আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওহ ! মেরি !

কাগু ক্যান স্টার্ট অ্যা ফায়ার ইউজিং জাস্ট টু আইস কিউবস

সদরঘাট থাইকা নারায়ণগন্জ । গ্যান্জামের এক জার্নি পার হৈয়া দুদিন পরপর তাও আমি চইলা যাই রনিদের বাড়ী । সকালে বাইর হৈলে দুপুর প্রায় চইলা আসে পৌছাইতে পৌছাইতে । পথের ক্লান্তি , পোড়া দেশের তীব্র রইদ, কাঁচবালি উড়ে বাতাসে । মুখের উপর ধূলাঘামের স্তর পইড়া থাকলেও মনটা ভালো হয় রনির হাসিমুখটা দেখলে ।

ভালবাসায় কার্পণ্য শুরু থাইকাই ছিল না । ছিল খালি ভয় । মাইয়া মানুষ আমি । বিনা ঝুঁকিতে , বিনা যন্ত্রণায় কিছুই নাই আমার জন্য । শরীরের আনন্দেও ভয়ের খড়গ মাথার উপরে ঝুইলাই থাকে ।

আধাগ্রাম আধাশহরের এই অঞ্চল দুপুরের রোদে মারাত্নক খাঁখাঁ করে । জানলা দিয়া বাইরে তাকাইয়া থাকতে থাকতে মাঝে মইধ্যে মাথা ঝিমঝিম করে । নিজের অস্তিত্ব, সাম্প্রতিকের নিজ কাজকারবার হঠাৎ হঠাৎ উদ্ভট লাগা শুরু করে । পীরিতের ভুলের দেনা শোধ করতে করতে বড় বইনটারে আইজকাল বয়সের চাইতে বেশি ক্লান্ত বেশি বিধ্বস্ত লাগে । আকাইম্যা দুলাভাই আর কিছু না পারলেও তিনডা বাচ্চা পয়দা করতে বেশি সময় নেয় নাই ।

বাইরে উপার্জন কৈরা ঘরে ফিরা সেইটারে আবার মুখে তুইলা দেয়ার বন্দোবস্তও করন লাগে তার । গান্জার ট্যাকায় ঘাটতি পড়লে মাসের শেষে ক্যাচাল শুরু হয় । বড় বইন অবশ্য এইসব নিয়া ঘরে বিচার চাইতে আইতে পারে না । সেই দরজা সে নিজেই বন্ধ কৈরা গ্যাছে আকাইম্যার হাত ধৈরা পালানির সময় । আব্বা তার আগমনের উপর নিষেধাজ্ঞা এখনও তুইলা নেন নাই ।

তার যন্ত্রণার, পদে পদে পুনমারা খাওন শুরু হওয়ার ইতিহাস আমি জানি । আম্মাও জানেন না অতটা । ইশকুলের শেষদিকে, যখন চিপা চিপা জিন্স প্যান্ট পরা চ্যাংরা পুলাপান ঠোঁটে সিগারেট ধরাইয়া ভোদাইর মত ফ্যালফ্যাল কৈরা চাইয়া থাকত আসার পথে , তখন একইসাথে উপহাস আর আকর্ষণের যেই জোড় আবেগ তার মইধ্যের আকর্ষণের অংশটারে থাবড়াইয়া বসাইয়া দিতাম বড় বইনের কথা মনে কৈরা । যেই যন্ত্রণা উনার মত আহ্লাদি সহ্য করতাছে সেইটা আমার মত দশ চড়ে রা নাই গাধীরেও ঘুমের মইধ্যের দুঃস্বপ্নের মত দাবড়াইয়া বেড়াইত সারাবেলা । অংক স্যারের কোচিং এ সুজনরে দেখলেই পেটের মইধ্যে খালি হৈয়া যাইলেও মুখে পাত্থর আইকা বৈসা থাকতাম ।

চেষ্টা করতাম স্যারের কথায় মনোযোগ দেয়ার । উল্টা অতি-প্রচেষ্টার কারণে ঘুইরা ফিরা খালি ওর কথাই ভাবতে থাকতাম । সেই সুজন ঈদকার্ডে আই লাভ ইউ লেইখা দিলে ওরে কঠোরভাবে মানা কৈরা দিই এইধরণের চিন্তা যেন স্বপ্নেও না করে । আসলে নিজেরে নিজেই শুনাইছিলাম সেই কথা । আহা বেচারা ।

জানলো না রাইতে ঘুমানির আগে ঘটা কৈরা ওর কথা মনে কৈরাই বালিশ ভিজাইতাম আমি । জাইনা গেলো আমি ওরে দুই চোখে দেখতে পারি না । ভালোমত অংক শিখা হয় নাই অথচ সেই আমি এখন ম্যাথে পড়ি । প্রতিবার পড়তে বসলে হাল্কা কৈরা একবার এখনও ওর কথাই ভাবি । দুপুরের নির্জনে খালি বাড়িতে আমি আর রনি বসে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা ।

দুজনেরই চোখ কাঠফাটা রইদের দিকে । কাউয়ার হাহাকারও ব্যাকগ্রাউন্ডে চৈলা যায়, ল্যান্ডস্কেইপে চৈলা যায় । ঘরের ভিতরে হাল্কা পায়ের ঘসাও কান এড়ায় না অথচ বাইরের নিরন্তর কা কা কা কখনো আলাদা কৈরা শুনি কখনো শুনি না । এমন দুপুর গুলার তৃতীয়টাতে প্রথম রনি আমার হাতে হাত রাখে আলতো করে । দুপুরের খাওনের পরে রনির আম্মা লম্বা যেই ঘুম দেন সেই ঘুম ভাঙা দেইখা যাওয়া হয় না কোনদিন আমার ।

হাত ধরে আরও কত বসে থেকেছি অথচ এখন এই তীব্র দুপুরে সেইটাই কেমন যেন বিদ্যুতের মত খেইল দেখায় । আরো ঘনিষ্ঠ হৈলে রনির বুকের গন্ধে আমার চোখ ঢুলুঢুলু হয়ে আসে । শরীরের আনন্দেও রিস্কের একশভাগে নিরানব্বই ভাগ আমারেই যে নিতে হবে সেইটা প্রোবাবিলিটি কেলাশ থাইকা ভালোমতই বুঝা আছে । কিন্তু এই ঢুলুঢুলু দুপুর , এই শরীরের অসহ তরঙের মইধ্যে সেইটা যেন একটা নদী তৈরি করে । তার একপাশে বড় বইন আরেকপাশে প্রোবাবিলিটি কেলাশের জ্ঞান রাইখা , আমি ল্যাঙটা রাধা , জলের পরশ নিই গায়ে ।

বাংলাবাজার মহিলা কলেজের ছাত্রীরা সব মহিলা হৈলেও সদরদরজা ও তার আশেপাশের রাস্তায় নিত্যই পুরুষ ফ্যাশন শোর আসর বসে । কত তার মডেল কত তার সাজ । কালো সানগ্লাস চলতো সবচে বেশি । নিজের রুপ নিয়া বেশি আত্নবিশ্বাস কখনো না থাকলেও পিচ্চি পিয়ন মারফত দুএকটা চিঠি হাতে পাইলে কালো সানগ্লাসের মডেলের পাশে হাত ধৈরা হামকো হামিসে চুরালো দিল মে কাহি তুম ছুপালো কৈতে আমারও দুএকবার মন চাইত । তখনো সেই ইচ্ছারে থাবড়াইয়া বসাইয়া দিছি বড় বইনের কর্মক্লান্ত মুখটারে মনে কৈরা কৈরা ।

বোরকা আর মকছুদুল মুমিনিনের দিনও শুরু করি । দ্বীনের দাওয়াত নিয়া বৈনেরা আসতেন ঘরে, কিন্তু রাইতে ঠিকই দিল মে কাহি তুম ছুপালোর সর রিনিঝিনি বাজতে থাকতো ঘুমাইতে যাওয়ার আগে , আমার ভিতরবাড়িতে । মকছুদুল মুমিনিন বেহেশতি জেওর আর ছৌদি বোরখা মিলাইয়াও শেষ পর্যন্ত ঠেকাইয়া রাখতে পারলো না জগন্নাথের পাগলা রনিরে । বড় রসকসহীন , ভেংচি কাটা ইয়া বড় ডিফারেন্সিয়াল ইক্যুয়েশনের মাঝখানে ভোরবেলা নারায়নগন্জ থাইকা নিজগাছের গোলাপ নিয়া আসা রনির পাগলামিতে পিছলা খাইয়া শেষ পর্যন্ত পইড়া গেলাম । তিন মাসের মাথায়ই সব ইক্যুয়েশনরে পাছা দেখাইয়া গুরুপে গুরুপে ভাগ হৈয়া গেল সবাই ।

গুরুপের মাইঝখানে মাইঝখানে তৈরী হৈল দুই সদস্য গুরুপ । ভালো ছিল কি খারাপ ছিল বুঝতে পারার আগেই আমার গুরুপের পাগলা রনির পাগলামিতে অসহ্য কিন্ত ছাইড়া থাকাও অসহ্য হৈয়া আসলে নারায়নগন্জ পর্যন্ত যাওয়া শুরু করি আমি । প্রোবাবিলিটির চাক্কু যে এত তাড়াতাড়ি ঘাই দেয়া শুরু করবো সেইডা আমরা দুই ম্যাথমিটিশিয়ান মিল্লাও বুঝি নাই । দুপুরের হিসাব তদ্দিনে মুখে মুখে রাখা অসম্ভব হৈয়া দাঁড়াইছে । প্রায় দুইতিনদিন পরপরই রিকশা বাস রিকশা ধূলা রইদের জার্নি অতিক্রম কৈরা আমি ল্যাঙটা রাধা হৈতে যাই ।

রনির বুকের ঢুলুঢুলু গন্ধ নিতে যাই । একদিন সম্ভাব্যতা কমানির লাইগা পোস্ট কয়টাল পিলও খাই । তার মইধ্যে যে আবার প্রোবাবিলিটি ডিস্ট্রিবিউশন ছিন সেইটাতো আর জানতাম না । চব্বিশ ঘন্টা পার হৈলে যে তার কার্যক্ষমতা ষাইট পারসেন্টের নিচে নাইমা যায় সেইটাতো আর কেউ বৈলা দেয় নাই । আকাম শেষ পর্যন্ত ঘইটা গেলো ।

মাসে মাসে তিনদিন নারীজন্মের পাপ শোধ করতে গিয়া বিরক্তি লাইগা থাকতো । কিল্লাইগা যে মা হাওয়া গন্ধমের ফল ছিঁড়তে গেলো । তার কষ বাইর হওনের প্রতিশোধেই তো প্রতি মাসে তিনচাইরদিনের এই যন্ত্রণা । কিন্তু এইবার সেই যন্ত্রণার জন্যই অধির আগ্রহে অপেক্ষা করতে করতে এক চক্র বাদ গিয়া আরে চক্রের সময় হাজির । ডাক্তারের কাছে গিয়া সুসংবাদের জুতার বাড়িটা খাইয়া আসলাম ।

পায়ের তলা থাইকা মাটি কেমনে সইরা যায় এদ্দিন খালি শুইনাই আসছিলাম , এইবার প্র্যাকটিকালি বুঝলাম । ডরভয় দুঃশ্চিন্তা সবকিছু কেমন জানি পাইনসা মনে হৈত লাগলো এই নতুন জিনিসের কাছে । রনি আর আমি দুইজনেই গেছিলাম এই সুসংবাদ শুনতে । ফিরার পথে কোনো কথা কৈতে পারলাম না কেউই । রাইতে ফুন কৈরা রনিরে বল্লাম এবরশন করতে হৈব ।

সেইটা ঠিকাছে কিন্তু কেমন কি করমু কেউই জানি না । একটা মুখহীন শিশু । অতি ভঙুর , অতি দুর্বল আঙুলে আমার হাত ধরে রাখতে চায় । তারে আমি খুন করতে চাই । সেই ছুরি ধরা হাত ধরেই সে হেসে উঠে ।

আমি হাসির আওয়াজ পাই কিন্তু মুখ দেখি না । এইসব হাবিজাবি ভাবতে ভাবতে বহুদিন পর আবার ঘটা কৈরা কানতে বসি । বালিশ ভিজে গেলেও পাত্থর হালকা হয় না । কি করমু জানি না । কেমনে করমু জানি না ।

আব্বার হাতে খুন হওয়ার ভয় একটু একটু কৈরা আসতে থাকে । আল্ট্রাসনোগ্রামের রিপোর্ট দেইখা ডাক্তার একটু মুখ আন্ধার কৈরা বলেন জরায়ুতে নাকি টিউমার আছে আমার । সেইটা এখনো ছোট আছে কিন্তু পরে বড় হৈলে জরায়ু কাইটা ফালাইতে হৈব । তাই বাচ্চা চাইলে এইটা রাখলেই ভালো হৈব । হঠাৎ রনিরে পিতৃস্নেহে পায় ।

বলে এই বাচ্চা রাইখা দিতে । ছ্যানছ্যান কৈরা উঠি আমি । কৈলেই তো হৈব না । তুমারেতো তো কেউ আর আইসা জিগাইবো না । কেলেঙ্কারি তো আমার ঘটবো ।

রনি গিয়া তার মায়েরে খুইলা বলে সব ঘটনা । সেই বুড়ি আম্মার কাছে ফুন কৈরা সব ফাঁস কৈরা দিলেন । লাঞ্চনা, অপমানের চারপাশ, তার উপর উপরি হিসাবে শরীরের ভিতরে উদ্ভট ভালো-না-লাগা নিয়া মাথায় যেন বিকৃতি শুরু হয় আমার । নারায়নগন্জ গেছস হেডা বিলাইতে, টানবাজারেই যাইতি , হেডার জ্বালাও মিটতো ট্যাকাও আইত । মা-জননীর এই কোমল গালিতেও চোখের জলের অধিক কিছু বাইর হয় না ।

পেটের ভিতরে অসহ্য গুলানি এই কথা শুনার আগে থাইকাও ছিলো । কথার ভার এখন যেন আর ভার মনে হয় না । বিয়ার জন্য পরিবারের আত্নীয়দের মতামত জোগাড় করাতে ব্যস্ত রনি । আমার খবর রাখতে পারতাছে না তেমন । এরই মধ্যে প্রায় দুইমাস পার হৈরা গেছে ।

আব্বাকে জানানো যাবে না কিছুতেই এই ঘটনা । কিন্তু তাড়াতাড়ি বিয়া করানোর চাপ তাইলে কিভাবে দিই । ঘটনার প্যাঁচ কিছুতেই খুলে না । রনি বেচারা একাই সন্তানের জন্য উতলা । তবু তার আচরণ হাত-পাঁ বাধা ঢালতলোয়ার ছাড়া সর্দারের মত ।

কি যেন তার নাম ছিল মনে নাই ঠিক । সদরঘাট থাইকা নারায়নগন্জ গিয়া জ্বালা মিটাইয়া আসা মাইয়া নিয়া রনির আম্মার নাকি একটু তাচ্ছিল্য আছে । রনি-মিলি-আমি এই রুটে সেই খবর পাইলে , চ্যাতলেও জবাব দেয়ার কিছু নাই । ঘটনা সত্য । সমাধান তাইলে হয়তো এইভাবে না ।

অন্য কোনো ভাবে । গলায় ওড়নাটা পেঁচাইয়া সিলিং ফ্যানের সাথে বাঁধতে গেলে আন্ধার ঘরে হঠাৎ আবার আমি সেই শিশুর হাসি শুনতে পাই । জীবনটারে তছনছ কৈরা দেয়ার জন্য পেটে বাস বাঁধছে যেই বান্দর , জীবনের উদ্ভট প্রোবাবিলিটি ফাংশনের কারনে তার কোনো দোষ নাই । সেই নির্দোষরে দোষ শিখানির আগে খুন কৈরা দেওনের অধিকারতো আমি রাখি না । কে রাখে তা জানি না ।

গলায় টাইট করা বাঁধা ওড়না খুইলা রাখি । বান্দরটারে কেবল একটা জীবন দেওনের জন্যই এই গলার শক্তির দরকার এখন অনেক বেশি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।