আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারই গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছে

আমাদের অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে কথা বলতে খুব পছন্দ করেন। কিন্তু তার বেশিরভাগ কথারই কোনো মূল্য নেই। বরং তিনি গ্রামীণ ব্যাংক সম্পর্কে বেফাঁস মন্তব্য করে অহেতুক বিতর্ক সৃষ্টি করেন। তার বেফাঁস ও অর্থহীন মন্তব্য পুরো সরকারকেই বিব্রত করে। দেশব্যাপী আওয়ামী লীগের সমর্থকরাও এতে অস্বস্তি বোধ করেন।

কারণ 'গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. মুহাম্মদ ইউনূস' ইস্যুটি এখন দেশব্যাপী প্রায় সব মহলে আলোচিত। দেশের বেশিরভাগ মানুষ গ্রামীণ ও ড. ইউনূস ইস্যুতে সরকারের অবস্থানকে সমর্থন করেন না। (সংবাদপত্রের জরিপ দ্রষ্টব্য)সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী এ এম এ মুহিত বলেছেন, 'গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা, নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস নিজেই গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছেন। ড. ইউনূস বলেন, সরকার গ্রামীণ ব্যাংক অধিগ্রহণ করেছে। সরকার নয়, তিনিই এটা দখল করে বসে আছেন নিজের ব্যবসার প্রয়োজনে।

গ্রামীণ ব্যাংককে তিনি কোনো কাজ করতে দেবেন না। ' অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, 'ইউনূস সাহেব যা কিছু করছেন ব্যাংকটাকে ধ্বংস করার সব ব্যবস্থা করে গেছেন। তিনি এটি দখল করে রেখেছেন। যাতে এটি চলতে না পারে। তার (ইউনূস) ভাবনা, তাকে ছাড়া এটি চলবে না।

'গ্রামীণ ব্যাংকের এমডি নিয়োগ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, 'মামলা করে সার্চ কমিটির কার্যক্রম ইউনূস সাহেব আটকে রেখেছেন, তিনি কাউকে এমডি হতে দেবেন না। তিনিই এমডি নিয়োগ দেবেন, যাকে পছন্দ করেন। ' (যুগান্তর, ২৪ জানুয়ারি-২০১৩)গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস সম্পর্কে অর্থমন্ত্রীর এসব লাগামহীন কথা সম্পর্কে আলোচনা করা দরকার। একজন দায়িত্বশীল মন্ত্রী হয়ে মুহিত গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস সম্পর্কে তথ্য প্রমাণহীন যে অবমাননাকর মন্তব্য দিনের পর দিন করে যাচ্ছেন তার বিচার কি কোনোদিন হবে না? তিনি কি এভাবেই পার পেয়ে যাবেন? তাকে কোথাও কি জবাবদিহি করতে হবে না? তিনি যখন মন্ত্রী থাকবেন না, তখন সুধী মহলে কোন মুখ নিয়ে আসবেন? সভ্য ও সজ্জন মানুষ কি তার এসব অবমাননাকর উক্তি ভুলে যাবেন? মনে হয় অর্থমন্ত্রী তার আগামী দিনগুলোর (মন্ত্রী পদ ছাড়া) কথা একেবারেই ভাবেন না। সবাই জানেন, ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা।

১৯৭৬ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংলগ্ন জোবরা গ্রাম থেকে তিনি একটি পরীক্ষামূলক প্রকল্প হিসেবে এর সূচনা করেন। আজ এই ব্যাংক বাংলাদেশে বিশাল একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে প্রতিষ্ঠিত। এই ব্যাংক নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছে। প্রায় ৯০ লাখ গরিব মহিলা এর সদস্য। যদিও গ্রামীণ ব্যাংকের সহায়তা পেয়ে অনেক মহিলা ও তাদের পরিবার এখন আর দরিদ্র নন।

ড. ইউনূসের হাতে গড়া, তার ৩০ বছরের পরিশ্রমের ফসল তিনি ধ্বংস করে দিচ্ছেন? অর্থমন্ত্রী এটাই বলতে চান?বাংলাদেশে ব্যক্তি উদ্যোগে প্রতিষ্ঠান গড়ার দৃষ্টান্ত খুবই কম। রাজনীতিবিদরা কোনো প্রতিষ্ঠান করেন না। করার কোনো স্বপ্নও তাদের নেই। তারা যখন সরকারে থাকেন তখন সরকারি প্রতিষ্ঠানের উপর ছড়ি ঘোরান। সরকারে থাকার সময়ও তারা নিজেদের উদ্যোগে খুব কম প্রতিষ্ঠান করতে পেরেছেন।

কারণ তাদের ক্ষমতায় যাওয়া ছাড়া আর কোনো স্বপ্ন নেই। শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া উত্তরাধিকার সূত্রে একটি করে দল পেয়েছেন। নিজেরা সেই দল প্রতিষ্ঠা করেননি। দুই দলই একাধিকবার সরকার পরিচালনা করেছে। দেশব্যাপী তাদের বিরাট সমর্থক গোষ্ঠী।

কিন্তু দুই দলই আজ পর্যন্ত নিজেদের কেন্দ্রীয় অফিসটি তৈরি করতে পারেনি। অন্য কাজ দূরে থাক। এটাই হলো রাজনীতিবিদদের যোগ্যতা বা দক্ষতা। কাজেই 'প্রতিষ্ঠান' গড়ার ব্যাপারে মুহিত সাহেবদের কোনো ধারণা নেই। তাই তার পক্ষে অবলীলায় বলা সম্ভব হয়েছে- 'ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করতে চান।

' এই কথার অর্থ মুহিত সাহেব বোঝেন কিনা এ ব্যাপারে আমার সন্দেহ হয়। ড. ইউনূস এই মুহূর্তে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো কর্মকর্তা নন। তার কোনো প্রত্যক্ষ প্রভাব আর গ্রামীণ ব্যাংকে নেই। গ্রামীণ ব্যাংক তার আইন, নীতিমালা, পরিচালনা বোর্ড, চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা টিম দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক তার অভিভাবক।

এখন গ্রামীণ ব্যাংকের বোর্ড এম ডি নিয়োগ দিতে না পারলে তা বোর্ডের ব্যর্থতা, চেয়ারম্যানের ব্যর্থতা। নিশ্চয় সরকার নিযুক্ত বোর্ডের চেয়ারম্যান চোরা পথে এম ডি নিয়োগ দিতে চেয়েছিলেন। তাই পারেনি। বোর্ডের সদস্যরা (তারাই মালিক ও মালিকের প্রতিনিধি) যে সার্চ কমিটি গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন তা চেয়ারম্যান মানেননি। মালিকদের কথা তো চেয়ারম্যানকে মানতে হবে।

বোর্ডের চেয়ারম্যান সরকারের কথা মানতে চান। কিন্তু ব্যাংকটি তো সরকারের নয়। ব্যাংকটি তো গরিব মহিলাদের। তাদের সঞ্চিত টাকা দিয়ে ব্যাংকটি পরিচালিত হয়। কাজেই মালিকের কথাই তো চেয়ারম্যানকে শুনতে হবে।

এই চেয়ারম্যান তো আজ আছে কাল নেই। মালিক সদস্যরা কিন্তু সবসময় থাকবেন। এই নয়জনের বদলে অন্য নয়জন নির্বাচিত হয়ে আসবেন। তারাই ব্যাংক সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধি। সরকারের অনুগ্রহে তারা বোর্ডে বসেননি।

যেমনটি বসেছেন বোর্ডের চেয়ারম্যান। গ্রামীণ ব্যাংকে যদি এখনো এম ডি নিয়োগ দেওয়া সম্ভব না হয় সে জন্য দায়ী বোর্ডের চেয়ারম্যান। কারণ তিনি বোর্ড সদস্যদের (মালিক প্রতিনিধি) কথা শুনছেন না। গ্রামীণ ব্যাংকের এম ডি কে হবেন তা তো বোর্ড সদস্যরাই নির্ধারণ করবেন। যেমন অন্য দশটি বেসরকারি ব্যাংকে করে থাকে।

অর্থমন্ত্রী এই সহজ সত্যটি না বুঝলে জটিলতা তো হওয়ারই কথা। এখানে ড. ইউনূসের কোনো ভূমিকা নেই। থাকার কোনো সুযোগও নেই। তিনি এখন গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকাণ্ডের বাইরে। এ জন্য অর্থমন্ত্রীর তাকে দোষারোপ করা অন্যায় হয়েছে।

অর্থমন্ত্রী বলেছেন, 'ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করে দিচ্ছেন। ' অর্থমন্ত্রী কিসের ভিত্তিতে এ কথা বলেছেন আমি জানি না। তবে তার পাশে দাঁড়িয়ে সরকার নিযুক্ত গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক বলেছেন, 'গ্রামীণ ব্যাংক এখন অনেক ভালো আছে। এখানে টালমাটাল কোনো অবস্থা নেই। আমাদের যে কর্মকাণ্ড তা খুব ভালোভাবেই চলছে।

পারফরম্যান্স আগের তুলনায় অনেক ভালো। ২০১১-এর তুলনায় ২০১২-এর পারফরম্যান্স আরও ভালো। ২০১১তে প্রফিট হয়েছিল ৮৬ কোটি টাকা। এবার ১৪০ কোটি টাকা প্রফিট হয়েছে। ' (যুগান্তর, ২৪ জানুয়ারি)অর্থমন্ত্রী মুহিত কি বলবেন গ্রামীণ ব্যাংকের সরকার নিযুক্ত চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক তার পাশে দাঁড়িয়ে মিডিয়ার কাছে যা বলেছেন, তাতে কি প্রমাণিত হয় ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করতে চান।

বোর্ডের চেয়ারম্যান ওইদিন আরও বলেছেন, 'ড. ইউনূস ব্যাংকের যে কাঠামো ও নিয়ম-নীতি চালু করে গেছেন তা অনুসরণ করে গ্রামীণ ব্যাংক ভালোভাবেই চলছে। ' অর্থমন্ত্রী কি তবু বলবেন ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছেন? আমরা অর্থমন্ত্রীকে অনুরোধ করব তিনি যেন তথ্য প্রমাণ দিয়ে বলেন, কিভাবে ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংক ধ্বংস করছেন। তথ্য প্রমাণ দিতে না পারলে ড. ইউনূসের কাছে অর্থমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়া উচিত। যেমন করে তিনি ক্ষমা চেয়েছেন ড. অমর্ত্য সেনের কাছে। এবার আসা যাক গ্রামীণফোনের লভ্যাংশ প্রসঙ্গে।

একই দিনে একই সময়ে গ্রামীণ ব্যাংক পরিচালনা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক অভিযোগ করেছেন, 'গ্রামীণ ব্যাংকের ৩০ হাজার কোটি টাকার হদিস নেই। ' একই সঙ্গে তিনি বলেছেন, "শুনেছি এই টাকা 'গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্ট' নামে একটি প্রতিষ্ঠানে গেছে। " এটা কেমন কথা হলো? একবার বলেছেন, 'হদিস নেই', আমার পরক্ষণেই বলছেন, 'গ্রামীণ টেলিকম ট্রাস্টে গেছে। ' তাহলে তো হদিস আছে। তাছাড়া কোনো টাকা কোনো 'ট্রাস্ট ফান্ডে' থাকলে তো বলতে হবে নিরাপদেই আছে।

অর্থমন্ত্রীর মতো গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের সরকার নিযুক্ত চেয়ারম্যানও মিথ্যাচার করতে পছন্দ করেন। গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃপক্ষ এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'গ্রামীণফোন থেকে ৩০ হাজার কোটি টাকা লভ্যাংশ পাওয়ার তথ্য ঠিক নয়। প্রকৃত তথ্য হলো : 'গ্রামীণফোন' থেকে 'টেলিকম' এ পর্যন্ত ১ হাজার ৯২০ কোটি টাকা লভ্যাংশ পেয়েছে, যা বার্ষিক রিপোর্টে উলি্লখিত। (সূত্র : ডেইলি স্টার, ২৫ জানুয়ারি) গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের চেয়ারম্যান অভিযোগ করেছেন, 'এ টাকা গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যদের পাওয়ার কথা। ভোগ করার কথা।

কিন্তু তারা এ টাকা পায়নি। এখন প্রশ্ন হলো এই ৩০ হাজার কোটি টাকা (ভুল তথ্য) কোথায় গেল?' গ্রামীণ ব্যাংক, গ্রামীণফোন ও গ্রামীণ টেলিকম সম্পর্কে যাদের ধারণা পরিষ্কার নয় তারা এই প্রশ্ন তুলতেই পারেন। অনেক পাঠকও এ ধরনের কথায় বিভ্রান্ত হতে পারেন। হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ ব্যাপারে আমি যে তথ্য জানি তা হলো : 'গ্রামীণফোন' একটি পৃথক ব্যবসায়ী সংস্থা।

নরওয়ের 'টেলিনর', বাংলাদেশের 'গ্রামীণ টেলিকম' (মুনাফার জন্য নয় কোম্পানি) ও বাংলাদেশের কিছু মানুষ শেয়ার কেনার ভিত্তিতে গ্রামীণফোনের মালিক। এই তিন গ্রুপই গ্রামীণফোনের বার্ষিক লভ্যাংশ পেয়ে থাকে। 'গ্রামীণ টেলিকম' ড. ইউনূসের উদ্যোগে সৃষ্ট একটি মালিকবিহীন নন-প্রফিট কোম্পানি। এ ধরনের কোম্পানিকে আইনের ভাষায় 'নন-স্টক কোম্পানি লিমিটেড বাই গ্যারান্টি' বলা হয়। এতে পরিচালকরা কোম্পানির জন্য ব্যক্তিগত গ্যারান্টি দেন কিন্তু কোনো মুনাফা গ্রহণ করতে পারেন না।

(সূত্র : ইউনূস সেন্টারের প্রকাশনা, সমালোচকদের কিছু প্রশ্ন ও প্রকৃত তথ্য, আগস্ট-২০১২)। অনেকে না জেনে বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে ড. ইউনূস 'গ্রামীণফোনের' শেয়ার (৩৪.২ পার্সেন্ট) ক্রয় করেছেন। এই ধারণা একেবারেই ঠিক নয়। ড. ইউনূস গ্রামীণফোনের শেয়ার ক্রয় করার জন্য 'গ্রামীণ টেলিকম' নামে একটি নট ফর প্রফিট কোম্পানি গঠন করেন। এই কোম্পানির মাধ্যমে ড. ইউনূস দেশি ও বিদেশি সূত্র থেকে টাকা সংগ্রহ করে 'গ্রামীণফোনের' শেয়ার ক্রয় করেন।

একজন মার্কিন ধনী ব্যক্তি একাই ১১ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিয়েছিলেন। 'গ্রামীণ টেলিকম' এভাবে গ্রামীণফোনের শেয়ার ক্রয় করতে সমর্থ হয়। পরে গ্রামীণফোনের লভ্যাংশ থেকে সব টাকা ধীরে ধীরে সুদসহ শোধ করে দেওয়া হয়েছে। এখানে গ্রামীণ ব্যাংকের কোনো ভূমিকা নেই। গ্রামীণ ব্যাংকের টাকাও নেই।

ফলে গ্রামীণ ব্যাংকের সদস্যরা এই লভ্যাংশের অংশ পাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। 'গ্রামীণফোন' যখন প্রতিষ্ঠিত হয় গ্রামীণ ব্যাংকের তখনকার অডিট রিপোর্ট দেখলেই তা স্পষ্ট হবে। ব্যাংক থেকে টাকা ধার নিয়ে কোথাও বিনিয়োগ করলে তা নিশ্চয় অডিট রিপোর্টে দেখাতে হবে। এর ব্যতিক্রম হওয়ার কোনো সুযোগ আছে কি?গ্রামীণ ব্যাংক বোর্ডের চেয়ারম্যান, সমালোচক, টক-শো'র আলোচক ও অনেকে কোনো অডিট রিপোর্ট না পড়ে, কোনো তথ্য না জেনে আসর গরম করছেন। এসব সমালোচক নিতান্তই ড. ইউনূসবিদ্বেষী, আর কিছু নয়।

টিভি পর্দায় যা খুশি তা বলে গেলেও তাদের কোনো ক্ষতি হয় না। বাংলাদেশে কথা বলার স্বাধীনতা রয়েছে। এগুলো হলো তার অপব্যবহার। কোনো সমালোচক কোনো ডকুমেন্ট দেখিয়ে বলতে পারেনি 'গ্রামীণফোনে' গ্রামীণ ব্যাংকের বিনিয়োগ রয়েছে। শুধু কথার তুবড়ি ছোটাতে পারে।

গত তিন বছর যাবৎ গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস প্রসঙ্গে বিভিন্ন মিডিয়ায় অনভিপ্রেত সমালোচনা হয়েছে। দুই-তিন জন সমালোচক ভদ্রতা ও সৌজন্যের পরোয়া না করে যা খুশি তা বলেছেন। সম্প্রতি একটি আওয়ামী টিভি চ্যানেলে একজন সমালোচক গ্রামীণ ব্যাংকের ইস্যুকে 'হলমার্ক কেলেঙ্কারির' সঙ্গে তুলনা করার ধৃষ্টতা দেখিয়েছেন। মুখচেনা কয়েকজন সমালোচক (৩-৪ জন) বিভিন্ন মিডিয়ায় গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস সম্পর্কে মনগড়া, তথ্যবিহীন সমালোচনা করার জন্য আদাজল খেয়ে লেগেছেন। অনেকের কাছেই এটা খুব রহস্যময়।

সোনালী ব্যাংক, বাংলাদেশ বিমান, পদ্মা সেতু, ডেসটিনি ইত্যাদি বহুল সমালোচিত দুর্নীতি ইস্যুতে তারা তেমন সোচ্চার নন। যতটা সোচ্চার গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস সম্পর্কে। অনেকের ধারণা, ড. ইউনূসকে আক্রমণ করার জন্য তাদের প্রতি কোনো 'দায়িত্ব' দেওয়া হয়েছে। একটি টিভি চ্যানেল ও কয়েকজন ব্যক্তি হয়তো সেই 'দায়িত্বই' পালন করছেন। কিন্তু রাজনীতির গণেশ উল্টে গেলে তাদের কী হবে?গ্রামীণ ও ড. ইউনূস সম্পর্কে সমালোচকদের কথার জবাবে 'ইউনূস সেন্টার' থেকে একটা 'পুস্তিকা' প্রকাশিত হয়েছে গত আগস্টে।

প্রায় প্রত্যেকটি সংবাদপত্রেও তা ছাপা হয়েছে। কোনো সমালোচক আজ পর্যন্ত কোনো ডকুমেন্ট দেখিয়ে বা উদ্ধৃত করে বলেননি যে, 'ওই পুস্তিকায় বর্ণিত ওই 'বক্তব্য' সত্য নয়। তাদের ডকুমেন্ট ভিন্ন কথা বলছে। ' ওই পুস্তিকার বক্তব্য খণ্ডন না করা পর্যন্ত পুস্তিকার বক্তব্যকেই প্রকৃত তথ্য বলে বিবেচনা করতে হবে। এটাই সাংবাদিকতার নিয়ম।

কিন্তু বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করছি কোনো সমালোচকই আলোচনার সময় ওই পুস্তিকাকে উদ্ধৃত করে না। তারা আগে যা বলতেন সেটা এখনো বলে যাচ্ছেন। তাদের ভুল ধারণা বা ভুল তথ্য সংশোধন করে যে 'প্রকৃত তথ্য' দেওয়া হয়েছে তা অনেক সমালোচক গ্রাহ্যই করছেন না। এটা কোন ধরনের সাংবাদিকতা? গ্রামীণ ব্যাংক ও ড. ইউনূস সম্পর্কে এই লাগামহীন অপপ্রচার কবে বন্ধ হবে?লেখক : একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/     বুকমার্ক হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.