আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পিলখানায় বিডিআর বিদ্রোহ নাকি গণহত্যা? গণমাধ্যমের বহুরূপী মতামত...........???

একাকী নিরালায় কত কথা

গত বুধবার যখন ঘুম ভাঙলো শুনলাম দেশে নাকি যুদ্ধ লেগে গেছে। বিডিআর আর সেনাবাহিনীর যুদ্ধ। বিষয়টা ঠিক মাথায় আসলো না। একটু পরেই শুনি গুলির আওয়াজ। কোনমতে নিচে নেমে হলের টিভি রুমে প্রবেশ করলাম।

তারপর দেখি ব্যাপক কাণ্ডকারখানা। বিডিআর জওয়ানরা হাতে অস্ত্র শত্র নিয়ে বেশ যুদ্ধংদেহী মনোভবে ঘোষণা করেছে তাদের যুদ্ধের কথা। এসময় টিভিতে বিডিআর সদস্যদের মুখে শুনলাম আর্মিরা নাকি তাদের অপারেশন ডালভাতের টাকা মেরে নিয়েছে। তারা এও জানালো যে নির্বাচনের টাকাটাও তারা আজো পায়নি। শুধু তাই নয় ৪০ টাকার তেল বকভেবে খোলা বাজারে ১২০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।

তাদের দীর্ঘদিনের পুজ্ঞিভূত ক্ষোভ থেকে এটি হয়েছে তাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। শুধু তাই নয় আর্মিরা যে বিডিআরের টাকা মেরে এত ধনী হয় বা হচ্ছে জেনে বিডিআরদের প্রতি একধরণের সহমর্মিতাও জেগেছিল। কিন্তু মাত্র একদিনের মাথায় জানতে পারলাম বিডিআর সদস্যরা নৃশংসভাবে খুন করেছে আর্মি অফিসারদের । তখন বিডিআরদের উপর সহমর্মিতার বদলে ঘৃণার জন্ম হল। আমি মানছি যে আর্মি অফিসাররা আনেক খারাপ।

তারা অনেক লুটপাট করেছে । তারপরও তাদেরকে এভাবে হত্যা করে ড্রেনে ফেলে দেয়া বিষয়টি একজন সচেতন মানুষ জহসাবে মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। আমি বিডিআর বা আর্মি কোন পক্ষের লোক নয়। আমার চৗদ্দ পুরুষে বিডিআর বা আর্মিতে কোন আত্মীয় স্বজন নেই। তবে এধরণের জেনোসাইড নিশ্চয় আমাদেরকে ভাবায়।

ভাবতে বাধ্য করে। বিডিআরের কোন স্ট্রাটেজি ছিল না। তারা বিদ্রোহ করেছে না গণহত্যা করেছে এটাতে আমি কনফিউজড। আমার কাছে যেটি মনে হয়েছে যদি মেজর শাকিল তাদের উপর এত অত্যাচার করে তবে তারা সেটা বাইরে কি কোনভাবেই জানাতে পারকতা না? শুধু তাই নয় যেদিন তারা প্রধানমন্ত্রীর সামনে কুচকাওয়াজ করলো সেদিনও কেন কোন আলামত পায়নি আর্মি অফিসারার। বর্তমানে বাংলাদেশের গণমাধ্যম আনেক বেশি শক্তিশালী ।

এই ঘটনার প্রথম থেকে এখন পর্যন্ত মিডিয়া সমানে কাভারেজ দিয়ে যাচ্ছে। গণমাধ্যমগুলো প্রথমদিন বলর বিডিআর সদর দপ্তরে বিদ্রোহ। আর আজ তারা বলছে বিডিআরের গণহত্যা। বাংলাদেশের গণমাধ্যম কি এতটাই সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগে। তারা প্রথম দিন যদি এটাকে বিদ্রোহ বলে ঘোষণা করল।

তবে সেটার নিশ্চয় কোন কারণ ছিণ। যেই আরটিভি সিনেমার মত একশনে তাদের ক্যামেরা দিয়ে ফুটেজ সংগ্রহ করেছিল। আজ তাদের সুরও অন্য খাতে। শুধু তাই নয় ড্রইংরুমের প্রথম পছন্দ প্রথম আলোও শেষ পর্যন্ত এটাকে গণহত্যা বলে আখ্যায়িত করলো। তাহলে আমরা কি ধরে নেব।

আসলেই প্রথম কথাটাই ঠিক ছিল। নাকি সরকার রাতের আধারে তাদেরকে ডেকে বলেছে এধরণের প্রচারণা বন্ধ কর। আমি যতটুকু জানি গতকাল সন্ধ্যায় প্রত্যেকটা মিডিয়া হাউসে প্রেসনোটস পাঠানো হয়েছে। এবং সেখানে বলা হয়েছে ইতিবাচত সংবাদ পরিবেশনের জন্য। আমরা যতটুকু জানি সংবাত শুধুমাত্র সংবাদই।

পরিণতি জেনে কোনদিনই নিরপেক্ষ মিডিয়া সংবাদ পরিবেশন করে না। তাহলে কি এটাই দাড়াচ্ছে আর্মিকে সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে আমাদের নবনির্বাচিত সরকার। তাই মিডিয়ার উপর এত কড়াকড়ি। নাকি আমরা যে তথ্যের অবাধ পরিবেশনার কথা বলি। আমাদের শিক্ষকেরা পত্রিকায় বড় বড় আর্টিকেল লেখেন.......তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত কর বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতা চাই এর পুরোটাই কি লেখাসর্বস্ব??? সরকারের বোঝা উচিত ছিল আজ যদি মিডিয়াগুলো প্রথম থেকেই কাভারেজ না করতো তাহলে ঘটনা আরো অনেক দূর গড়াতো।

দেশবাসী জানতেই পারতো না আসলেই বিডিআর সদর দপ্তরে কি হয়েছে বা কি হচ্ছিল? জওয়ানদের দাবী দাওয়ার কথা দেশবাসী জানতে পারতো না। জানতে পারতো না তকন আজ রাজধানীর বুকে এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞ ঘটেছে? তারপরও আমি সম্ভাবনার পথে চেয়ে থাকবো। সব সম্ভবের এই দেশে হয়তো আসল সত্য একদিন বের হয়ে আসবে.........!!!!?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.