আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীলাকাশের শূণ্যতা (৩)



সকালে ঘুম থেকে উঠতে একদম ইচ্ছে করে না মোহনার। কিন্তু উঠতেতো হবেই। অনেক সকালে স্কুলে যেতে হয়। শুধু তাই নয়, প্রতিদিন ভোর বেলা তাকে গানের রেওয়াজ করতে হয়। না হলে আম্মুর বকুনি খেতে হয়।

সকাল বেলা রেওয়াজ করতে একদম ভাল লাগেনা মোহনার, মাঝে মাঝে হারমনিয়ামের উপরেই ঘুমিয়ে যায় সে। গানের জন্য আম্মু তাকে আইস ক্রিম খাওয়া থেকেও বঞ্চিত করে। বৃষ্টিতে ভেজাও মোহনার মানা। কিন্তু বৃষ্টি নামলেই মোহনার মন টা আনচান করে উঠে। বৃষ্টির সাথে তার যেন অন্তরের সম্পর্ক।

মোহনার জন্ম শ্রাবন মাসে। আম্মু বলেছে যখন মোহনা জন্ম গ্রহন করে তখন খুব বৃষ্টি হচ্ছিল, একদম ঝুম বৃষ্টি। মোহনার আব্বুর অফিসে কাজ করে খলিল চাচা। উনি মোহনাকে খুব আদর করেন। একদিন মোহনার জন্য ২ টা টিয়া পাখির বাচ্ছা নিয়ে আসলেন।

পাখিগুলো দেখে মোহনার আনন্দ যেন আর ধরেনা। কিন্তু আম্মু চোখ কপালে তুলে বললেন, " কি সর্বনাশ, এত ছোট বাচ্ছা কোথা থেকে নিয়ে আসলেন? এগুলো কি মা ছাড়া থাকতে পারবে? আপনি ওদের কে আবার গাছে রেখে আসেন"। মোহনার মন খুব খারাপ হয়ে গেল। সে কান্না জুড়ে দিল। আর ছোট চাচ্চুরো খুব ইচ্ছা পাখি গুলো রাখার।

মোহনা আর ছোট চাচ্চু মিলে আম্মুকে রাজি করালো। কিন্তু ২ টা নয়, একটা পাখি রাখলেন সায়লা। পাখিটি কে নিয়েই মোহনার সব ব্যাস্ততা। ওর নাম রাখলো মিঠু। মিঠু খুবই ছোট, তার শরীরে কোন লোম নাই, ঠোটটাও সাদা।

কিছু খেতেও শিখেনি মিঠু। ছোট চাচ্চু আর মোহনা ওকে খাবার গুড়া করে খাওয়ায়। দুধের সর, ছানা খাওয়ায়। মোহনা ওর জন্য নরম তুলা আর কাপড় দিয়ে বাসা বানালো। ধিরে ধিরে মিঠু বড় হতে থাকে।

ওর গায়ে সবুজ লোম উঠে, ঠোট টা লাল হয়ে যায়। একটু একটু উড়তে পারে। কিন্তু মিঠু উড়ে কোথাও যায় না। মোহনার কোলে বসে থাকতে সে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। মোহনার বাবা মিঠুর জন্য তার দিয়ে অনেক বড় একটা খাঁচা বানিয়ে দেন।

সেই খাঁচা পেয়ে মোহনার আনন্দ যেন আর ধরেনা। মিঠু খাঁচায় থাকে, মাঝে মাঝে মোহনার সাথে বাইরে ঘুরে বেড়ায়। একদিন হঠাৎ মিঠু মোহনার নাম ধরে ডেকে উঠল। মোহনা যেন নিজের কান কে বিশ্বাস করতে পারছেনা। বাসার সবাই কে ডেকে শুনাল।

সত্যিই তার প্রিয় মিঠু কথা বলছে, সবাই শুনল।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।