আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুন্যতা নিয়ে উড়ে যায় সোনালী পায়রা...



প্রণয়ের স্মারক ছিল, উচ্ছ্ল ঝরনার মতো। পাখিদের মতো বেঁচে থাকার স্বপ্ন ছিল। অগোচরে লড়াই ছিল পাচঁ বছরের। সঙ্গোপনে সমাজকে তথাকথিত প্রমান করে দেয়ার পণ ছিল দুজনেরই। তাই একদিন কোন বাধঁনে বাধাঁও যায়নি তাদের।

পরিচিতরা মেয়েটিকে বলেছিল, তোমাকে ঠকিয়ে আয়ত্ব করার কৌশল নিয়েছে হাতে। পুরো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেউ ছিলনা ছেলেটির পাশে। তার কারন ছিল, ছেলেটিকে কিছুদিন আগেও দেখা যেত ইচ্ছাকৃত শুন্যতার দিকে এগিয়ে যেতে। কদিন আগেও এক ফুটফুটে মেয়ের হাত ধরে ছিল সে। তাকেই তো বন্ধুদের বলতে শোনা যেত আজীবন একসাথে থাকার অদ্ভুত অনুরুপ স্বপ্নের কথা।

উদ্যানের দেয়াল ধরে ফুলে ফুলে প্রজাপতির ডানায় আলপনা আকার শখ ছিল তার। তবু মেয়েটি সবাইকে উপেক্ষা করে চালচুলোহীন ছেলেটির সাথে পা বাড়ালো, অনিশ্চয়তার পথে। বছর যেতে না যেতেই রচিত হলো ভালোবাসার স্মারক। শহরের দেয়ালে দেয়ালে তখন ধ্বনিত হতে থাকলো দু;খ আর যন্ত্রনায় গাথা। কংকরের আঘাত।

লড়াই চললো। নাক শিটকে দুপা দুরে দাড়িয়ে চিনেবাদামের খোসা খোলাতে ব্যস্ত থাকলো শুভাকাঙ্খিরা। অনেক যন্ত্রনার প্রহর শেষে এলো সেইসব দিন। কমলা খাবার মৌসুম। বন্ধুরা এলো দল বেধেঁ হাসি মুখের সেইসব বন্ধুরা যারা ছেলেটির কৌশল করার সম্ভাবনায় চমকে উঠে, মেয়েটিকে সাবধান করেছিল।

ছেলেটি আগেরই মতো আরো ভালো কিছু প্রমান করার তাড়নায় উদাসীন থাকলো। সমাজকে জানাতে থাকলো সুদিনের সম্ভাবনার হাজারো কথা। ছেলেটি সুখী ছিল। কারন দুচোখভরা স্বপ্ন ছিল তার। মেয়েটির ভালোবাসায় সে মুগ্ধ ছিল।

স্মারকের উজ্জ্বলতায় সে আলোকিত হতো। ভালোবাসতো ভেসে যেতে যেতে। ভালোবাসা ছাড়া বিশেষ কোন অর্জন নিয়ে ছেলেটিকে ভাবিত হতে দেখা যেতনা কখনোই। মেয়েটির জন্য সে রেখেছিল কস্ট আর না পাওয়ায় ভরা এক সমগ্র জীবন। একজীবনের বিশ্বাসের ভার।

আস্থায় ভরা ছিল ছেলেটির মন। কারন ছেলেটি জানতো পৃথিবীতে তাকে ভালোবাসার মতো একজন কেউ আছে। ছেলেটি জানতো তার ভালোবাসার স্মারকের কথা। আর কেউ না হলেও স্মারকের সেই আলো একদিন ছড়াবে তার ক্লান্ত মুখে। সে ভাবতো সবাই মিলে সুন্দরতম বেচেঁ থাকার কথা ।

সে বন্ধুদের ভালোবাসতো, আড্ডা দিতে যেয়ে ভুলে যেত মেয়েটির কথা, স্মারকের কথা, পরিবারের কথা। এই ভুলে যাবার অর্থ হয়তো নিহিত ছিল প্রচন্ড আস্থায় ভরা ভালোবাসায়। সে বন্ধুদের নিয়ে মেতে উঠতো। মেয়েটিকে সে আলাদা করে সময় দেয়ার প্রয়োজন বোধ করতো না। সে গতানুগতিক মানুষের মতো ছিলনা বলেই আড্ডা বসাতো বাসাতে।

ছেলেটির ওইসব বন্ধু যারা কিনা নতুন বিয়ে করে ছেলে বন্ধুদের সাথে বউয়ের পরিচয় করাতে যেয়ে মনে মনে কেপেঁ উঠতো বউয়ের প্রতি এবং বন্ধুর প্রতি একধরনের আস্থাহীনতায়, ছেলেটি তাদের তাচ্ছিল্য করতো আর বলতো তুমি নিজের ভালোবাসার প্রতিও আস্থা পাওনা ফলে তোমার মনে হয় তোমার বন্ধুর প্রেমে পড়ে যাবে তোমারই প্রিয়তমা অথবা বন্ধুদেরও বিশ্বাস করতে পারনা। বন্ধুদেরই যদি বিশ্বাস করতে না পারো তবে তুমিও কারো ভালো বন্ধু হতে পারনা। বন্ধুরা ছিল তার সকলপ্রকার সুখ দু:খের সাথী। দু:খ আর না পাওয়ার বেদনা শেয়ার করতে করতেই একদিন মেয়েটির মনে হয়েছিল ছেলেটি তাকে সময় দেয়না। ছেলেটি ভাবতো সারা জীবনের অর্জন যাকে দিয়ে রেখেছে তাকে আর আলাদা করে দেবার মতো কি আছে।

তবু মেয়েটি একদিন নতুন করে ঘিরে আসা শুভাকাঙ্খী বন্ধুদের ভালোবাসায় মুগ্ধ হয়ে আবিস্কার করতে থাকলো হাজারো না পাবার ব্যথা। শুভাকাঙ্খীরা তাকে দেখিয়ে দিল ওদের সম্পর্কের সেইসব ফাকিঁর ইতিহাস। মেয়েটি সে শুন্যতা পুরনে সত্যিকার অর্থেই হন্যে হয়ে একদিন বুঝে গেল ছেলেটির মাঝে মুগ্ধ হবার মতো তেমন কিছুই নেই। একদিন মুগ্ধতা এলো মেয়েটির জীবনে। এতকাল দুড়ে দাড়ানো এবং নতুন করে ঘিরে আসা ছেলেটিরই এক বন্ধুর সাথে তার স্বপ্ন দেখার দিন এলো।

মাঝরাতে কোন এক মহৎ সময়ে মেয়েটি ছেলেটিকে জানালো সেই গভীরতম প্রেমের কথা। ছেলেটির সেই বন্ধুর কথা যে কিনা ছয় বছর আগে ছেলেটির আরো এক ভালোবাসার সঙ্গ কেড়ে নিয়েছিল সুচতুর ভাবে। তবু মেয়েটি নিজেকে আর নিজের ভালোবাসাকে বিশ্বাস করে ছেলেটিকে জানালো ছেলেটির ওই বন্ধুর সাথে আরো একবার ঘর বাধাঁর স্বপ্নের কথা। ছেলেটির হৃদয় জানলো শুন্যতা উড়ো মেঘ। পৃথিবীর কোন কিছুই অবশেষে টিকে থাকেনা।

তাদের সেই সম্পর্কও নেই। শুধু স্মারকটি টিকে যায় উজ্জ্বলতা হারাতে হারাতে। তাকে নিয়ে কেউ ভাবেনি। মানুষ নিজেকে ছাড়া আর কাউকে নিয়ে স্বার্থহীনভাবে ভাবতে পারেনা।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।