আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরব ডায়েরি-৪২ (অভিশপ্ত সামূদ জাতির দেশে-২)

... ১ম পর্ব মদীনার পথে .. জানুয়ারির ১৬ তারিখ বিকালে মদীনার পথে রওনা হলাম। ১ সপ্তাহের ট্যুর। সেমিস্টার ব্রেকে সবাই মক্কা, মদীনা যাচ্ছে। আমদের কাফেলা’র এজেন্সি হতে ২০ এর অধিক বাস ছেড়ে গেল। আমাদের বাসে আমরা সবাই পরিচিত, কিছু মিশরি ফ্যামিলিও ছিল।

বেশ ভালোভাবেই ১৭ তারিখ বৃহঃবার সকালে মদীনা পৌছে যাই। এজেন্সি অনেক ভালো হোটেলের ব্যবস্থা করেছে। আমি, সাঈদ ও মিলন ফ্যামিলি পাশাপাশি রুমে পড়েছি। মদীনা আসলেই মনটা ভালো হয়ে যায়। মসজিদে নববী ও তার আশেপাশ অনেক প্ল্যান করে সাজানো।

মূল চত্ত্বর অনেক প্রসস্থ ও খোলামেলা। মক্কার চেয়ে ভালো লাগে। কাবা শরীফ এখন আরো প্রসস্থ হচ্ছে, কাজ এগিয়ে চলছে। আমরা একসাথে বাংলাদেশি রেস্টুরেন্টে খেতে যেতাম, খেয়ে ফিরতে ফিরতে আরেকটি নামাজের সময় হয়ে যেত। কি যে প্রশান্তি! মক্কা ও মদীনা এলে অন্যরকম একটা ভালোলাগা কাজ করে, মাথায় সাংসারিক কোন চিন্তা থাকে না, কোন ধরনের দূর্ভাবনা কাজ করেনা।

এ অন্যরকম এক জগত। আমরা বেশ কয়েকবার হজরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর রওজা জিয়ারত করলাম, জান্নাতুল বাকী জিয়ারত করলাম। “মাদায়েন সালেহ” যাবার জন্য আমরা বাংলাদেশি ড্রাইভার খুঁজছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশি ড্রাইভারদের বড় গাড়ী নেই। সৌদি ড্রাইভার পাওয়া যায়, কিন্তু তাদের উপর আস্থা রাখতে পারছিলাম না।

বৃহঃবার রাতে এবং শুক্রবার সকালে বাংলাদেশি ড্রাইভারের জন্য অনেক চেষ্টা চালালাম। লাভ হলোনা। সাঈদ চিন্তিত হয়ে পড়ল। সে অনেক চেষ্টা করল। শেষ পর্যন্ত যা থাকে কপালে, সৌদি ড্রাইভার খুঁজলাম।

এক সৌদি ড্রাইভার জানালো সে যাবে, ১০০০ রিয়াল লাগবে। কিন্তু সে জায়গা ঠিকমতো চিনেনা। তাকে বাদ দিলাম। সৌদিদের সাথে কথাবার্তা সাঈদ চালালো, তার মাদ্রাসা ব্যাকগ্রাউন্ড ছিল। টুকটাক আরবী বুঝে এবং এখানে এসে শিখছেও দ্রুত।

ভাঙ্গা ভাঙ্গা আরবীতে সাঈদ যেভাবে কাজ চালালো তা দেখার মতো। আরেক সৌদি পেলাম, সে নাকি “মাদায়েন সালেহ” ৫ বার ঘুরে এসেছে । কথাবার্তায় অনেক ভদ্র আর আন্তরিক মনে হলো। সে গাইড হিসাবেও কাজ করতে পারবে। তাকে আমরা সারাদিনের জন্য ১৩০০ রিয়ালে ঠিক করে ফেললাম।

আমি তাকে আমাদের হোটেলের কার্ড ধরিয়ে দিলাম। তাকে শনিবার ভোর ৩টায় আমাদের হোটেলে আসতে হবে। মনে মনে ভাবলাম, ‘আসবে তো? না আসলে আমাদের ট্যুরটা এবারের মতো মাঠে মারা যাবে। ’ ড্রাইভারকে জিজ্ঞাসা করলাম, ‘তোমার নামকি?’ - আবু ফয়সাল (ফয়সালের বাবা) - আরে তুমি ফয়সালের বাবা, তাতে আমাদের কি? তোমার নাম বলো - আলী শরীফ ওকে আলী শরীফ তুমি মানে মানে করে রাত ৩টায় হোটেলে চলে এস। ওর সাথে ডিল শেষ করে আমরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।

যাওয়া যাবে তাহলে। রাতে সাঈদ গুগুল ট্রান্সলেট ব্যবহার করে আলী শরীফকে SMS পাঠালো যাতে সে ঠিকমতো পৌছে যায়। আলী শরীফ তো অবাক। পরে আমাদের সাথে শেয়ার করেছে। সে ভেবে পায়নি, যে লোক ঠিকমতো আরবী বলতে পারেনা, সে এত শুদ্ধ SMS লেখে কিভাবে? (চলবে... মূল পর্ব আগামীতে)  ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।