আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একর ভিতর পাঁচঃ ..............................................

যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই । কাদঁতে আসিনি ফাসিঁ দাবী নিয়ে এসেছি ।

১. অনেকদিন ব্লগ লিখি না । লিখি না মানে হচ্ছে শাব্দি অর্থেও ব্লগ আর কি । আর যা লিখি (শব্দটা বোধহয় লেখা ঠিক হচ্ছে না ।

শৈশব থেকেই লেখালেখি শব্দটা অন্যভাবে চিনেছি । লেখালেখি করেন লেখক মানুষ । আমি লিখি না বলা যায় কি-বোর্ড চাপি। ) কিংবা কি-বোর্ড চেপে টাইপ করি তা বলা যায় বেহুদা প্যাচাল । কিন্তু ব্লগের শাব্দিক অর্থে দিনপঞ্জী লেখা হয় না ।

শৈশব থেকে ডায়েরি লিখতাম । বাঙালি মাত্রই যেমন কবি ঠিক তেমনি হয়তো খুব কম মানুষই আছেন যে দু-চারবার ডায়েরি লেখেনি । আনা ফ্রাংকের ডায়েরী পড়ে খুব মিস করতাম কেন যুদ্ধ বাধে না , লুকিয়ে লুকিয়ে ডায়েরী লিখব বলে । হায়রে সেই শৈশব আর সেই শৈশব এর স্বপ্ন । আসলেই মানুষ খুবই বিচিত্র ।

২. ডায়েরি প্রসঙগ আসতেই মনে পড়ে গেল আরেক জিনিস । "জীবনের লক্ষ্য" । আমরা বিশেষ করে বাঙালিরা বোধহয় ইশ্বরের এক অদ্ভুত সৃষ্টি । জন্মের পর একটা শিশু যখনও ভালো করে কথাই শেখে না তখনই আমরা তাকে শেখাই, তুমি বড় হয়ে কি হবে ?? ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার নাকি পাইলট । আমাদের শৈশবের সবচেয়ে নামি-দামী স্বপ্ন ছিল এই তিন জিনিস ।

আচ্ছা (হঠাৎ জানতে ইচ্ছে করছে) এখনকার বাবা-মারা তাদের শিশুর মুখে বোল দিয়ে কি বানানোর স্বপ্নে ?? নিশ্চয়ই কম্পু ইনজ্ঞি নাকি আর্মি-মন্ত্রী । নাকি স্রেফ আমেরিকার নাগরিক ?? আমরা জীবনের লক্ষ্য কোন লক্ষ্য নির্ধারণ না করেই জীবনের লক্ষ্য মুখুস্থ করি । আর লক্ষ্য নিধারণ করেই বা লাভ কি কেননা আমাদের জীবনের লক্ষ্য নির্ধারণের দায়িত্ব তো বিধাতার । নইলে ষোল কোটি মানুষের বোঝাই ডিংগি কি করে এখন ভেসে থাকে ?? আমরা তো চোখ বন্ধ করে ডিংগিতে বসে পড়ি । ইশ্বর আমাদের না ঘাটে নামিয়ে দেয় ।

আর আমাদের পিতা-মাতার সব অতৃপ্ত বাসনার ভূত চেপে বসে আমাদের কাধে । আমরা একাধারে ডাক্তার, ইজ্ঞিনিয়ার, গায়ক-নায়ক থেকে শুরু করে সবই হবার বাসনায় বড় হতে থাকি । স্কুলের ফাস্ট যেমন হওয়া চাই তেমনি শচীনের মতোন ব্যাটসম্যান আর ম্যারোদনার মতন ফুটবলার ও আমাদের হওয়া চাই । তাই আমরা হয়ে উঠি সবজান্তা শমসের । ৩. একবার একটি আন্তর্জাতিক উৎসবে আমি অংশ নিয়েছিলাম ।

বিশ্বের ৯০ টি দেশের থেকে অংশগ্রহনকারীরা এসেছিল । আমি হলফ করে বলতে পারি শতকরা ৯৫ শতাংশ দেশের ভৌগলিক অবস্থান আমার জানা ছিল । অন্ততঃ কোন মহাদেশের দেশ সেটা বলতে পারব । কিন্তু যখন দেখি চীন, তাইওয়ান কিংবা হংকং এর মানুষ বাংলাদেশ এর নাম জানেনা তখন কষ্ট পাই কিন্তু আশ্চর্য হইনা । কিন্তু যখন দেখি এই দেশের মানুষেরা এমন কি ব্রাজিল কিংবা কিউবা কোথায় জানে না কখন বিস্মিত হয়ে যাই !!! মনে মনে বলি হালারা কোনদিন ভুগোলে পাশ করত না ।

জিন্দেগীতে এসএসসি সার্টিফিকেট জুটত না । মনে মনে গর্ব করি , এখন কইলে ফ্রি হ্যান্ড এ দশ-বারোটা দেশের মানচিত্র আকায়া দিতে পারমু । কিন্তু যখন দেখি বেশির ভাগ দেশের শিশুরাই আমাদের মতন ভুগোল পড়েনা, তখন নিজের মনেই প্রশ্ন জাগে আফ্রিকার কৃষিজ পণ্যের নাম জেনে আমার লাভ কি ?? লাতিন আম্রিকার খনিজ সম্পদের ম্যাপ আকাইলে কি আমারে খনিজ সম্পদ এর ভাগ দিবো ??? নিজেরে ব্যাকল মনেহয় । আসলেই আমরা ঘর থুইয়া বাহির লইয়া ব্যস্ত, আসল কাম রাইখ্যা নকল কামের ওস্তাদ । আসল কামের সময় ষোল আনাই ঠন-ঠনা ।

অর্থ শূন্য !! ৪. যদি প্রশ্ন করি কি করলে বাংলাদেশ সমৃদ্ধশীল দেশ হবে । জানি সবাই একবাক্যে বলবেন চাই সৎ দেশপ্রেমিক মানুষ । দুর্নীতি মুক্ত হলেই আমাদের উন্নয়ন সম্ভব । কিন্তু আমরা শুধু জানি কিন্তু পারব না আগামীকাল থেকে নিজেই সৎ দেশপ্রেমিক হতে কিংবা দুর্নীতি মুক্ত থাকতে । যতি আপনাকে প্রশ্ন করি আপনি কি দুর্নীতি মুক্ত?? শতকরা ৯০ জন মানুষ বলবে হ্যা কিন্তু আমরা কি শতকরা ৯০ জন মানুষ দুর্নীতি মুক্ত ?? তবে তো দেশে এতো দুর্নীতি হতো না ।

দেশের বেশীর ভাগ মানুষই কোন না কোন ভাবে দুর্নীতিতে যুক্ত । যে স্বল্প সংখ্যক মানুষ দুর্নীতি মুক্ত তাদের মধ্যে বেশীর ভাগ মানুষই দুর্নীতি করার সুযোগের অভাবে সৎ !! এবং আমরা মানি কিংবা নাই মানি বিষয়ই কিন্তু সত্য । ৫. আসলে গোড়ায় গলদ । এই দেখুন না, আমিও যেমন জানি গোড়ায় গলদ । এই বেশী জানা মানুষের দরকার নাই ।

দরকার কম জানা কিন্তু বেশী বোঝে এমন মানুষের । সরদার ফজলুল করিম স্যারের একটি উক্তি দিয়ে শেষ করি । স্যার তার কোন একলেখায় এমন বলেছিলেন যে, আমাদের দেশের সমস্যা একটাই । আমরা এদেশের মানুষ নিজের কাজটা ছাড়া অন্যসব কাজের কাজী । স্রেফ প্রতিটি মানুষ যদি শুধু তার নিজের কাজটাই সুষ্ঠুভাবে করে তবে আর কোন কিছুর প্রয়োজন নেই ।

যেমন ডাক্তার রুগূর সেবা বাদ দিয়েই রোগবালাই নিয়ে ব্যবসা করতে ব্যস্ত, রাজনীতিবিদরা রাজনীতিবাদ দিয়ে অন্যকাজে ব্যস্ত । কিংবা যেমন আমি আক্ষরিক অর্থে ব্লগ লেখা শুরু করতে গিয়ে দিয়ে দিলাম নীতি কথার বুলি ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।