আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অবিশ্বাসের আগুন একসময় মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে।

চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা

একজন খুব ভাল মানুষ ছিলেন। অন্যান্য মানুষের প্রতি তার ছিল অগাধ বিশ্বাস। মানুষকে কোনভাবেই অবিশ্বাস করতে পারতেন না তিনি। কিন্তু একসময় তিনি জীবনে কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হলেন তিনি। মানুষজনের কথা বিশ্বাস করতে গিয়ে অনবরত ঠকতে লাগলেন তিনি।

কেউ বলল খাটি মধু কিনে নেন সস্তায়। কেনার পর দেখলেন চিনি মেশানো নকল মধু। আরেকজন বলল, বিপদে পড়েছি কিছু টাকা ধার দেন পরে শোধ করে দেব। ধার দিলেন কিন্তু ফেরত পেলেন না আর কখনোই। এভাবে সবাই তার বিশ্বাসে চিড় ধরাতে শুরু করল।

সরকারকে বিশ্বাস করে ঠকলেন। নিজের অফিসের বড় কর্মকর্তা তাকে ঠকাল। ঠকাল মসজিদের ইমাম সাহেব পর্যন্ত। আত্মীয়স্বজনেরা পর্যন্ত তাকে ঠকাল তার পাওনা সবকিছু থেকে তাকে বন্চিত করে। অবিস্বাসের বীজ বপিত হল তার মনে।

পরিনত হল চারায় তারপর বটগাছে। এখন তিনি কাউকেই বিশ্বাস করেন না। মাছ কেনার পর তার মনে হয় মাছে ফরমালিন দেয়া। দোকানদার টাকা ফেরত দিলে গুনতে গুনতে পাচ দশবার গুনে ফেলেন। বিশ্বাস করেন না অধীনস্ত উপরস্ত কাউকেই।

এমনকি বৌয়ের সবকিছুতেই তার সন্দেহ। তার এই সন্দেহ মানুষের সাথে তার দূরত্বের সৃষ্টি করল। শত্রুতার জন্ম নিলেও অনেকের সাথে। প্রতিদিন কাজ শেষ করে সন্ধার আগেই ঘরে ফেরেন তিনি কিছুটা নির্জন ঘুরপথের একটি রাস্তা পাড়ি দিয়ে। একদিন এক দূর্ঘটনায় আটকে পড়লেন অফিসে।

ছাড়া পেলেন সেই রাত একটারও পরে। তার এক সহকর্মী তার পাড়াতেই থাকেন। অফিস যাতায়তে নিজের গাড়ী ব্যবহার করেন। কিন্তু এই সহকর্মীকে এড়িয়ে চলেন ভদ্রলোক, দেখেন সন্দেহের চোখে। তাই সহকর্মী যখন গাড়ীতে করে বাড়িতক পৌছে দেয়ার প্রস্তাব দিলেন তখন তা ফিরিয়ে দেলেন তিনি।

সহকর্মী শংকিত হলেন। কেননা এতরাতে ঐ ঘুরপথে ত নয়ই সোজা পথে ফেরাটা মোটেও নিরাপদ ছিল না। কিন্তু সিদ্ধান্তে অটল রইলেন তিনি। একলাই রওয়ানা দিলেন বাড়ির উদ্দ্যেশে এবং সেই ঘুরপথেই। পরদিন রাস্তার ধারে তার লাশ পাওয়া গেল।

অবিশ্বাসের আগুন একসময় মানুষকে পুড়িয়ে ফেলে। বিশ্বাস করে ঠকাতে কোন বড় ক্ষতি নেই। কিন্তু অবিশ্বাসের আগুন এখন সব জায়গাতেই। রাজনীতিতে, শিক্ষানীতিতে, অফিস আদালতে এমনকি পারিবারিক জীবনেও। তাই আমাদেরকে আবার অবিশ্বাস করতে হবে, অন্যকিছু নয় সেই মানুষকেই।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।