আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেন এত উগ্রতা......?

তরুণ ব্লগার ০১৭১৯২৩২০১২

কেরানীগঞ্জের কুনিহাটি গ্রমের ছেলে রফিক পুরু নাম রফিকুল ইসলাম, বয়স বরজোর ২৫ রিক্সা চালিয়ে কোন রকমে জীবিকা নির্বাহ করত সে। প্রতি দিনের মত সেদিনও সে চা খেতে বেরিয়ে ছিল বস্তির একটি চা স্টলে। পিছন থেকে আসে বস্তির সন্ত্রাস হিসেবে খ্যাত লুৎফুর,নুর,শিরুওহাসেম এক পা খুরা ছিল বলে একটু খুরিয়ে হাঁটত রফিক। পিছন থেকে লুৎফুর তাকে একটু সরে হাঁটতে বলে এবং রফিকও তা শুনে। কিন্তু ভুল ক্রমে রফিকের গেয়ের সাথে লুৎফুরের গায়ে একটু টাচ লেগে যায় আর এটাই রফিকের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়।

মৃত্যুর পরোয়ানা নিয়ে হাজির হয় লুৎফুর,নুর, শিরু ও হাসেম। প্রথমে তাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বস্তির পাশেই একটি খালে, তার পর তাকে চুবানো হয় পনিতে, দিশেহারা রফিকের আর্ত চিৎকারে বস্তির প্রতিটি ঘর থেকেই বেরিয়ে আসে নারী-পরুষ সবাই কিন্তু এসে কি হবে সবাই নীরব দর্শকের ভূমিকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারেনি। পানিতে চুবানোর পর উপর থেকে নিক্ষেপ করা হয় বড় বড় ইটের টুকরা। সুতরাং বাঁচার শেষ চেষ্টা টুকুও ব্যর্থ হয় রফিকের......? নিরীহ প্রকৃতির ছেলে রফিকের মৃত্যু সু-নিশ্চিত জেনে সে স্থান ত্যগ করে সন্ত্রাসীরা। বস্তিবাসী জানাই লুৎফুরের অন্যতম সহযোগী হাসেম ২০০৭সালের ২২ জানুয়ারি না হওয়া নির্বাচনে ঢাকা-৯ আসনে সতন্ত্র প্রর্থী ছিল।

প্রশ্ন হচ্ছে কি অপরাধ ছিল রফিকের..? ঠিক একই দিনে কাগজ কুরাতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরতে হল খিলগাঁও রেল গেটের পাশের তিলপাপরা বস্তির রিক্সা চালক হানিফ মিয়ার ৮ বছরের ছেলে রুবেলকে। প্রতিদিনের মত রুবেল ৪-৫ জন সঙ্গীসহ এখানে সেখানে কাগজ কুড়াতে কুড়াতে খিলগাঁও রেলগেটের পাশে মায়ের দোয়া হোটেলের সাথে আব্দুস সাত্তার নামক এক ফল বিক্রেতার দোকানের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। তাদের মধ্যে থেকে এক জন একটি জাম্বুরা নিয়ে চম্পট দেয়। কিন্তু সহজ সরল বালক রুবেল দৌড় দিয়ে পালাবার কোন চেষ্টাও করেনি..। কারন সে তো আর জাম্বুরা চুরি করেনি যে দৌড় দিয়ে পালাবে! কিন্তু ফল বিক্রেতা রুবেলকে ধরে প্রথমে কিল-ঘুষি আর লাথি মারতে থাকে ইচ্ছে মত।

যদিও রুবেল চিৎকার করে বলতে থাকে আমি চুরি করিনি আমি করিনি...! কিন্তু কে শুনে কার কথা...? রুবেল বাঁচার শেষ চেষ্টাটুকু করেও বাঁচতে পারেনি খুনি আব্দুস সাত্তারের ভয়াল থাবা থেকে। এবার অত্যাচারের মাত্রাটা বাড়িয়ে হাতের পরিবর্তে পাথরের আশ্রয় নেয়। রেল লিকের পাশে থাকা পাথর খন্ড দিয়ে আঘাত করতে থাকে মাথায়। কতরাতে কাতরাতে রুবেল এক সময় লুটিয়ে পরে মাটিতে .....। গরীব রিক্সা চালক হানিফ ছেলেকে বাঁচানোর শেষ চেষ্টাটুকু করেও ব্যর্থ হয়।

ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করার ঠিক আধাঘন্টা পর কাতরাতে কাতরাতে জীবনের শেষ প্রান্তে পৌঁছে যায় রুবেল। ঘটনা একটা মাত্র জাম্বুরা । মামলা করা হয়েছে খুনিদের বিরুদ্ধে। মামলা করেছে রফিকের ভাই শফিক রুবেলের বাবা হানিফ। আসামিরা পলাতক রয়েছে।

হয়তো বা তাদের ধরা হবে হয়তো বা ধরা যাবে না। কিন্তু যে হারিয়েছে সেই জানে কি হারিয়েছে.........! মানুষ কেন এত অসহনীয়? কেন এত উগ্র? বারবার প্রশ্ন জাগে মনে.................................?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।