আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুগল্প-০২: বিষন্ন প্রহরে যুবক ও একজন পাগলী

ভালো কিছুর অপেক্ষায়......

বিষন্ন প্রহরে যুবক ও একজন পাগলী সারাদিন আকুলি-পাকুলি ঘুরে সন্ধ্যায় এই অন্ধকার করিডোরে বসে চৈতন্যলুপ্ত নয় বাধ্যগতভাবে ক্রমাগত স্মৃতির পাতায় আঁকশী টানে পাগলী। আগের সবকিছু কেমনজানি পুরনো স্বরে বাজে মনের মধ্যে। দুঃখের বিস্তৃত প্রান্তর প্রতিফলিত হয় ঝকঝকে আয়নার মাঝে। বর্তমান বস্তুগত অবস্থানটার সাথে অতীতের ছবিগুলো একদম মেলানো যায়না। হঠাৎ পেটের মধ্যে মোচড় দিয়ে ওঠে, পাগলীর নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, বাতাস পুরনো হয়ে উঠে।

সারাদিন অনাহারে কেটেছে আজ পাগলীর। তবুও দুপা মেলে দিয়ে দুহাতে মাথার চুল টানতে টানতে পাগলী গান গায়। বিষন্ন কিন্নরে বাজে তার কন্ঠস্বর; বিষন্ন সন্ধ্যায় ত্রিশোর্ধ দুখীতম পাগলীর চোখের রং আর আগুনের রং এক দেখায়। এখন বর্ষাকাল সারাদিন আকাশ মেঘে ঢেকে ছিলো। এমন সময় তীরের মত বৃষ্টি ঝরতে থাকে।

ব্যস্ত পথচারী আচ্ছাদন খুঁজে দৌড়ে যায়। এক উদভ্রান্ত যুবক এসে দাঁড়ায় অন্ধকার কড়িডোরে। হাতে তার ছোট পলিথিনের ব্যাগ। পাগলীর বিষন্ন কন্ঠস্বরকি তাকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছে! গুটি গুটি ত্রস্ত পায়ে যুবকটি এগিয়ে যায় পাগলীর কাছে। মন্ত্রমুগ্ধের মতো বসে পড়ে পাশে।

পলিথিনের খাবার খেতে দেয় পাগলীকে। লোভীর মতন খেতে শুরু করে সস্তা রুটি আর চোখে হুঁশিয়ার উচ্চারণ করে সাবধান করে দেয় শহরবাসীকে কারণ সে এখন খাচ্ছে। কিছুক্ষণ পর যুবকের শরীরে বিদ্যুতের স্পৃহা খেলে যায়। কাছে টেনে নেয় পাগলীকে, পাগলী বাধা দেয়না। এই অন্ধকারে পাগলীকে যুবকের মনে হয় সৌন্দর্যের অক্লান্তিকর আশ্চর্য্য এক নারী।

জাপটিয়ে ধরে পাগলীকে, দুটো শরীর এক হতে থাকে। আকাশের বিদ্যুত এখন আর চোখে পড়েনা যুবকের। অনির্দিষ্ট সময়ের গাত্রে বিচরণ করতে থাকে। যুবক ভুলে যায় আজ তার তাড়াতাড়ি বাড়ি ফেরা দরকার। ধাবমান হরিণীর মতো নিঃশ্বাস নেয় পাগলী, যুবকের চমৎকারিত্বে পাগলী শীৎকার করে ওঠে।

অদূরে ঝিমুনো চৌকিদার ভাবে পাগলীর আজ হলো কি?

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।