আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্প : ধর্ষক

রিজওয়ানুল ইসলাম রুদ্র

শহরে নতুন ধরণের এক নেশা আবিষ্কৃত হয়েছে। অন্য গ্রুপের রক্ত নিজের শরীরে নিয়ে ঝিম মেরে বসে থাকা। শুধু প্রয়োজন এক ব্যাগ রক্ত, হোক সেটা পজেটিভ আর নেগেটিভ, নিজের গ্রুপের রক্ত না হলেই তো হলো! স্থানীয় কিছু হাসপাতালে গেলেই ডাক্তার কিংবা কর্মচারীরা (যারা রক্ত ট্রান্সফারে পারদর্শী) কোন একটা ব্যবস্থা করে দেবে। মারুফ এই মুহূর্তে দাঁড়িয়ে আছে লিজা ফার্মেসির সামনে। তার রক্তের গ্রুপ এবি+।

বিপরীত গ্রুপের রক্ত কেনার উত্তেজনায় তার সারা গা ভিজে জবজবে। এমন উত্তেজনা এর আগেও একবার হয়েছিলো। যখন লাবু ভাই তার হাতে হেরোইনের পুরিয়া ধরিয়ে দিয়েছিলো। মাদকতাময় কণ্ঠে লাবু ভাই বলেছিলেন, এইডা খাওয়ার ম্যালা সিস্টেম আছে...পাউডার নাক দিয়া টানবার পারবি আবার চামচে গলায়া হাতের রগে ঢুকাইবার পারবি..বুঝলি বাইনচোত? মারুফ সেদিন দ্বিতীয় পদ্ধতিতে হেরোইন নিয়েছিলো। সে কী উত্তেজনার ঢেউ তার সারা শরীরে! যেন কালবৈশাখী ঝড় উঠেছে! চোখ ঝাপসা হয়ে আসছে, তার ভেতরের আত্মা-কলিজা সব শুকিয়ে যাচ্ছে... পরেরদিন সকালে যখন ঘুম ভাঙলো তখন সে একটা ড্রেনের পাশে উবু হয়ে শুয়ে আছে।

গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। জীবনে প্রথম হেরোইন সেবনের অভিজ্ঞতা মনে করে মারুফের ভ্রুঁ কিছু সময়ের জন্যে কুঁচকে গেলো। পরমুহূর্তেই ভ্রুঁ জোড়া হিংস্র বন্য পশুর মতো যেন গর্জে উঠলো। মারুফ গা ঝাড়া দিয়ে উঠলো। লিজা ফার্মেসিতে এত ভীড় কেন কে জানে! কাস্টমাররা লাইন বেঁধে যে জিনিস কিনছে সেটা হলো ‌'কনডম'।

তারও আবার কত বাহার! শহরের এই ফার্মেসিতেই কী কনডম পাওয়া যায়? আর কোথাও নাই? মারুফ এক উঠতি বয়সী কিশোরের দিকে তাকালো। সে কনডম কিনছে ভীত চোখে। তার বুক যে লজ্জায় ওঠা-নামা করছে সেটা মারুফ বুঝতে পারছে। মেয়েছেলের বুকে ছুরি বসানোর সময়ও তাদের বুক ঢেউয়ের মতো উঠানামা করে। সেটা দেখতে মারুফের খুব ভালো লাগে।

---ঐ পোলা ! দেখি কী কিনছো ? কিশোর ভীতমুখে তাকিয়ে আছে মারুফের দিকে। ---শালা, মায়ের দুধ খাওয়া ছাড়ো নাই আবার হাতে কনডম নিয়া ঘুরতাছো? কারে দিবা? বান্ধবীরে? কিশোরটার চোখ-মুখ শুকিয়ে কাষ্ঠখন্ডের মতো হয়ে গেল। সে ঝেড়ে দৌড় দিল। এবং একটা চলন্ত মোটরসাইকেলের সাথে অ্যাকসিডেন্ট করলো। যন্ত্র আর মানবশরীরের সংঘর্ষে গর্জে উঠলো পৃথিবী।

পিচের রাস্তায় কালো কালো তরল পদার্থ ছিটকে পড়লো। সন্ধ্যাকাল, তাই দূর থেকে বোঝার উপায় নেই, সেগুলোর রং লাল। মারুফ ধীরে ধীরে সেদিকে এগোল। লাবু ভাই একবার তাকে বলেছিলো, মারুফ, তুই হালা একডা পিচাশ! তখন মারুফ পুরোদস্তুর নেশাখোর। হেরোইনের চার পুরিয়া মুহূর্তেই শেষ করে দিতে পারে।

পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে জঙ্গলের ভেতরে পোড়াবাড়ীর মাটিতে ফেনসিডিলের বোতল লুকিয়ে রাখাতেও তার দুর্দান্ত দক্ষতা। আশ্চর্য হয়ে মারুফ বললো, এইডা কী কইলেন লাবু ভাই? লাবু ভাই হতাশ ভঙ্গিতে বললেন, তুই গ্রুপে আসার পর থেইকাই পা হারাইলাম, পুলিশের হাতে মাইর খাইলাম, সে কী মাইর রে মারুফ! তুই হালা কুত্তার বাচ্চা! তুই পিচাশ... লাবু ভাইয়ের পা ট্রেনে কাটা পড়েছিলো। মারুফ, লাবু ভাই আর ভাদাইম্যা করিম ক্যান্টনমেন্ট রেল স্টেশনে ট্রেন ছিনতাই করতে উঠেছে। খুব রিস্কি একটা অপারেশন। চলন্ত ট্রেনে উঠে এক মহিলার গলা থেকে স্বর্ণের চেইন টান দিয়ে ছিঁড়ে নিয়ে ট্রেন থেকে লাফাতে হবে।

মারুফের বুক শুরুতে দুরুদুর করলেও শেষমেষ লাবু ভাইয়ের বিশাল এক থাবড়া বুকে পড়ার পর সম্বিৎ ফিরে পেল। স্টেশনে পৌঁছে ওরা তিনজন তিনদিকে ছড়িয়ে পড়লো। প্রত্যেকের হাতে মোবাইল ফোনসেট। সবই ছিনতাইয়ের মাল। লাবু ভাই একবার বাঁ হাতের মধ্য আঙুলির ইশারা করলো চল্লিশোর্ধ মহিলাটার দিকে।

লাবু ভাইয়ের ইশারা মানেই 'ফাকিং সাইন'। কোন একটা টু এক্স ছবিতে লাবু ভাই এই রকম দৃশ্য দেখেছে। তারপর থেকে ব্যাপারটা তার মাথায় ঢুকে গেছে। চল্লিশোর্ধ মহিলার সাথে অল্পবয়স্ক এক কিশোর। সম্ভবত ছেলে।

মহিলার গলায় সোনালি রঙের চেইন ঝলমল করছে রোদে। কিছুক্ষণ পর সেই চেইন মারুফের হাতে শোভা পাবে। ট্রেন কিছুক্ষণের মধ্যেই ছাড়বে। বেকুবগুলো সম্ভবত হাঁটা-হাঁটি করছে। কর, যত সুখ সব কইরা নাও ভোদাইরা! একটু পর মজা টের পাইবা...মারুফ মনে মনে ভাবে আর হাসে।

মারুফ ট্রেনের ঞ বগিতে চড়লো। মোবাইলে লাবু ভাই অনবরত ফোন করেই যাচ্ছেন। মারুফ বিরক্তমুখে ফোন ধরলো। কারণ সামনেই একজন সুন্দরী তরুণী সুদর্শন তরুণের হাত ধরে বগি পার হচ্ছে। মারুফ মেয়েটার বুকের দিকে তাকিয়ে ছিলো ফ্যালফ্যাল করে।

তার পায়ের মোজায় তিন ইঞ্চি লম্বা ধারালো একটা অপারেশন ব্লেড আছে। ইচ্ছা করছিলো সেই ব্লেড দিয়ে ভাতারটার চোখ তুলে নিতে। মারুফ বিরক্তমুখে বললো---লাবু বস! কন কী অবস্থা ? লাবু ভাই বললো---চুদির পোলা ! এতক্ষণ ধইরা খাড়ায় কী দেহস? ফোন ধরোছ না ক্যা? ট্রেন আর দেড় মিনিটের মইধ্যা ছাড়বো...হুঁইসেল হুনোশ নাই? ক্যান্টনমেন্ট থেইক্যা একটু আগাইলেই তুই অ্যাকশনে যাবি। যখন দেখবি ঐ মহিলার পাশের প্যাসেঞ্জার সবটি ঝিমাইতেছে, তখন টার্ন নিবি, হালার পুত! পারলে ছুরি বের কইরা গলায় এক পোঁচ মারবি। কানা হাবিস সামনে খাড়ায়া আছে।

সামনে যে রাস্তা পড়বো সেইখানে কাঁটা তারের বেড়া দেয়া। রাস্তা ক্রস করতে গেলে মরবি হালার পুত। গত রাইতে কাঁটা তারের বেড়ার ফাঁকে ফাঁকে কাইটা রাখছে চুদমারানি কুদ্দুসের দল। মালের অর্ধেক ঐ হালা পাবো। বুঝছোস? জানে ফুঁক দিয়া অপারেশনে নাইমা পড়...ভয় নাই, টের পাইলে মুঞ্জার ভিতরের জিনিসটা হান্দায়া দিবি! ট্রেন থেইকা বিসমিল্লা কইয়া লাফ দিবি... তোর পাশের বগিতে ভাদাইম্যা করিম খাড়ায়া আছে।

তুই যখন স্টেপ নিবি খালি একডা মিসকল দিবি ওরে, তোরে জায়গামতো পার কইরা দিবো... মারুফ অধৈর্য হয়ে বললো, ঠিক আছে লাবু বস। রাখি এহন। বলেই ফোন কেটে দিলো। ট্রেন চলতে শুরু করেছে। মারুফ সেই মহিলার পাশের খালি সিটে বসলো।

খুব সতর্কভাবে চারিদিকে দৃষ্টি বোলাতে লাগলো। মহিলা সিটের মাঝখানে বসে পান খাচ্ছে, তার ডানপাশে অল্পবয়স্ক ছেলে, বামপাশে কাজের মেয়ে। পেছনের সিটে দুইজন লোক বসা। একটা সিট খালি। মারুফের পাশের সিটটাও খালি।

একজন প্যাসেঞ্জার এসে তাকে উঠিয়ে দিলো। মারুফ অস্পষ্টস্বরে একটা ভদ্র গালি দিয়ে মহিলার সিটের থেকে নিরাপদ দূরত্বে এসে দাঁড়ালো। কাজের মেয়েটার চেহারা সুন্দর। ইশ্ যদি পাইতাম রে---একটা অস্ফূট দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে আসলো মারুফের মুখ থেকে। পরক্ষণেই সে নিজেকে সতর্ক করলো।

সময় হয়ে গেছে। মারুফ ধীরে ধীরে মহিলার সিটের দিকে এগোল। মহিলা ঠোঁটে লেগে থাকা পানের রস মোছার জন্য সামনে ঝুঁকলেন। তার শরীরে চাদর। তার ছেলে যেভাবে বসে আছে।

তাকালে প্রথমে মারুফকে দেখতে পাবে, তবে কিছুই করতে পারবে না। কারণ মারুফ মাঝখান দিয়ে এটেম্প নেবে। ছেলেটা হাত বাড়ালেও তাকে ধরতে পারবে না। এইসব বিদ্যা সে বছরের পর বছর শিখেছে লাবু ভাইয়ের কাছে, কুদ্দুস ভাইয়ের কাছে। পেছনের সিটে বসা লোক দুইজন শক্ত-সমর্থ হলেও এখন আইপডে গান শুনছে।

মারুফ আস্তে করে হাত বাড়িয়ে দিলো মহিলার গলার দিকে। একমুহূর্ত চিন্তা না করে দুই সেকেন্ডের মধ্যে জোরে টান দিয়ে ছিঁড়ে আনলো লকেটসহ তিন-তিনটি সোনার চেইন। সাথে সাথে ডানদিকে ঘুরে পড়িমরি করে ঝেড়ে দৌড়। মহিলার ছেলেও দৌড়াতে শুরু করলো মারুফকে ধরতে। পেছনের সিটে বসা লোক দুটোও এগিয়ে আসছে।

মারুফ দেখলো ভাদাইম্যা সামনে দাঁড়িয়ে। মারুফকে এক ধাক্কা দিলো। মারুফ এক লাফ দিয়ে নিচে পড়তে যাবে, তখনই দুইজন লোক তাকে জাপটে ধরলো। মারুফ নাছোড়বান্দা। কোনরকম নিজেকে সামলে 'জান যাবে তবু সোনা ছাড়বে না' প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে সফলভাবে চলন্ত ট্রেইন থেকে নামলো।

হামাগুড়ি দিতে দিতে লক্ষ করলো কাঁটাতারের বেড়ার মাঝে মাঝে কিছু অংশ কাটা। সেটার মাঝ দিয়ে আস্তে করে এগোতে লাগলো। না, দৌড়ানো যাবে না। দৌড়ালেই পাবলিক বুঝে ফেলবে। এমন মার দিবে যে...এর চেয়ে ভদ্রলোকের মতো হাঁটা ভালো।

মারুফ পেছনে চেয়ে দেখলো---লাবু ভাই দৌড়াতে গিয়ে ট্রেনের নিচে পড়ে গেছে। তখনই কেউ একজন সম্ভবত ট্রেনের শিকল ধরে টান দিয়েছিলো। লাবু ভাই ছিটকে পড়ে গিয়েছে এক্কেবারে ট্রেনের তলে। ভাগ্যিস মাথা ভিতরে যায়নি, পা গিয়েছে---এটা ভেবে মারুফ স্বস্তি পেলো। সে দেরী না করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করলো।

পঞ্চাশ হাজার টাকার মাল ছিনতাই করেছিলো সেদিন। তিন ভরি সোনা। তিন সেকেন্ডে পঞ্চাশ! তার নাম হয়ে গিয়েছিলো---সেকেন্ডবাজ। এখনও সেটা বহাল আছে। লাবু ভাই সেদিন ধরা খেয়েছিলেন ভালোমতো।

আর্মি এরিয়ার ছিনতাই করাটা যতটা কঠিন ভেবেছিল ওরা, ততটাই সহজ ছিলো। এরপরও বেশ কয়েকবার ছিনতাই করেছে। তবে লাবু ভাইকে জেলে যেতে হয়েছিলো। শেষে এক মন্ত্রীর ছেলের হস্তক্ষেপে লাবু ভাই ছাড়া পান। মারের চোটে অবস্থা কাহিল।

মারুফ রাস্তায় দাঁড়িয়ে কিশোরের তাজা লাশ দেখছে। রক্তে ভিজে গেছে ওর শরীর। লাশ আবার তাজা অয় না কি? লাশ সব সময়ই বাসি, মানুষই বাসি দুনিয়ার--- হঠাৎ লোকজন আবিষ্কার করে, এখনো নিথর হয়নি কিশোরের দেহ। তারা তাকে কোলে করে হাসপাতালে নিয়ে যাবার জন্য তৈরী হলো। মারুফ ভাবে আর গাঞ্জার স্টিকে লম্বা টান মারে।

হায়রে দুনিয়া! এক প্রান্তে তার বয়সী পোলার পড়াশোনা শিইখা জানতাছে---বাংলাদেশ সোনার দেশ। এই দেশে ছয়টা ঋতু...বসন্ত বাতাসে সইগো...বসন্ত বাতাসে... বিএনপি বলতাছে স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ জিয়া আর আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান...আর মারুফ বিপরীত গ্রুপের রক্ত কিনতে আইছে লিজা ফার্মেসিতে...মরণ নেশা করবার লাইগা...!!! মারুফ লিজা ফার্মেসির দিকে এগিয়ে গেলো। রাস্তায় ভীড় জমে গেছে। ফামের্সির ভীড় কমে গেছে। ---কী মিয়া! ও নেগেটিভ রক্ত আছে? ফার্মেসির দোকানদার অদ্ভুত চোখে তাকালো।

কারণ তার নাকে গাঁজার গন্ধ ঠেকছে। নেশাখোর রক্ত দিয়ে কী করবে? ---পেশেন্ট সাথে আছে? ---কী বাল পেশেন্ট...হালা! রক্ত বের করবার কইছি, বের কর...এইডা দেখছস? মারুফ প্যান্টের পকেট থেকে জংধরা একটা রিভলবার বের করলো। দোকানদার দেরী না করে এক ব্যাগ রক্ত ধরিয়ে দিলো মারুফের হাতে। মারুফ রক্তের ব্যাগ হাতে নিয়ে হাঁটতে শুরু করলো। মারুফ যখন হাঁটছে ও নেগেটিভ রক্তের ব্যাগ নিয়ে, তখনই একই গ্রুপের রক্তের জন্য হাহাকার করছেন এক কিশোরের পিতা, তার ছেলে মোটর বাইকের সাথে একসিডেন্ট... মারুফ লাবু ভাইয়ের আস্তানায় ফিরে এসেছে।

এখানে নেশার সব মাল-মশলা পাওয়া যায়। শুধু রক্ত পাওয়া যায় না। ---লাবু ভাই, রক্ত রাখতে হবো এখন থেইকা! মারুফ তেজী গলায় বলে। লাবু ভাই ফেনসিডিল গলায় ঢালছেন। ...ঠিকই কইছোস রে মারুইফ্যা! এক কাজ কর...ডেইলি দশ-বারোটা খুন কর...রক্ত আইনা জমা কর ড্রামে... ---ও লাবু ভাই গো..রক্ত তো জমাট বাইন্ধা যায়... অনেকটা গানের সুরে বলে মারুফ।

পাশে ভাদাইম্যা করিম ও নেগেটিভ রক্ত শরীরে প্রবেশ করানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে। ---ঠিক কইছোস রে মারুইফ্যা! জাত আছে তোর... লাবু ভাইয়ের কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়ে...ফেন্সির নেশায় নিমগ্ন সে। মারুফ শরীরে রক্ত নিতে থাকে। সমস্ত শরীর অবশ হয়ে যেতে শুরু করে তার। আহ! কী অপার্থিব অনুভূতি।

সেইসাথে জঘন্য সব বিভ্রম। মারুফের শৈশব-কৈশোরের কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে গ্রামের কথা। মায়ের কথা। মার বয়সী মহিলার গলায় একটা তিল ছিলো।

মারুফ সেটা দেখে চমকে উঠেছিলো। কারণ ঐ একই জায়গায় মারুফের মায়ের তিল ছিলো। মারুফ সেটা দেখতো আর বিস্মিত হতো। মারুফের উপর লাবু ভাইয়ের কড়া অর্ডার ছিলো মহিলার গলায় ছুরি বিঁধানোর। মারুফ সেটা করে নি, করতে পারে নি।

কেন? এর কী কারণ? সে খারাপ মানুষ। নিকৃষ্ট। সব থেকে বড় কথা সে একজন ধর্ষক। গ্রামে চার বছর বয়সী এক শিশুর সম্ভ্রম সে নষ্ট করেছিলো। গ্রামে সালিস হলো।

সেই সালিসে মারুফকে গ্রাম ছাড়তে হলো। আর সেই শিশুটাকে আঠারো বছর বয়স পর্যন্ত মারুফকে দেখাশোনার দায়িত্ব দেয়া হলো। মারুফ প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা পাঠায় তার গ্রামের বাড়ির সেই শিশুটার ঠিকানায়। কতদিন আগের কথা...ও কী এখন অনেক বড় হয়ে গেছে? এই সমাজ কী ওকে গ্রহণ করেছে? মারুফ অপরাধবোধে ভোগে। যখন নেশা করে তখন সেই মেয়েটাকে দেখতে পায় বিভ্রমে।

যখন টাকার জন্য ছিনতাই করে, তখনো সেই মেয়েটার কথা মনে পড়ে। রাত গভীর হয়ে আসে। নেশার ঘোরে ঝিমোতে থাকে এই পৃথিবীর তিনটি প্রাণী।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.