আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বেদ ও বাইবেলে মক্কা বিজয়ের ভবিষ্যদ্বাণী ! -১

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

অথর্ববেদে প্রতিশ্রুত মহাপুরুষ মামহকে দশ সহস্র গাভী অর্থাৎ সাধু অনুচরবর্গ প্রদান হইবে বলিয়া ভবিষ্যদ্বাণী করা হইয়াছে । এষ ঋষয়ে মামহে শতং নিস্কান দশ স্রজঃ । ত্রীনি শতান্যর্বতাং সহস্রা দশ গোনাম । । [অথর্ববেদ ২০ কান্ড ৯ম অনুবাক ৩১শ সুক্ত ৩য় শ্লোক ] অর্থ- ঈশ্বর মামহ ঋষিকে একশত স্বর্ণমুদ্রা, দশটি হার, তিনশত অশ্ব ও দশ সহস্র গাভী দিবেন ।

কোন ঋষি পৃথিবীতে স্বর্ণ মুদ্রা ও হার লাভ করিয়া অশ্ব ও গাভী প্রতিপালন করার জন্য আগমণ করেন না । ঐগুলি দ্বারা বিভিন্ন গুণে গুণান্বিত শিষ্যবর্গকে নির্দেশ করা হইয়াছে । অনস্বন্ত সৎপতি র্মামহে মে গাবা চেতিষ্ঠোঅসুরো মঘোনঃ ত্রৈবৃষ্ঞো অগ্নে দশভিঃ সহস্রৈর্বৈশ্বানর ত্র্যরুণ শিচকেত । । [ঋগ্বেদ ৫ম মন্ডল ২৭ সুক্ত ১ম শ্লোক] অর্থাৎ চক্রবিশিষ্ট যানের অধিকারী (উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন) সত্যবাদী ও সত্যপ্রিয়, চরমজ্ঞানী, শক্তিশালী ও মুক্তহস্ত 'মামহ' আমাকে তাহার বাণী দ্বারা অনুগ্রহ করিয়াছেন ।

সর্বশক্তিমানের পুত্র সকল সর্বগুণের অধিকারী নিখিল বিশ্বের হিতকারী দশ সহস্র অনুচরসহ বিখ্যাত হইবেন । ঋগ্বেদে ১ম মন্ডলে মোট উনিশ স্হানে মামহ ঋষির কথা উল্লেখ আছে । সেগুলো হলঃ ১. ৯৪ সুক্ত ১৬ শ শ্লোকে ; ২. ৯৫ সুক্ত ১১শ শ্লোকে ; ৩. ৯৬ সুক্ত ৯ম শ্লোকে ; ৪. ৯৮ সুক্ত ৩য় শ্লোকে ; ৫. ১০০ সুক্ত ১৯শ শ্লোকে ; ৬. ১০১ সুক্ত ১১শ শ্লোকে ; ৭. ১০২ সুক্ত ১১শ শ্লোকে ; ৮. ১০৩ সুক্ত ৮ম শ্লোকে ; ৯. ১০৫ সুক্ত ১৯শ শ্লোকে ; ১০. ১০৬ সুক্ত ৭ম শ্লোকে ; ১১. ১০৭ সুক্ত ৩য় শ্লোকে ; ১২. ১০৮ সুক্ত ১৩শ শ্লোকে ; ১৩. ১০৯ সুক্ত ৮ম শ্লোকে ; ১৪. ১১০ সুক্ত ৯ম শ্লোকে ; ১৫. ১১১ সুক্ত ৫ম শ্লোকে ; ১৬. ১১২ সুক্ত ৫শ শ্লোকে ; ১৭. ১১৩ সুক্ত ২০শ শ্লোকে ; ১৮. ১১৪ সুক্ত ১১শ শ্লোকে ; ১৯. ১১৫ সুক্ত ৬ষ্ঠ শ্লোকে ; নিম্নে একটি শ্লোক উদ্ধৃত কর হল - তন্নো মিত্র বরুণো মামহন্তমদিতিঃ সিন্ধুঃ পৃথিবী উত দৌঃ । । অর্থাৎ- "মিত্র, বরুণ; মামহ, অদিতি, সিন্ধু পৃথিবী ও দুৎ আমাদের রক্ষা করুন ।

" ইহা শ্লোকের শেষাংশ, উহার প্রথমাংশে বিভিন্নস্হানে বিভিন্ন রূপ আছে । কোথাও আয়ু ধন, সৌভাগ্য বৃদ্ধি করার প্রার্থনা, কোথাও শত্রুদের পরাজিত করার প্রার্থনা আছে । ১-০৯ সুক্ত ২য় শ্লোকে একটি নূতন স্তোত্র রচনা করার উল্লেখ আছে এবং 'জামাত' ও 'সালাত' দু'টি অজ্ঞাত শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে, যাহার অর্থ নির্ণয়ে সায়ণ ও যাস্কের মধ্যে মতভেদ দৃষ্ট হয় । শ্লোকটি হলঃ অশ্রবং হি ডুরিদাসত্তরা বাং বিজামাতুরুত বা ঘা স্যালাত । অথা সোমস্য প্রযতী যুবভ্যামিন্দ্রাগ্নীয় স্তোমং জনয়ামি নব্যং ।

। হে ইন্দ্র ও অগ্নি ! জামাত বা সালাত অপেক্ষাও অধিক বহুবিধ ধন দান কর, এইরূপ শুনছি । অতএব হে ইন্দ্র ও অগ্নি ! আমি তোমাদের সোম প্রদানকালে পঠনীয় একটি নূতন স্তোপ্র রচনা করছি । সায়ণ 'জামাত' এর অর্থ করিয়াছেন গুণবিহীন জামাতা কন্যা লাভের জন্য কন্যাকর্তাকে অনেক ধন দান করা । কিন্তু যাস্ক বলেন, জামাতা = জা অর্থে অপত্য, তার নির্মাতা ।

অনুরূপভাবে সায়ণ সালাত অর্থ শ্যালক করিয়াছেন । কিন্তু যাস্কের মতে সালাত অর্থ কুলের খৈ । এর দ্বারা প্রমাণিত হয় যে, শব্দ দুটিকে সংস্কৃত শব্দ হিসাবে বিবেচনা করলে সঠিক অর্থ নির্ণয় করা সম্ভব হয় না, ফলতঃ উহারা বিদেশী শব্দ । আমরা দেখিতে পাই যে, আরবী ভাষায় সালাত অর্থ নামায এবং জামাত অর্থ সমবেতভাবে নামায আদায় করা । আরও প্রণিধানযোগ্য যে, এখানে যজ্ঞে নুতন স্তোত্র পাঠ করার উল্লেখ আছে ।

অথচ যে কেহ ইচ্ছামত যজ্ঞের মন্ত্র রচনা করিয়া পড়িতে পারেনা । শাস্ত্রই মন্ত্র রচনা করিয়া নির্দিষ্ট করিয়া দেয় কোথায় কোন মন্ত্র পাঠ করিতে হইবে । শ্লোকে উল্লেখিত ঋষিগণের মধ্যে একমাত্র 'মামহ' নূতন ঋষি অন্যরা প্রাচীন । অতএব সুষ্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, নূতন ঋষি , মামহ আর্বিভূত হইয়া নূতন স্তোত্র রচনা করিবেন । 'মামহ' শব্দটিও অসংস্কৃত ।

এখন বেদের বিভিন্ন স্হানে 'মামহ' ঋষির যে সকল লক্ষণ প্রদান করা হইয়াছে তাহা একত্র করিলে দেখা যায় যে- (ক) মামহ মরুস্হলবাসী উষ্ট্রারোহী হইবেন । [অথর্ববেদ ২০ম মন্ডল ৯ম অনুবাক ৩১ সুক্ত] (খ) মামহ দশ সহস্র অনুচরসহ বিখ্যাত হইবেন । [ঋগ্বেদ ৫ম মন্ডল ২৭ সুক্ত] (গ) মামহের যুগে বেদ ছাড়া অন্য স্তোত্র রচিত হইবে ও যজ্ঞে পঠিত হইবে । [ঋগ্বেদ ১ম মন্ডল ১০৯ সুক্ত ২য় শ্লোক] --চলবে সূত্রঃ বেদ ও পুরাণে আল্লাহ ও হযরত মোহাম্মদ , ধর্মাচার্য অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায় ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।