আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আজকের দিন

ভালো লাগে জোছনা রাতে মেঘ হয়ে আকাশে ভাসতে.... :)

যখন এই ব্লগে যোগ দিয়েছিলাম, তখন ঠিক করেছিলাম রাজনীতি নিয়ে কিছু বলবনা। অবশ্য এখনও কিছু বলার জন্য লিখছিনা। আজকের দিনে পৃথিবীতে অনেক কিছু ঘটেছে। অনেকের অনেক সুখের স্মৃতি, অনেকের রয়েছে অনেক দু:খের স্মৃতি। আমি কারও সুখ দু:খ নিয়েও কিছু লিখছিনা।

আজকের দিনটি জাতিগত কারণে হয়তো আমাদের অনেকের কাছে একটি বিশেষ দিন। কারণ এ দিনে একজন বিশেষ মানুষ শহীদ হয়েছিলেন। মাথায় কি কোন উত্তর এসেছে কে মারা গিয়েছিলেন আজকের দিনে? এই বিশেষ লোকটি-র মারা যাওয়ার ঘটনা আমি যখন পড়েছিলাম, তখন মন ব্যাকুল হয়েছিল। এরা কেন মারা যায়? এদের কেন মারা যেতে হয়? কোন পুরষ্কার দিয়ে আমরা তাদেরকে কি আমাদের মাঝে চিরদিনের জন্য রেখে দিতে পারি? কোন সান্ত্বনা দিয়ে এই মানুষটির আপনজন-দের মন ভরানো যায়? সেই আত্মীয়রা এখন কেমন আছে? কোথায় আছে? কিভাবে আছে? একবার-এর জন্যও ভাবতে ইচ্ছা হয়। কে এই লোক? এখনও যদি বলতে না পারেন, তাহলে একটু পরেই বলি।

আজকে ব্লগে ঢুকেই দেখতে পেলাম রীতিমত যুদ্ধক্ষেত্র। একজনের মাথা আরেকজন চিবাচ্ছে। প্রতিদিনের মত কিছু বিরক্ত আর কিছু কৌতুহল নিয়ে কিছু পোস্ট পড়ছিলাম। হুট করে তার মধ্য থেকে একটি পোস্ট যেন মাথা উচিয়ে ছিল। এত বড় ব্লগেও হারিয়ে যায়নি।

কেমন যেন চন্চল হয়ে উঠল মন। পোস্টটি ছিল একজন মৃত মানুষকে নিয়ে। সেই মানুষটি আমাদের মধ্যে আর নেই; হয়ত আকাশ থেকে আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে অনেক আশা নিয়ে। কখনও কখনও আমাদের কান্ড দেখে হয়ত একটু দীর্ঘশ্বাস ছাড়েন। কিন্তু এখনও হতাশ হননা।

হতাশ উনি হবেন কিভাবে? এখনও তো সেই আঠার বছর বয়সেই আটকে আছেন উনি। কবি সুকান্তর ভাষায় তাই: আঠারো বছর বয়সের নেই ভয় পদাঘাতে চায় ভাঙতে পাথর বাধা, এ বয়সে কেউ মাথা নোয়াবার নয়- আঠারো বছর বয়স জানে না কাঁদা। লোকটি না বলে তাকে তাই আমি ছেলেটি বলব। ছেলেটি মারা গেছেন অবশ্য অনেক আগে। তাই কেউ যদি সাম্প্রতিক সময়ে মারা যাওয়া কাউকে ভেবে থাকেন তাহলে তাকে দু:খিত বলা ছাড়া আমার কিছু বলার নাই।

দু:খ-টা কিন্তু আমার নিজের জন্য নয়- যে সেরকম ভাবলেন তাকে নিয়ে। যাই হোক। আমার বিশেষ ছেলেটির মারা যাওয়ার কথা পড়েছিলাম আমি যখন অনেক ছোট ছিলাম। তখন আবেগ অনেক বেশী ছিল। এখন অনেক খানি কমে গেছে (অনেকে বলে একবারেই নেই)।

তারপরেও আমার অনেক খারাপ লাগছে। তার মৃত্যু জন্য নয়। আমার নিজের জন্য। আমি কিভাবে এই মানুষটি যে আমার ছোটবেলার "আইডল" ছিল; যার মত আমি হতে চেতাম, তাকে বেমালুম ভুলে বসে আছি? নিজেকে কুকুর-এর চেয়েও নীচ মনে হচ্ছে। ছেলেটি মারা যাওয়ার পর ৩৬ বছর দেশের মাটি পায়নি।

দেশে কত রাজনীতি হল, কত রাজা আসল, কত প্রজা মরল। কত লোক আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হল, কত লোক না খেয়ে মারা গেল। আমাদের দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদ-দের সামান্য চিকিৎসার জন্য কত বার-ই না দেশের বাইরে পৃথিবীর উল্টা পাশে যেতে হল। কিন্তু এই ছেলেটি যে দেশের কয়েকশ মাইলের মধ্যেই ছিল, তাকে আনার মত সামর্থ্য দেশের ছিলনা। থাকবে কি করে? এ দেশের আসলে সেই যোগ্যতা ছিলনা, তার নিজের বীর সন্তানদের বরণ করে নেয়ার।

ব্লগে ঢুকে মনে হল আজও হয়ত এই দেশটির সেই যোগ্যতা হয়নি। আমি বীরশ্রেষ্ঠ হামিদুর রহমান-এর কথা বলছি। (মূল ব্লগটি এখানে . ধন্যবাদ বিষাক্ত মানুষ-কে। আমাদের মন আপনার চেয়েও বিষাক্ত - এই সত্যটি আবার মনে করিয়ে দেয়ার জন্য । ) বি: দ্র: ৩৬ বছর পরে তিনি হয়তো ফিরে এসেছেন।

আজকে তার এদেশে ফিরে আসার প্রথম বর্ষপূর্তি। যদিও অভিনন্দন-এর ভাষা আমার জানা নেই- তারপরেও হামিদুরকে অভিনন্দন। আমি ধার্মিক নই। কিন্তু স্মৃষ্টিকর্তা বলে কেউ থাকলে তিনি যেন তার আত্মাকে শান্তিতে রাখেন। আমেন।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।