কিঞ্চন। খুলনায় বাড়ী। ২৮ বছরের টগবগে যুবক। আমার সমবয়সী। তার পুরোনাম কিঞ্চন কুমার সাহা।

লন্ডনে আছে ২বছর। লম্বা,সুদর্শন,স্বাস্থ্যবান এবং সবসময় হাসি-খুশী। তার সাথে আমার পরিচয় এ্যানফিল্ড ম্যকডোনাল্ডস্-এ। রেষ্টুরেন্টের প্রচন্ড ব্যস্ত শিফ্ট্-এ আমি সে এবংঅনান্য ক্রু মেম্বাররা বিগ ম্যাক বা কোয়ার্টার পাউন্ডার বানানোর ফাঁকে ফাঁকে কিঞ্চনের সাথে আমাদের ব্যস্ত সময় পার হতো তার নানা দুষ্টুমীতে। কিঞ্চন আমাদের ছেলেদের মধ্যে যেমন জনপ্রিয় তেমনি জনপ্রিয় মেয়েদের মধ্যেও।

কিন্তু ওকে কখনো দেখিনি কারো সাথে কখনো বাজে কথা বলতে বা কোন মেয়ের সাথে বাজে ধরনের মজা করতে। আমাদের মধ্যে সবচেয়ে সুদর্শন লিথুনিয়ান মেয়ে লিনা আর মরিশান অ্যাশলি দু'জনেই তাকে খুব পছন্দ করে। আর দু'জনই এই নিয়ে একে অপরের প্রতিদ্বন্দী মনে করে। আমাদের কিঞ্চনের শরীর খুবই খারাপ। দু সপ্তাহ ধরে সে উত্তর লন্ডনের চেস্ ফার্ম হসপিটালে মৃত্যুর সাথে লড়ছে।

তার সারা ফুসফুসে নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়েছে। যেহেতু তার ফুসফুস ঠিকমতো কাজ করছে না,তাকে কৃত্রিম লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাচিয়ে রাখা হয়েছে। একটু আগে লিনাকে ফোন করলাম সে কাঁদছিলো প্রচন্ড। কথা বলতে পারছিলো না ঠিকমতো কাঁদার কারনে। আমাকে বার বার বলছিলো, Moinul Kinchan is dying, Kinchan is dying. ডাক্তার বলেছে তার বাম ফুসফুস কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছে।

এবং পরবর্তী ২৪ ঘন্টা সে বাঁচবে কিনা তাতে তারা সন্দিহান। প্লিজ,প্লিজ, প্লিজ............ওর জন্য আপনার সবাই একটু দোয়া করুন। ও যেন আবার চোখ খুলে তাকায়। আবার যেন আমাদের মাঝে আসে। সে বাবা মা'র একমাত্র সন্তান।

তার বাবা মা যাতে ছেলেকে ফিরে পায়। ......আর সে যেন জানতে পারে তার জন্য অসম্ভব ভালোবাসা বুকে নিয়ে এক ভিনদেশী সাদা মেয়ে বসে আছে। চোখ খোল কিঞ্চন। প্লিজ। [ আমি একটু পরই হাসপাতালে যাচ্ছি।

আপনাদের আশা করি জানাবো পরবর্তী অবস্থা। ]
।