সুন্দর সমর
আমাগো পতাকাটা ফিরায়া দ্যান
বুড়া আবু তোরাব বলল কাশতে কাশতে
পিঠে গুলির দাগ,
বেয়নেটের ঘাই খেয়েছিল গালের কাছে তার চিহ্ন রয়ে গেছে
সদরুল শ্যাখ এই পতাকার জন্য জানটা শুক্রবারের মসজিদের বাতাসার মত
উড়ায়া দেয় নাই,
শালার সদরুল বাঘের বাচ্চা আছিল, রাইতের বেলা নদী সাতরাইয়া মাইন বসাইয়া
ফেরার সময় গুলিতে পানির নিচে তলাইয়া গেছিল
ওর মাথায় বান্ধা আছিল পতাকা,
যুদ্ধে যাওয়ার দুই মাস আগে বিয়া করছিল ওর সেই বউটা যুদ্ধের পর কোথায় গেছে
জানেনা আবু তোরাব।
হামিদ সওদাগর নিজের ঘরের উপর রাইত দিন যে ওই পতাকা উড়াইয়া রাখত
কইত আহ দ্যাহেন তো কি আসচাইয্য জিনিস, চারইপাশে সবুজ আর মাঝ খানে বাংলাদেশের ম্যাপ
মনে হয় সবুজ মা জড়াইয়া বুকের মধ্যে ভইর্যা রাখছে নিজের পোলাডারে!
সৈন্য আসতাছে পালাও
গ্রামের সবাই ভাইগ্যা গ্যালেও হামিদ সওদাগর ভাগল না,
আরে সমুন্দির মউত তো আইব এ্যাকদিন,
আমার পতাকা থুইয়্যা কুত্তার মত ভাগুব ক্যান,
হামিদ সওদাগর মরল পতাকা জড়াইয়া ধইর্যা ই
ওর ভিটা-বাড়িতে আগে ঘু ঘু চরত
পরে ওই খানে বইছিল রক্ষী বাহিনীর ঘাঁটি
এই রকম রক্ত দিয়া বাননো গপ্প আরও ল্যাখা আছে
মাঠে-ময়দানে সারা দ্যাশ জু্ইর্যাছ
অথচ কি আক্কেল হেই পতাকা বদলাইয়া ফেলল আমাগো একবার
কেউ জিজ্ঞাসা করল না?
এমনি দ্যাশ,
বাপের সম্পত্তি আর কি!
হুউড়ের জমিদারি!!!
না এই পতাকার জন্য যুদ্ধ করি নাই,
কাশতে কাশতে কথা জড়িয়ে যাচ্ছে
বুড়া আবু তোরাবের।
দম নিল থামল তারপর আবার শরীরের সর্বশক্তি দিয়ে বলল,
আমাগো পতাকাটা ফিরায়া দ্যান, রক্তের পতাকা। মরার আগে আরেকবার উড়ামু ওইডারে!
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।