আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দি স্ক্রিপ্ট রাইটার



বাসায় কেউ নেই। মা মানসিক রোগী, তাকে পাঠানো হয়েছে গ্রামের বাড়িতে। বাবা ব্যস্ত মানুষ, অসম্ভব রকম পরিশ্রম করে মানুষটা। রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে সে প্রতিনিয়ত। তারপরও তার ক্লান্তিবোধ নেই, নেই কোন অভিমানও।

মাঝেমধ্যে উদাসীন হয়ে যায় মানুষটা, তার চোখের কোণের ২ ফোটা অশ্র“ও চোখ এড়ায় না আমার। আমি হেসে উঠি, হেসে উঠি মুগ্ধতায়। তার দুঃখ দেখে নয়, তার ভালোবাসাটা দেখে। আমার মাকে প্রচন্ড ভালোবাসে মানুষটা, অসম্ভব রকম ভালোবাসে। মা সেটা জানে না, জেনে লাভও নেই, একজন মানসিক রোগী (পাগল) ভালোবাসা, দুঃখ, মমতা, ক্ষোভ এসবের কিছুই বোঝে না।

এতো কিছু বুঝে লাভও নেই ! আমার এগুলো দেখে খারাপ লাগে না, একদম না। আমার জীবনের স্ক্রিপ্টটা হয়তো এভাবেই লেখা হয়েছে, মন খারাপ হয় না তাই। বাবা চুপচাপ ভালোবেসে যায় মাকে, আর চেয়ে থাকে আমার পথ পানে। অনেক প্রত্যাশা নিয়ে স্বপ্ন গড়ে বাবা প্রতিদিন, সে স্বপ্নগুলো ধীরে ধীরে রঙিন হয় তার কল্পনার রং-তুলির আঁচরে। আমি সেটা অনুভব করে হেসে ফেলি একাএকা।

পারবো কি না কে জানে, তার ছোটো ছোটো স্বপ্নগুলোকে নিয়ে একটা রঙিন বড় স্বপ্নচূড়া গড়তে। আমার জীবনের স্ক্রিপ্ট যিনি লিখেছেন এবং লিখছেন এখনো সেই একমাত্র বলতে পারবে কি হবে, কি হবে না। তার লেখা স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী জীবন চলে আমার, জীবন চলে সবার, চলবেও এটা অনন্তকাল পর্যন্ত। খুব মন খারাপ থাকলে আকাশের দিকে তাকাই আমি, খুঁজে ফিরি আমার স্ক্রিপ্ট রাইটারকে। যখন প্রচন্ড দুঃখে কেঁদে ফেলি আমি তখনো তাকাই ঐ আকাশ পানে, দেখতে চাই তাকে যিনি লিখছেন আমার জীবনের স্ক্রিপ্ট।

হঠাৎ করে স্ক্রিপ্ট পরিবর্তন হয়, আমি হেসে উঠি আবারো কারণে অকারণে, আনন্দে ভেসে যায় আমার সমস্ত পৃথিবী, তখন পরম কৃতজ্ঞতায় আবারো একবার তাকাই ঐ আকাশে, অনুভব করতে চাই সেই স্ক্রিপ্ট রাইটারকে। কোথায় নেই তিনি, তোমার আমার মাঝেই তো আছে সে, খুঁজে দেখ পেয়ে যাবে অজান্তেই সেই স্ক্রিপ্ট রাইটারকে, যাকে আমরা বলি আল্লাহ্, হিন্দুরা বলে ভগবান, আর তুমি পরম মমতা নিয়ে ডাকো তাকে ‘স্রষ্টা’ বলে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।