আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোকড়া চুলওয়ালী আমাকে বকা দিসে

এই ব্লগের সব লেখা সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
সকাল সন্ধ্যা গাধার খাটুনির পরে বাসায় এসে পিসিতে বসে সময় কাটানো এর পরে ঘুম সকালে উঠে আবার ঘড়ির কাটা ধরে সেই ছুটে চলা, জীবনকে যান্ত্রিক করে তুলেছিল ... এ কারনেই সেদিন আমরা এক হয়েছিলাম কয়েকজন বড় ভাই, বন্ধু বান্ধব ... এর মাঝে বেশ কয়েকজন বিবাহিত, কিছু ছিলেন হাফ ব্যাচেলর (নিজ নিজ দোকলা সহ) এবং আমার মতো কিছু কপাল পোড়া ব্যাচেলর (যাদের দোকলাও নাই, বউ ও নাই) সেদিন বিকেলে এক বড় ভাই এর বাসায় আড্ডাটা জমেছিল মুলত সময়ের কাটা ধরে চলার নিয়মকে ভেঙ্গে একটু আনন্দ করা, খাওয়া দাওয়া করার জন্য। সময়মত সবাই উপস্হিত হতেই এক এক করে দেখি দল আলাদা হওয়া শুরু হলো .... বাচ্চারা সব নিজেদের জন্য আলাদা যায়গা বানিয়ে খেলা শুরু করলো ... ভাবীরা রান্নাঘরে তাদের আসর জমালেন .... আর আমরা এদিকে ড্রইংরুমে .... আমাদের মাঝে কয়েকজন ছিলেন যারা নিউজ-ভক্ষক ... আনন্দ করতে এসেও কোন চ্যানেলে কোন নিউজ দিচ্ছে তা না দেখলে মনে হয় দুনিয়া উল্টে যাবে ... কয়েকজন আবার রাজনীতিবিদ ... বাউন্ডারির বাইরে বসে বাংলাদেশের নির্বাচনের খেলায়- ক্রিজে কে কিভাবে খেললে ভাল হয় তা নিয়ে গবেষনা না করলে মনে হয় ওদের পেট ফেটে যাবে ... কেউ কেউ আবার গলা চড়িয়ে তাদের দোকলার গুনগান করছিলেন ... যাতে করে রান্না ঘরেও তাদের মন্তব্যগুলো পৌছে যায় এবং অন্যান্যদের চেয়ে নিজেরা উপরে থাকতে পারেন ... এসব আজাইরা কান্ড দেখে আমাদের কয়েকজনের লেগে গেল চরম ক্ষুধা ... দিলাম শুরু করে চিল্লা পাল্লা ...খাওয়ার সময় না হলেও কয়েকজনের সমর্থন পাওয়াতে আমাদের আন্দোলন টা বেশ কাজে দিলো ... আমাদের জন্য সব খাবার কিছু কিছু করে সামনে এনে রাখা হলো আর বলা হলো এখন অল্প করে খাওয়ার জন্য পরে সবাই একসাথে খাবো ... কিন্তু এ কথা বলে চলে যাওয়ার সময় ভাবীদের চোখের অগ্নিদৃষ্টি আর দোকলা ভাবীদের হুমকীমাখা গম্ভীরতার সামনে ফ্রেস ব্যাচেলররা ছাড়া ঐ খাবারে আর কেউ সেইভাবে হাত দিতে সাহস পেল না ... এক দুই টুকরা নামকাওয়াস্তে মুখে দিয়ে কুলুপ এটে বসে থাকলো ... এদিকে আমাদের তো পোয়া বারো ... আমাদের আর ঠেকায় কে .... পেটে ধরুক আর না ধরুক ... ডিশের শেষ টুকরা টাও আমরা ছাড়িনি ... আমাদের খাওয়া শেষ হওয়ার কিছু পরেই ভাবীরা ডাইনিং টেবিলে সব খাবার গুছিয়ে ফেললেন.... এবার সবাইকে ডাকা হলো ... আমরা বললাম যে খাবার তো গলায় এসে ঠেকছে ... আপনারা খান ... আমরা এখন ডেজার্ট খাবো ... আমি কেবল ডেজার্টের একটা বাটি হাতে নিয়েছি ... ততক্ষনে বাচ্চারাও খাওয়ার জন্য এসে পড়েছে ... তখন দেখি এক দেড় ফুটি - কোকড়া লম্বা চুল ওয়ালী, তার বড় বড় চোখ দিয়ে আমার দিকে অগ্নি বর্ষন করছে ... ও বললো -- খেতে চলো ... আমি বললাম - খেয়েছি তো ... এবার তার চোখের দৃষ্টিতে আমি মনে হলো যেন মূহুর্তেই ভষ্ম হয়ে যাব ... বললো -- কি ? ... আমি বললাম -- না মানে , আমি ... সে আরেকবার বললো -- তুমি এখন আমার সাথে খাবা .... মূহুর্তের মধ্যে অনন্ত দিগন্তের হাতের বাটি সামনে টি টেবিলে পৌছে গেল এবং সুবোধ বালকের মতো কোকড়ানো চুলওয়ালীর প্রতিটি কথা অক্ষরে অক্ষরে পালন করতে থাকলো ... কারন ... পৃথিবীতে সে মাত্র হাতে গোনা কয়েকটা মানুষের জন্য সবকিছু করতে পারে ... এবং তার মধ্যে কোকড়াচুলওয়ালী একজন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।