আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

'বিগ ব্যাং' পরীক্ষা শুরু [বিডিনিউজ২৪ থেকে কপি করা]

বাংলাদেশ ব্লগারস এসোসিয়েশন সদস্য নং: ১০ । facebook.com/milton3d

মহাবিশ্ব এবং এর উৎপত্তি সর্ম্পকে জানতে বিগ ব্যাং বা মহাবিস্ফোরণ তত্ত্বের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত প্রায়োগিক পরীক্ষা শুরু হয়েছে বুধবার বাংলাদেশ সময় ২টায়। সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় সুইজারল্যান্ড-ফ্রান্স সীমান্তে ভূ-গর্ভে ২৭ কিলোমিটারের একটি বৃত্তাকার টানেলে ইতিহাসের সবচেয়ে বড় এ পরীক্ষা চালাচ্ছে গবেষণা প্রতিষ্ঠান 'ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার রিসার্চ'(সার্ন)। বিগ ব্যাং এর একেবারে শুরুর মুহূর্তগুলোয় কী কী ঘটেছিল তা জানতে বিজ্ঞানীরা সার্নের পরীক্ষার প্রধান যন্ত্র 'লার্জ হাড্রন কোলাইডার' (এলএইচসি) মেশিনের ভেতরে আলোর গতির কাছাকাছি গতিতে বিপরীত দিক থেকে দুটি প্রোটন কণা রশ্মির সংঘর্ষ ঘটানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন। তবে এ পরীক্ষার কারণে সেখানে ব্ল্যাক হোল তৈরি হয়ে আমাদের পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যেতে পারে বলে যে গুজব রটেছে তা নাকচ করে দিয়েছেন স্টিফেন হকিংসহ এ পরীক্ষার সঙ্গে জড়িত বিজ্ঞানীরা।

এদিকে, এ পরীক্ষায় 'হিগস বোসন' বা কথিত 'ঈশ্বর কণার' সন্ধান মিলবে না বলে ১০০ ডলারের বাজি ধরেছেন হকিং। স্কটল্যান্ডের পদার্থবিজ্ঞানী পিটার হিগস এর নামে নামকরণ করা হয় এখনো অনাবি®কৃত কণাটির। তিনি ১৯৬৪ সালে শক্তি হিসাবে এমন এরূপ একটি কণার ধারণা দেন যা বস্তুর ভর সৃষ্টি করে করে। আর যার ফলে সম্ভব হয় এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির। এ পরীক্ষার প্রেক্ষিতে তিনি নোবেল পুরস্কার পেতে পারেন বলে আশা করেছেন স্টিফেন হকিং।

এ বিষয়ে বিবিসিকে হকিং বলেন, "আমি মনে করি, এলএইচসিতে ছোট ছোট ব্ল্যাক হোল তৈরি হলে এবং সেখান থেকে রশ্মি নির্গত হওয়ার বিষয়ে আমি যে তত্ত্ব দিয়েছি তা প্রমাণিত হলে আমার নোবেল পুরস্কার পাওয়ার বিষয়ে কোনো সন্দেহ থাকবে না। " তবে এলইচসির ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণ বিবর ক্ষমতা সম্পর্কে প্রায় কোনো আস্থাই নেই হকিংয়ের। প্রসঙ্গত, কোনো তত্ত্ব পরীক্ষাগারে প্রমাণিত হলেই কেবল পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। আর ব্ল্যাক হোল থেকে রশ্মি নির্গত হওয়ার বিষয়ে হকিংয়ের মতবাদ অনেকে গ্রহণ করলেও আজো তা প্রমাণিত হয়নি। সার্নের প্রধান ফরাসি পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট আয়মার জানিয়েছেন, ৬ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউরোর এ প্রকল্প সফল হলে এর মাধ্যমে মানব সভ্যতা অনেক দূর এগিয়ে যাবে।

এ সম্পর্র্কে ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী ব্রায়ান কক্স বলেছেন, "পরীক্ষায় আমরা যা আশা করছি তার কিছু কিছু না ঘটলে বা আমাদের অজানা কিছু দেখা গেলে তা হবে আরও বেশি উদ্দীপনার। কারণ, আমরা প্রকৃতি সম্পর্কে যা ধারণা করি তার চেয়ে কম বুঝি। " ইউনিভার্সিটি অফ মিশিগান এর জেরার্ডাস টি'হুফট বলেন, "আমি অপ্রত্যাশিত কিছু দেখার আশা করছি। " তিনি সম্ভবত এ পরীক্ষার প্রধান যন্ত্র এলএইচসি মেশিনের কথা উল্লেখ করে বলেন, "মেশিনটি আমাদের এমন সব জিনিস দেখাতে পারে যার অস্তিত্ব সম্পর্কে আমরা জানি না। " বিজ্ঞানীদের মতে প্রায় ১৫ বিলিয়ন বছর আগে ছোট্ট একটি মুদ্রার মতো বস্তুর ওই মহাবিস্ফোরণে (বিগ ব্যাং) গঠিত হয় মহাবিশ্বের সব গ্রহ-নক্ষত্র।

তারই ধারাবাহিকতায় আমাদের পৃথিবীতে বিকাশ হয় প্রাণের। পদার্থবিজ্ঞান এবং মহাবিশ্বের সুপারসিমেট্রি, কৃষ্ণবস্তু ও কৃষ্ণশক্তির মতো অন্যান্য বিষয়ের রহস্য জানাও এ গবেষণার লক্ষ্য। জ্যোতির্র্বিদদের ধারণা, ছায়াপথ, গ্যাস, নক্ষত্র ও পৃথিবীর মতো জিনিসগুলো মহাবিশ্বের মাত্র চার শতাংশ। আর বাকি ২৩ শতাংশ হচ্ছে কৃষ্ণবস্তু এবং ৭৩ শতাংশ হচ্ছে কৃষ্ণশক্তি। বিজ্ঞানীরা আশা করছেন, এলএইচসি'র এ পরীক্ষায় মহাবিশ্বের এই বিস্ময়কর "বিষয়ের" প্রকৃতি সম্পর্কে অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।