আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সব দোষ বাঙালির! তারপরেও আমরা বাঙালি!

কখনো চাই নাই দূরে থাকি...তবু দূরগুলো বারে বারে আসে...

ডঃ মুহাম্মদ ইউনুস যখন নোবেল প্রাইজ পাইলেন তখন আমি তার ভূমিকার সমালোচনামূলক একটা অবস্থান নিছিলাম। ব্লগে বেশ কয়টা পোস্ট আর বেশ কিছু পোস্টে মন্তব্য কইরা যখন স্রোতের বিপরীতে দাঁড়াইলাম, তখন আমার সেই ভূমিকার দায় বর্তাইলো বাঙালী জাতির ঘাড়ে...তারা নাকি অন্য কোন বাঙালীর প্রশংসা নিতে পারে না...একটা আন্তর্জাতিক কৌতুকের বাঙালীকরন করা হইলো...নোংরা মন্তব্য করা হইলো...ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উল্লেখ করা হইলো...যারা এই অবস্থান নিয়া গলাবাজী করতেছিলো, তারা নিজেগো বাঙালীত্ব বিসর্জন দিতেও রাজী ছিলো ঐ সময়। বাঙ্গালিত্ব বিসর্জন দিয়া আরেকধরনের উগ্র জাতীয়তাবাদের চর্চা করতে শুরু করনের এই কৌশলটা বা অভিমতটা কেবল ডঃ ইউনুসের অন্ধভক্তগোই সম্পদ না এর ব্যবহার চলে জীবনের আরো অনেক মুহুর্তে। আপনে বাড়তি বাস ভাড়া নেওনের প্রতিবাদে কন্ডাক্টরের লগে বাদানুবাদ করতেছেন, পেছন থেইকা শুনবেন এই ধরনের কাইজ্জামূলক ঘটনার লেইগা দায়ী আপনের অথবা বাস কন্ডাক্টরের বাঙ্গালিত্ব...অন্য কারো স্টাইল বা ফ্যাশন আপনের ভালো লাগলে তার অনুকরণ করনের পর শুনলেন বাঙ্গালি হওনের লেইগাই আপনের রক্তে এই অহেতুক অনুকরনের অভ্যাস তৈরী আছে। আজকে এক্কেরেই বিরক্তির সময়ে টিভি চ্যানেল সার্ফিং করনের টাইমে হঠাৎ বিজ্ঞাপন জগতের দুই রথী-মহারথীর আড্ডাবাজীমূলক এক অনুষ্ঠানের মাঝখানে গিয়া থামলাম...অংশগ্রহণকারী অমিতাভ রেজা আর রাজীব চৌধুরী দুইজনেই পরিচিত মানুষ হওনে অনাগ্রহের মধ্যেও তাগো কথা শুননের তাগীদ পাইলাম।

তো উপস্থাপিকা তাগো প্রশ্ন করলো অমিতাভ আর রাজীবের কিছু বিজ্ঞাপন দেখলে মনে হয় একই গল্পের পুনরাবৃত্তি, এর কারন কি? বা আজকালকার বেশীরভাগ বিজ্ঞাপনই ক্যান একরম মনে হয়। তো রাজীব চৌধুরী উপস্থাপিকা আর অমিতাভের মুখের কথা কাইড়া নিয়া শুরু করলেন আরেকটা চরিত্র উন্মোচন...বাঙ্গালিরা নাকি মারতে ভালোবাসে...এই মারা কইতে তিনি বুঝাইতে চাইলেনযে বাঙ্গালিরা চুরি কইরা বা অনুকরন কইরা চলতেই স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। তারা কখনো মৌলিক কোনকিছু করতে পারে না। একজন বিপনন কর্মী হিসাবে রাজীব চৌধুরীর আচরন আমার কাছে সেই পুরানা মানসিকতা ছাড়া আর কিছু মনে হইলো না। অনিশ্চিত বাজারের খুব সাধারন প্রবনতা হইলো বিদ্যমানতারে কেনাবেচা...কোন বিজ্ঞাপন যদি দর্শকের মনোযোগ আকর্ষণ করে তাইলে সেইটারে একটা মান ধইরা নেওনটা কেবল বাংলাদেশ না, যেকোন অনিশ্চিত বাজারের বৈশিষ্ট্য হইতে পারে।

যেই বাজারে ভোক্তার মানসিকতা অনির্ধারিত, যেইখানে ভোক্তার অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা এক্কেরেই অনির্ধারিত, সেইখানে বিপননে ক্যান রিস্ক ফ্যাক্টর নিবো ব্যবসায়িরা!? এক্কেরেই আর্থ-সামাজিকতা কেন্দ্রীক আচরনরে বাঙ্গালির আচরন বইলা এড়াইয়া যাওনটা বরং বাঙ্গালি মধ্যবিত্তের আচরনে পরিনত হইতেছে ইদানিং...এই প্রবণতার ফ্যাড়ে আটকাইয়া যাওয়া সুশীল মধ্যবিত্তরা আর তাই আজকাল নিজেরে জায়েজ করনের খেলায় নামা ছাড়া আর কিছু করতে পারে না...শেষ কৌশল... সব দোষ বাঙ্গালির...হায়রে বাঙালি জাতি! মুখাপেক্ষি থাকনের জ্বালাটা বড়ো জ্বালায় তোরে!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।