, ক্ষুধা আর অক্সিজেনের অভাব মানুষকে কীভাবে তিলে তিলে মারে, তা তিনি উপলব্ধি করেছেন। ।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com     দেখা হয়েছে ১১ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।