আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এই পোস্টটা আমি লেখতে চাই নাই, কিন্তু না লেইখাও পারতেছি না

সাহিত্যের সাইটhttp://www.samowiki.net। বইয়ের সাইট http://www.boierdokan.com

সামহয়ারে আমার তিন বছর হইতে চললো। একটা নিক খুইলা বইসা থাকলেও তিন বছর কাইটা যায়। স্টেটাসে ঠিকই তিন বছর লেখা আসে। গর্ব কইরা মানুষরে কওয়া যায় ভাই এইখানে তিন বছর আছি।

আমি তিন বছর আছি মানে তিন বছরই আছে। এমন দিন যায় নাই যে, নেটে আসছি আর সামহয়ার খুলি নাই। এমন সপ্তাহ যায় নাই যে, দুইতিনটা পোস্ট দেই নাই। কোনো সপ্তাহে ৭-১০টা পোস্টও দিছি। এর মধ্যে ভার্চুয়াল নদী দিয়া মেলা পানি বয়া গেছে।

কত জনে ঘোষণা দিয়া সামহয়ার ছাড়ছেন। কতজনে ছাইড়া দিয়া চইলা গেছেন। আবার ফিরে আসছেন। আবার কতজনে যাইতে চায়াও যান নাই। কতজনরে ব্যান করা হইছে।

কতজনে নাম বদল করছেন। এক নাম থেকে আরেক নামে মেটামরফসিস হইছেন। আমি এইগুলার কিছুই করি নাই। খুব অজনপ্রিয়ভাবে, খুব নিরিবিলি থাকছি। আমারে কোনোদিন ব্যান করা হয় নাই।

কোনোদিন সাদামাটা ব্লগারের স্টেটাস থিকা নামানো হয় নাই। পোস্ট মুছার নজিরও আমি মুকাবেলা করি নাই। আমার একটা কমেন্টও মোছা যায় নাই। এত সাধারণ ব্লগিং জীবন যে, উল্লেখ করার মতো কিছু নাই। সামহয়ারে যখন কোনো নীতিমালা আছিল না, তখন আমি নিজের নীতিতে লিখছি।

চাইছি সামহয়ার একটা নীতিতে চলুক। সামহয়ারের যখন নিয়ম-নীতি আছে তখন আমি আমার নীতি আর সামহয়ারের নীতি মাইনা লেখি। আমার মতো নীরব-নিরুপদ্রব ব্লগারের তাতে অসুবিধা হয় না। এর মধ্যে একটু ছেদ ঘটছে প্রথম আলো ব্লগ আসার পর। কিছুদিন এমন ব্যস্ততা গেছে যে, সামহয়ারে আসলেও ঢুকার সময় পাই নাই।

ঢুকলেও লেখতে পারি নাই। তখন আমারে নিয়া আর আমার কাজের ক্ষেত্র নিয়া সামহয়ারে পোস্টের বন্যা বয়া গেছে। আমি কিছু কই নাই। বরং ভাল লাগছে। সেই ভাল লাগা নিয়া আমি লেখছিও।

কিন্তু বুঝতে পারি, সামহয়ারের নিয়ম-নীতি অনুসারে সেইগুলার সবটা ছাপা যায় না। এরপরও এমন কিছু পোস্ট আমার নামে আসছে যেইগুলা নীতি সামহয়ারের নীতি অনুসারে ছাপা হইতে পারে না। তাও হইছে। আমি কিছু কই নাই। বুঝি না, কিছু কইলে কিছু হইতে পারে কি না।

পোস্ট যখন প্রথম পাতায় ছাপা হয়, তখন সেইটাতে সামহয়ারের মৃদু অনুমোদন থাকে বইলা আমার ধারণা। ধারণাটা ভুলও হইতে পারে। তবে কমেন্ট যখন ছাপা হয়, তখন সেইটাতে পোস্টদাতার অনুমোদন থাকে এইটা বলা যায়। কারণ, পোস্টদাতা ইচ্ছা করলে কমেন্ট মুছতে পারেন, ব্লগারকে ব্লক করতে পারেন। সামহয়ারে যখন সারাদিন পইড়া থাকতাম তখন কে আমার পোস্টে কটু কমেন্ট করতেছে সেইটা খেয়ালে থাকতো।

প্রচুর সময় দিতাম ফলে কমেন্ট মুছার বা ব্লক করার দরকার হইতো না। কিন্তু এখন দেখি ব্লক করার দরকার পড়তেছে। খারাপ কমেন্টদাতাদের কয়েকজনকে ব্যান করছি। কিন্তু কালক্রমে দেখতেছি, নতুন নতুন নিকে এরা আসতেছে আর অসীম ধৈর্য সহকারে আজে বাজে গালি দিতেছে। ভাবলাম, কয়জনরে ব্যান করবো।

তাই দুইদিন আগে আমার ব্লগের নিচে একটা কথা ঝুলাইছিলাম কর্তৃপক্ষের উদ্দেশে যে, এইগুলার যাতে বিহিত করা হয়। দুর্ভাগ্য সেইটা কারো চোখে পড়ে নাই। বিহিতও হয় নাই। তাই লাজলজ্জার মাথা খায়া পোস্ট দিচ্ছি। আমার সাধ্য নাই, কমেন্টগুলার কিছু আলামত এইখানে উপস্থাপন করার।

সেইগুলা উল্লেখ করে বিহিত চাওয়ার। কারণ ব্রাত্য রাইসু কয়দিন আগে এইরকম অ্যাবিউসিভ কমেন্টের উল্লেখপূর্বক বিহিত চাওয়ায় তিনি ব্যান খাইছেন। আমি ব্যান খাইতে চাই না। ভয় লাগে। অবশ্য সামহয়ারে সাম্প্রতিক সময়ে কিছু লোকের পোস্ট ও কমেন্ট থেকে মনে হইছে আমি আর সামহয়ারে আসি সেইটা তারা চান না।

তাদের পরামর্শ হইলো আমি যেন প্রথম আলোতেই লিখি। এটা অবশ্যই আমি মানি, যে ভাল লেখা দেয়ার জন্য সামহয়ারের চাইতে প্রথম আলো উত্তম স্থান। সেখানে আলোচনার পরিবেশ আছে। গালাগালি নাই। সেখানে আমি লিখিও বটে।

লিখবো। চাকরিও করবো। কিন্তু তাই বলে সামহয়ার ছাড়বো এই প্রশ্ন কেন ওঠে? এইখানে আমি ৩ বছর ব্যয় করছি। এই ব্লগ দাঁড়া করানোর পিছনে আমাদের তিল পরিমাণ হইলেও কিছু কন্ট্রিবিউশন আছে। সেইটা তো ফাও ফাও না।

একটা ভালোবাসাও আছে। কিন্তু দিনকে দিন লক্ষ্য করতেছি সামহয়ারের পরিবেশ বৈরি হয়া উঠতেছে। এখানে গালাগালির অবাধ ক্ষেত্র তৈরি হইতেছে। ফলে, শুধু দরদের বশবর্তী হয়া এইখানে টেকা বোধহয় সম্ভব না। সামহয়ার কর্তৃপক্ষকে আগে আমরা পোস্ট দিয়া এইগুলার বিষয়ে জানাইতাম।

এখন সময় কম, তাই খেয়াল করাও কম হয়, সেইরকম পোস্টও দেয়া হয় না। তাইলে আমরা কী করবো? পোস্ট উইথড্র কইরা চইলা যাবো? শেষ পর্যন্ত হয়তো তাই করতে হবে। কিন্তু তার আগে কিছু চেষ্টা করতে অসুবিধা কী? যে লোকগুলা আমারে গালি দেয়, আমাদের ফার্মগেটে ঝুলায়ে পিটাইতে চায়, যতভাবে পারে অপমান করে, মনে প্রাণে চায় প্রথম আলো ব্লগ থিকা আমার চাকরি যাক, ফিউশন ফাইভ/লোকালটক চাকরিটা পাক তাদের একটা পরিচয় আছে। তারা মোটামুটিভাবে একটি রাজনৈতিক মতাদর্শের গুণ্ডা। সরকার বদলের পর এরা হল, ফুটপাথ, বিশ্ববিদ্যালয়, টার্মিনাল দখলে নিছে।

আমার কেন জানি মনে হইতেছে, ভার্চুয়াল গুণ্ডারা সামহয়ারের দখলও নিছে। এই গুণ্ডারা সুকৌশলে ক্ষমতাসীন মতাদর্শের বিরোধী সকল কিছুরে পর্যুদস্ত করতেছে। দমন করার চেষ্টা করতেছে। সামহয়ার জেনে হউক আর না জাইনা হউক সেই গুণ্ডা মতাদর্শের পক্ষে কাজ করতেছে। ব্লগ হিসাবে এইখানে ভিন্নমতাবলম্বীদের থাকা অস্বস্তিদায়ক হয়া উঠতেছে।

আমি সাধারণ মানুষ। ভিন্নমত তেমন নাই। কেউ সাধারণ মতের লোক হইলে আমার সুবিধা হয়। কিন্তু আমি অল্প হইলেও বুঝি, ভিন্নমত একটা সৌন্দর্য এইটারে রাখা দরকার সমাজের প্রয়োজনে। আর গুণ্ডামী কোনো আদর্শ না।

এইটারে দমন করা দরকার। এখন কেউ আমারে জিগাতে পারেন ভাই, আপনি এত কথা কন ক্যান? ভিন্নমতের কারণে সামহয়ার যাদের ব্যান করছে, স্টেটাস নামাইছে, পোস্ট মুইছা দিছে। আপনে সহ যারা গালি খায়া প্রতিকার পায় নাই তারা প্রথম আলো ব্লগে যান। আপনে তাদের সাদরে বরণ কইরা নেন। ভাল কথা।

সেইটা করা যায়। কিন্তু একটু ভাল মানুষ সাজলাম। কারণ, একটা ভাল উদ্দেশ্য। সামহয়ারে এত বছর থাকতে পারলাম আর এখন কিছু গুণ্ডাপাণ্ডার কাছে হাইরা চইলা যাবো, ভাবতে কেমন জানি লাগতেছে। দেখি না।

যদি কিছু হয়।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।