আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যেন বিভ্রান্ত না হই



নৃশংসতায় পিছিয়ে নেই সিরিয়ার বিদ্রোহীরাও শিরোনামে একটি খবর আজ কিছু কিছু অনলাইন এবং নিউজপেপারে দেখতে পেলাম। ছবিতে দেখা যাচ্ছে কয়েকজন লোককে পিছমোড়া করে হাত বেঁধে হাটুগেড়ে উপুড় করে বসিয়ে রাখা হয়েছে। এরা বাশার আল আসাদের যোদ্ধা বা অনুসারী। আর তাদের পেছনে বন্দুক তাক করে দাড়িয়ে আছে কিছু যুবক। এরা বাশার বিরোধী বিদ্রোহী সৈন্য।

খবরটিতে উল্লেখ করা হয়েছে তাদেরকে বিদ্রোহীরা নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করেছে এবং হত্যার দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। সে ভিডিও ফাঁস করেছে আরেক বিদ্রোহী সৈন্য যে এ নৃশংতার বিরোধী। আলজেরিয়ায় ইসলামিক স্যালভেশন ফ্রন্টের বিজয়ের পর তাদের ক্ষমতায় আসতে না দিয়ে সেনাবাহিনী যখন ১৯৯২ সালে জোর করে ক্ষমতা দখল করে নিল তখন ইসলামিক স্যালভেশন ফ্রন্টের অনেক কর্মী শসস্ত্র লড়াইয়ের পথ বেছে নেয়। তারা দীর্ঘকাল সেনা সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই পরিচালনা করে। তখন পশ্চিমা অপশ্চিমা অনেক গনমাধ্যমে বিদ্রোহীদের নামে সাধারন মানুষ হত্যার অনেক নৃশংতার খবর প্রচার হত।

পশ্চিমা অপশ্চিমা গনমাধ্যমে প্রচারিত সে খবরের সূত্র ধরে এবং বাছ বিচার না করে আমাদের দেশের অনেক সংবাদপত্রও সেসব খবর প্রচার করত তখন। পরে প্রমানিত হয়েছিল আলজেরিয়ার সেনাবাহিনীর লোকজনই নৃশংসভাবে সাধারন মানুষকে হত্যা করে তা ভিড়িওতে ধারন করে এবং ছবি তুলে বিদ্রোহীদের নামে ছড়িয়ে দিত। এর লক্ষ্য ছিল বিদ্রোহীদের প্রতি যেন সাধারন মানুষের ঘৃনার জন্ম হয় এবং তাদের সাথে যেন সাধারন মানুষ একাত্ম না হয় এবং গেরিলা যুদ্ধ যেন তীব্র আকারে ছড়িয়ে না পড়ে। বর্তমানে মিশরেও ব্রাদারহুডের বিরুদ্ধে গণমাধ্যমের নানা ধরনের প্রগান্ডা চলছে। সিরিয়ার বিদ্রোহীদের নামে যে খবরটি প্রচারিত হচ্ছে তার সত্য মিথ্যা কোন কিছুই আমি চ্যালেঞ্জ করছিনা।

আমার পরামর্শ এসব খবরের বিষয়ে সতকর্তা অবলম্বন করা উচিত। যদি ধরেও নেয়া হয় এটি বিদ্রোহীদের কাজ তবে পাল্টা প্রশ্ন তোলা যায় আসাদের অনুসারী সৈন্য এবং যোদ্ধারা এ ধরনের অসংখ্যা নৃশংতার জন্ম দিয়ে চলেছে প্রতিদিন । তার কয়টা নিয়ে তোলপাড় করা হচ্ছে? এক পক্ষের নৃশংতার কারনে আমি অন্য পক্ষের নৃশংতাকেও সমর্থন করিছনা। কোন পক্ষের নৃশংতাই কাম্য নয়। আমার অনুরোধ আমরা যেন বিভ্রান্ত না হই।

আসাদের বিরুদ্ধে সেদেশের মজলুম জনতা যেমন লড়াই করছে তেমনি সেখানে অনেক স্বার্থান্বেষী বিদেশী মহলের ইন্ধনেও অনেক আসাদ বিরোধী বিদ্রোহী গ্রুপ আছে। আবার বিদেশী কোন কোন মহলেও ইন্ধনে এবং প্রকাশ্য সমর্থনে আসাদের পক্ষেও অনেক বেসরকারি গ্রুপের জন্ম হয়েছে। অনেকে অনেক ধরনের কাজকর্ম সেখানে করে যাচ্ছে ঘোলা পানির মধ্যে। যারা সত্যিকার অর্থে মজলুম এবং দুরাচার অনাচার পাপাচারের শৃঙ্খল ভেঙ্গে ফেলতে চায় তারাও আজ সেখানে যুদ্ধে লিপ্ত। প্রায় সব যুদ্ধেরই দুটি পক্ষ থাকে।

একটি যুদ্ধ হল অন্যায় যুদ্ধ। আরেকটি যুদ্ধ থাকে সেটি হল ন্যায়ের যুদ্ধ। অনেক সময় প্রতিশোধও নির্মম হয়। কিন্তু তাকে প্রতিশোধ হিসেবে না দেখে এবং স্রেফ একটি ঘটনা হিসেবে বিবেচনা করলে অনেক সময় তাকে বর্বর মনে হয় আমরা যদি তার উল্টো পিঠের কথা ভুলে যাই। আমার অনুরোধ আমরা যেন বিভ্রান্ত না হই।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।