আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হায় রাইফেল স্কয়ার, দরবার হল, ধানমন্ডি লেক! সব এখন রণক্ষেত্র!

যখন বিকাল হতে থাকে, হতে হতে সূর্যটা ঢলে পড়ে, পড়তে থাকে

প‌্যালেস্টাইন, ইরাকে যেমন ঘটনা দেখতাম এতদিন টিভিতে এখন সেই ঘটনা দেখতে হইতেছে একদম নিজেদের ঘরের মধ্যে। রাইফেল স্কয়ারের ধাবা আমার অন্যতম প্রিয় একটা রেস্টুরেন্ট। ডার্লিং রে লইয়া খাইতে ভাল লাগে। তার আবার ইন্ডিয়ান ডিস প্রচন্ড প্রিয়। চটপটিটা তো হেভভী! তারপরে ধরেন হ্যালভেসিয়া - পিলখানার ভেতরের দৃশ্য দেখতে দেখতে মুরগীর ঠ্যাং এর কামড় দেয়া যায়।

ওইখানের ট্রাস্ট ব্যাংকের কর্মকর্তাদের ছুটে পালানো দেখলাম টিভিতে। টিভি সাংবাদিকরা এক মহিলা কর্মকর্তাকে জিজ্ঞেস করলে সে এমন ঝাড়ি দিল যে বুঝতে অসুবিধা হয় না কেমন আতংকে রয়েছিল। একজন কইলো ব্যাংকের মধ্যেও গুলি হইছে। ধানমন্ডি লেকে এক বাবাকে দেখলাম তার মেয়েকে কোলে করে লেকের পাড়ে গাছের আড়ালে লুকানোর চেষ্টা করছে। ভীতি তার চোখেমুখে।

লোকজন পালাচ্ছে দিকবিদিক। স্কুলে বন্দী হাজারো পোলাপাইন। আমার এক বন্ধু টিচার ধানমন্ডির স্কুলে। তারে ফোন করলে জানাইছিলো দুপুরে, বাচ্চাকাচ্চাদের নিতে বাবামা আসতেছে না দেখে বের হতে পারছে না। আমার বন্ধু শরৎ একটা পোস্ট লিখেছে মুন্নীসাহার ইন্টারভিউ নেয়া ঠিক হইলো কিনা জানতে চাইয়া।

তার সন্দেহ বিডিআর এর জোয়ানরা যে তাদের চেহারা দেখাইলো টিভিতে এতে ওদের ক্ষতিই হবে। ধরে ধরে মারবে আর্মীরা। এজন্য বন্ধু শিমুল ও আরো কয়েকজন নিন্দাও জানাইছে। আমি তাদের এই নিন্দা জানানোর সাথে একমত না। আমার মনে হয় আপুমনি ভালো কাম করেছে।

সাহসের পরিচয় দিয়েছে। কারণ তাদের চেহারা দেখানো না দেখানো কোন ব্যাপার না আসলে। সরকার যদি তাদের রক্ষা না করে আল্লাহও তাদের রক্ষা করতে পারবে না আর্মীর হাত থেকে। কয়েক বৎসর আগে আনসার বিদ্রোহের কথা আপনাদের মনে আছে কিনা জানি না, তবে সেখানে গণহত্যা হইছিলো, বিদ্রোহীদের সমূলে উৎপাটন করা হইছে। আর্মীর নিয়মই হয়তো এই।

এজন্য তারা চেহারা দেখাইলো বা না দেখাইলো সেটা আসলে কোন ব্যাপারই না। লাভ হইলো তাদের বক্তব্য আমরা শুনতে পাইছি। সম্ভবত মুন্নী সাহাই প্রথম তাদের সচিত্র বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারছে। সেজন্য তারে ধন্যবাদ। শত হইলেও আমার আপুনি।

কিন্তু পরিচিত জায়গাগুলোর এই রণাঙ্গণ চেহারা দেখে আমি আতংকিত। ধাবাতে ফের খাইতে গেলে আমি কি এই আতংক থেকে মুক্ত থাকতে পারবো? ঐ শিশুটি কি পিলখানার সামনে দিয়ে যাবার সময় আর কখনও কি স্বাভাবিক থাকতে পারবে? অথবা ট্রাস্ট ব্যাংকের স্টাফরা। বাংলাদেশের মধ্যেই মনে হচ্ছে স্বাধীন হয়ে গেলো আরেকটা বাংলাদেশ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।