আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামহোয়ার ইন ব্লগ - অ্যানজেলিয়া (৫৬)



বাবার মৃত্যুর দেড়মাস পর শুভ আজ অনুভব করলো অভিবাবকহীনতার কথা। শুয়ে শুয়েই ও চিন্তা করল বাবার শেয কথাটা - " খোকা তোর মাকে তুই খুন করিসনে, তাকে এ বাড়ীতে জায়গা দিস। রক্তের বন্ধন তোর তার সাথেই আছে। " শুভ ভীযনভাবেই বিশ্বাস করে বাবার মৃত্যুর পরে এ দেড় মাস ও নেমীর জন্যই বেচে আছে। এর মধ্যেই নেমী ওকে বলেছে সম্পত্তি উইলের কথা, উকিলকে বলেছে রিউইল করার জন্য শুভর নামে।

শুভ বলেছে - বাবা যা দিয়েছে তা কোন মতেই ও ফিরিয়ে নেবে না। ও আর ক'দিন বাচবে তবুও ওর ইচ্ছে হয় নেমীকে বলে - যে কয়দিন বেচে আছি আমার পাশে থাকো - আমি একটা সন্তানের বাবা হতে চাই। এ ক দিন নেমীকে আদর করতে গিয়ে ওর যে কি কস্ট হয়েছে। একদিন মাত্র সে নেমীকে সম্পুর্ন নিয়েছে। প্রথম দিনের সেই ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা ওর আজো মনে পড়ে।

শুভর নিজেই জ্বলছে নিজের অন্তদহনে। আগে ও নিজেই নেমীকে বলেছে - বিয়ে হবে না আর এখন ভাবছে কি করে বলি- চলো বউ হয়ে এসো। ও যদি ভাবে সম্পত্তির জন্য আমি বিয়ে করতে চাচ্ছি। কত ছোট হয়ে হয়ে যাবে ও নেমীর কাছে। কিন্ত মন বলছে খুনের আগে আর একবার হলেও নেমীর সম্পুর্নতা চাই।

এই ভাবতেই একটা ফোন এলো - হ্যালো শুভ স্পিকিং - আমি তামান্না বলছি। এক্ষুনি একটু বাসায় আসবে ? মা তোমার জন্য অপেক্ষা করছে। - ঠিক আছে আসছি বলে শুভ ফোন ছেড়ে দিল। শুভ শার্ট প্যন্ট পরতে পরতেই ভাবল - এই আরেকটা দায় শোধ করে আসবে আজ। মৃত্যুর আগে কোন দেনা না থাকাই ভাল।

বাসায় তামান্নাই দরজা খুলে শুভকে স্বাগতম জানালো- ড্রইং রুমে বসা তামান্নার আম্মাকে সালাম দিল। ভদ্রমহিলা সালামের উত্তর দিয়ে শুভকে বসতে বলে কি যেন একটা হাতের কাজ করতে লাগল চুপ করেই। শুভ তাকিয়ে দেখল অপুর্ব সেজেছে মহিলা। রুচি বোধ আছে। অবিকল একই রকম।

মা এবং মেয়ে একই জায়গায় দাড়ালে উঠতি বয়সের ছেলেরা মাকেই পছন্দ করবে। তামান্নার একদিনের কথা ওর মনে পড়ে গেল। ভার্সিটিতে ও একদিন বলেছিল- জানো শুভ - ভার্সিটির অনেক মেয়েদের চাইতেও মা ইয়ং। মা প্রতিদিন ব্যয়াম করে , পারলারে যায়। মা- ই বলে উনি নাকি ক্লাবের সবচেয়ে সুন্দরী মহিলা।

আমি আর মা একসাথে বাইরে বেরোই না। একদিন সংসদ ভবনের সামনে ঘুরতে গিয়ে কয়েকটা ছেলে মার পিছে লেগেছিল। একটাতো সামনে এসে চোখ টিপলে আমি আর মা তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরে যাই। মাকে বলেছি এভাবে সেজে তুমি আর বাইরে যেয়ো না। শুভর ইচ্ছে ছিল খানিক্ষন সবার সাথে গল্প করে ফিরে আসবে।

তামান্না চা নিয়ে এসে শুভর পাশে বসল। এবারে ভদ্রমহিলা সোফা থেকে উঠে বললেন- বাবা তোমরা গল্প করো - আমি একটু বাইরে যাচ্ছি - ঘন্টা দুয়েকের মধ্যেই ফিরব। ওর মা চলে যেতেই শুভ তামান্নকে প্রশ্ন করল- তোমাদের বাসায় আর কে কে আছে ? দুস্টু চোখে একটু হেসে দিয়ে তামান্না বলল- ডোন্ট ওরি শুভ । এখন তুমি আর আমি। আর একটু পরে শুধু আমাতে তু মি - ই - তামান্নাকে আর কথা বলার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত শুভ উঠে বলল- তামান্না আসি পরে আর একদিন আসব।

গাড়ী স্ট্রাট দিয়ে শুভ চিন্তা করল- কি অপুর্ব । আধুনিক ব্যবস্হা - সুস্হ মস্তিস্কে মা তার সন্তানকে সুযোগ করে দিল। - চলবে

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।