আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনের কিছু আজাব নামা...পর্ব-৭ (কোপা জ্বরের মধ্যে কোপানি খাইয়া চিৎপটাং)



গত কিছু পর্বে বেশ কিছু পাঠক মন্তব্য করেছেন যে এটা নাকি আমার সুখের কাহিনী। উত্তরে আমাকে বলতে হচ্ছে, নদীর এপাড় ছাড়িয়া কহে নিশ্বাস ও পাড়ে যত সুখ, ওপাড় ছাড়িয়া কহে নিশ্বাস এ পাড়ে নয় ওপারেই যাত সুখ আমার দৃড় বিশ্বাস। যাই হোক প‌্যাচাল ছাইড়া ঘটনা শুরু করি। গত সপ্তাহে আমর ভাইরাস জ্বর ধরছিল, জ্বরে আমার অবস্থা কাহিল। রবিবার বিকাল থেকেই জ্বর জ্বর লাগতাছিল।

সন্ধার পর দেখি সারা শরীরে ব্যাথা করতাছে, কি আর করুম মটকা মাইরা শুইয়া থাকলাম। জ্বর আইলে টিভি দেখতে ও ভাল লাগে না... দূর শালা কি যে করি। রাতে ফুন দিল জিগাইল, কি অবস্থা বিকাল থেকে তোমার কোন খবর নাই, নতুন কোন মেয়ের পাল্লায় পড়লা? কইলাম তুমার বদ নজর লাগছে, জ্বর আইছে.... শরীর টা জুইত লাগতাছে না, আজে বাজে কথা কইরা মাথাটা গরম কইর না। আইজ ঝগড়া করতে পারুম না। কইল ওহ... আমি ঝগড়া করি? আজে বাজে কথা বলি? তা জনাব আপনার জ্বর হইয়াছে তাহা আমি কেন জানি না? কোন উত্তর দিতে পারলাম না, চুপ মাইরা থাকলাম... কইল "চুপ করে আছো ক্যান? নাকি আমার সাথে কথা বলতে রুচিতে লাগছে? ..." তারপর কইল জ্বর কখন আসছে?" কইলাম বিকাল থেকে জ্বর আসছে, শুইন্যা একটা চিল্লান দিয়া কইল, বিকাল থেকে তোমার জ্বর আর আমি জানি না... ঘটনা কি? কইলাম জ্বর তো মাত্র আসল সো জানাবার সময় পেলাম কোথায়? "ওহ... তাইতো সময় কোথায় পাবা? সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্তা কত ঘন্টা হল? তা জনাব আপনি কি নিয়া এত ব্যস্ত ছিলেন? আপনার কয়টা মেটিং ছিল?.." আমি চুপ মাইরা থাকলাম... পরে জিগহাইল.. ডাক্তার দেখাইছি কি না... কইলাম না, আগামী কাইল দেখামু... কিছুক্ষন চুপ মাইরা থাইক্যা কইল... ডাক্তার দেখানোর পরে আমার সাথে কথা বলবা... এই কথা কইয়া লাইন টা কাইটা দিল... বুজলাম আইজ টেম্পারেচার হাই... লগে লগে ফুন দিলাম... ফোন টা ধইরা কইল.. ফোন করছ ক্যান? কইলাম আরে তুমি রাগ কর ক্যান? আমি তো ডাক্তারের কাছে যাবই.. এত রাতে ডাক্তারের কাছে যাওয়া যাবে না... আমার কথা শুইন্যা একটা ভেংচি কাইট্যা ব্যাংঙ্গ কইরা কইল.. "স্যার আপনি আগামী কাল ডাক্তার দেখিয়ে তার পর এই নম্বারে যোগাযোগ করবেন... তার আগে দয়া করে কোন প্রকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করবেন না... " কইয়াই লাইন টা কাইট্যা দিল... বুজলাম আর ফুন কইরা লাভ নাই... এই বার ফুন করলে কড়া ঝাড়ি খাইতে হইব... সো একটা ঘুম দেওন ই বুদ্বিমানে লক্ষন.. পরদিন ডাক্তার দেখাইয়া ফুন দিলাম... ডাক্তার দেখাইছি শুইন্যা কইল.. সোনা মানিক ডাক্তার তোমাকে যেইভাবে ঔষধ খেতে বলছে ঠিক টাইম মত সেই গুলা খাবা... একটু ও যেন ভূল না হয়... কখন কখন তোমার ওষধ খেতে হবে বল , আমি তেমাকে টাইম মত ফোন দিয়ে মনে করিয়ে দিব... যাই হোক ২/৩ দিন টাইম টু টাইম ফোন দিয়া খোজ খবার নিল.. বুধবার দিন বিকাল ৪টায় হটাৎ ফুন দিল কইল.. সোন মানিক কি কর..? কইলাম টিভি দেখি... তখন কইল.. এক কাজ কর.. আমি একটু পরে বসুন্ধরাতে আসছি, তুমি তারাতারি চলে আসো... হায় হায় কি কি কয়? কইলাম.. আমর তো অনেক জ্বর কিভাবে আসব? একটু গরম হইয়া কইল.. জ্বর তো কি হয়েছে? তুমি ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ খাচ্চনা? কইলাম ঠিক মত ওষধ খাইতাছি.. কুনু ঔষধ মিস করি নাই... তা হলে আর সমস্যা কি? কোন কথা না, আমি ৫.৩০ এ বসুন্ধরাতে থাকব... দেখা হবে...বাই... যতই বুজাই কুনু কাজ হয় না... কয়.. "ঔষধ খেয়ে তো জ্বর কমে গেছে সুতরাং আসতে সমস্যা কোথায়? বেশী কথা বলবা না, যা বলছি তাই কর... তোমার জ্বর তো আমার জানা আছে.. একটু পরে যদি তোমার দোস্ত-বন্ধুরা ডাক দেয় তাহলে তা উড়ে চলে যাবা.... আর সারা রাত তাদের সাথে থাকতে পারবা।

আমার সাথে দেখা করতে গেলে শুধু তোমার জ্বর আসে..." ফোনটা রাখার আগে শুধু কইল 'আমার ফুপুর সাথে আমি বসুন্ধরা যাব.. সো সাবধানে থাকবা.. আমি আসতে না বলা পর্যন্ত দেখা করবা না... দূরে দূরে থাকবা....” কি আর করা ৫.৩০ এ বসুন্ধরা গিয়া দাড়াইয়া থাকলাম... ফুন দিলাম.. কইল অপেক্ষা কর... সময় মতো ডাক দিব... অনেক্ষন বইস্যা রইলাম.. বইয়া থাকতে থাকতে টয়লেট ছোটটা চাপল... ফ্রেশ রুমে গেলাম... যেই ছোটটা শুরু করলাম.. তখনই ফুন দিল... ফুন ধরলাম.. কইল .. 'তারা তারি 'পানসুপারি' দোকানের সামনে আসো.... দেরী করবা না..' কি আর করা... কোন মতে ছোটটা শেষ কইরা দৌড় দিলাম... 'পানসুপারী' দোকানের সামনে গিয়া দেখি দাড়াইয়া আছে, আমারে দেইখ্যা কইল.. কোথায় ছিলা? কইলাম.. এই তো.... কোথাও না... কইল.. তোমাকে দেখলাম.. ওই দিক থেকে আসছো... ঘটনা কি... কোন মেয়েকে দেখতে গিয়েছিলে? কইলা... আরে ছোট রুমে গেছিলাম.... কইল.. শোন ফুপু দেখলে সমস্যা হবে.... তোমার সাথে বেশিক্ষন কথা বলা যাবেনা,... কইলাম.. তাহলে জ্বরের মধ্যে ডাকলা ক্যান? আমারে কইল.. কই দেখি তোমার জ্বর কতটুকু...? কপালে হাত দিয়া জ্বর দেইখ্যা কয়, আরে এইটা তো জ্বর না.. সামান্য গা গরম হইছে... আরে আমরা যখন র্ভাসিটিতে কলা ভবন থেকে "এল টি" ভবনে যাই তখন রোদে আমাদের শরীর আরো বেশী গরম হয়ে থাকে.... আমি কইলাম.. ওহ সেই কথা... আমি যখন সুস্থ থাকি তখন তো তুমারে দেখলে আমর গায়ে আরো বেশি জ্বর থাকে... অটোমেটিক আমার গায়ে 104 ডিগ্রি জ্বর আসে...... সেইটা কি বুজ? আমারে কইল.. এক কাজ করা.. আমার পান খেতে ইচ্ছা করছে....আমি এখন পান খাব.... একটা পান কিনে দাও... আমি তো অবাক... কইলাম তুমি আবার কবে থেকে পান খাওয়া শিখলা? কইল... আরে এখন আমার পান খেতে ইচ্ছা করছে , আমাকে পান কিনে দাও.... পানের দোকানে গিয়া দেখি একটা সুন্দর মাইয়া এক পুলার লগে পান কিনতাছে... তাই পেমেন্ট কাউন্টারের অপেক্ষা করতে লাগলাম... মাইয়াটারে পেছন থেকে হেভি সেক্সী লাগতাছিল.... একটু পরে যখন মাইয়াটা কাউন্টার ছাড়ল.. আমি গেলাম.. পান কিনতে ... জিগাইলাম. .. কোন পান খাবা... দেখি আড় চোখে মাইয়াটারে দেখতাছে... জিগাইলাম.. মাইয়া মানুষরে তুমি কি দেখ? দেখুম তো আমি.... মনে মনে কইলাম.. অগো জন্ম হইছেই তো আমাগো দেখনের লাইগ্যা,,,, কইল.. আরে পেছনটা দেখে ভাবছিলাম মেয়েটা সুন্দর হবে.. কিন্তু মোটেও সুন্দর না... আমি কইলাম. .. কোন মাইয়া? দেখি... কইয়া যেই চাইছি... লগে লগে আমরে একটা ধমক দিয়া কয়... এইটা কোন ধরনের অভদ্রতা? তোমার নজর এত খারাপ ক্যান? এই ভাবে খারাপ দৃষ্টিতে কেউ কি মেয়ে মানুষের দিকে তাকায়? আমি তো বেক্কল হইয়া গেছি.... আমি খুবই সাধারন ভাবে তাকাইছিলাম.... কইলাম.... আমি আবার কি ভাবে তাকাইলাম?... কইল.. একটা পান কিনতে এত সময় লাগে ক্যান? মেয়ে মানুষ দেখলে হুস থাকে না... আমি কইলাম... আরে ধূর কি যে কও...আমি মাইয়াটারে দেখার টাইম পাইলাম কই?... তুমিই না কইলা.. মাইয়াটা সুন্দর না.... আরে আমি তো তোমার মত সুন্দর মাইয়া দেখতে দেখতে আর কোন মাইয়া আমার চেক্ষেই লাগে না... অন্য সব মাইয়াগুলারে তো আমার কাছে.. গার্মেন্স গার্মেন্স লাগে.... তোমাকে আজ যা লাগছে না... ওয়াও.... হটাৎ তুমি ফসা হইয়া যাইতাছ.. ঘটনা কি? দেখি পাম পুট্টিতে কাম হইছে... হাইস্যা দিয়া কয় আরে না... গরম লাগছিল তো... তাই একটু ফেস পাউডার মাখছি... কইয়া আমার হাতের বাহুতে জরাইয়া ধরল... আমি কইলাম.. তোমার ফুপুর সাথে পরিচয় করাইয়া দিবা না? কইল.. মাথা খারাপ.... ফুপুকে তুমি চিন না.... ভীষন কড়া... আমি কইলাম "ফুপু কড়া মাল...." শুইনা কইল, এই বেয়াদপ... ফুপুকে সম্মান করে কথা বলবা.. উনি মুরুব্বি মানুষ.. পান কেনা শেষে আর ২/৩ মিনিট কথা বলে চলে যাওয়ার সময় কইল... এক কাজ কর... আমরা "এ্যমেরিকান বাগারের" সামনে বসে আছি... আমি যাবার ৫/৭ মিনিট পরে ওই দিক দিয়ে যাবা... এমন ভাব করবা যেন আমাকে হটাৎ দেখতে পেয়েছ..... তারপর আমাদের টেবিলের কাছে গিয়ে আমার সাথে কথা বলবা.. সুবিধা মনে করলে আমি বসতে বললে আমাদের সাথে বসবা.. .. না হলে... সোজা রাস্তা মাপতে থাকবা..... কইয়া চইল্যা গেল.... একটু দূরে গিয়া কয়... আরে পান তো তুমি কিনে দেও নাই...আমার টাকায় কিনেছি.... তাহলে এক কাজ কর... আমাকে একটা মিনারেল ওয়াটার কিনে দাও..... পানির বোতল নিয়া নাচতে নাচতে চইল্যা গেল... আর আমি বইস্যা রইলাম.... ৫ মিনিট পরে ভাবলাম.. ওই দিকে যামু যেই টেবিল থেকে উঠলাম.. দেখি হায় হায় এখন তো দেখি আমার দিকেই এক মহিলা সহ আসতাছে.... কাছে আসার পরে একটা হাসি দিয়া জাগাইল.. কেমন "আছেন"?... আমি তো অবাক... "আছেন"? এ তো দেখি "আপনি" কইরা কথা কওয়া শুরু করছে.... কইলাম জ্বি ভাল.. তুমি কেমন আছে... কোথায় আসছিলা....ইত্যাদি নাট্যকারি কথা বার্তা... যেন হটাৎ দেখা হইছে.... কথার মাঝে... হটাৎ কইল.. "আপনার" সাথে পরিচয় করে দেই...উনি আমার ফুপু.... আর ফুপু.. উনি হল "সামস".. আমাদের ডিপারমেন্টের সিনিয়র ভাইয়া... উনি অনাসে ফাষ্ট ক্লাস ফাষ্ট হয়েছিলেন..... মাষ্টাসেও ফাষ্ট হবে..." হায় হায় কয় কি..... আমি তো এখনো অনাস ই পাস করি নাই... আর এখন তো দেখি আমারে ফাষ্ট ক্লাস ফাষ্ট বানাইয়া দিছে..... আবার মাষ্টাসও পরিক্ষা দেওয়াইয়া দিছে.... আমি লজ্জায় হাইস্যা দিয়া কইলাম.. মাস্টাসে কি হবে এখনো বলতে পারছি না... ফুপু কেমন আছেন.... কখন আসছেন... ইত্যাদি... হাবিজাবি... ভদ্রতা সূচক কথা বার্তা... ফুপুকে কইলাম.. আমাদের সাথে কফি খান... ফুপু কইল.. না বাবা... এখন আমরা চলে যাব... চইল্যা যাওনের সময় পেছনে ফিইলা.. একটু মুচকি মারইরা চইল্যা গেল...... কি আর করা... ৫ মিনিটের দেখা পব শেষ হইয়া গেছে..... অহন বাড়ি যাইতে হইব... বাহিরে আইস্যা দেখি হালকা বৃষ্টি হইতেছে... রাস্তায় কোন খালি সিএনজি নাই.... বহুত কষ্টে বৃষ্টিতে ভিইজ্যা বাসায় আইলাম.... রাত যত বাড়ে জ্বর দেখি আরো বাড়তাছে..... রাত ১২ টার দিকে দেখি জ্বরে সাড়া শরীর কাপতাছে.... প্রচন্ড শীত লাগতাছে.... একটা কম্বল গায়ে দিলাম.... কিছুইতে কিছুই হয় না.... তার পর ও শীত লাগে... হায় হায়.... এই মে মাসে সবাই ফ্যান এসি ছাইড়া ঘুমাই... আর আমার শীত লাগে... কম্বল গায়ে দিয়া... শুইয়া আছি.... হটাত দেখি ফুন দিছে.... ফুন ধইরা.. কথা আর কইতে পারি না... দাত শীতে ঠক ঠক করতাছে.... বহুত কষ্ট কইরা কইলাম... জ্বরে শীত লাগতাছে.... কম্বল গায়ে দিয়া শুইয়া আছি....... আমার কথা শুইন্যা কিছুক্ষন চুপ মাইরা রইল.... আমি শুধু কইলাম... আমারে বসুন্ধরা নিয়া যাও... তাইলে আমার জ্বর চইল্যা যাইব.... আমার কথা শুইন্যা হাউ মাউ কইরা কাইন্দা দিল.....কইল আমি কি জানি তোমার জ্বর আবার আসবে... কইয়া কানতে থাকল... আমি শুধু মনে মনে কইলাম.... এই তো জ্বর যাওনের ঔষধ দেওয়া শুরু করছে.... আর একটু কান্দন শুনলেই আমার জ্বর পালাইয়া যাইব....আমি সুস্থ হইয়া যামু..... আপসোস এই মাইয়া মানুষ গুলার জন্য..... এর পরের ৩দিন আমার জ্বর ছিল.. ১০৩/৪ ..... মানুষের শখ মিটানুর শখ টের পাইলাম... --------------------------------------------------------------------- (মনের কিছু দুক্ষের কথা কইতাছি.... কেউ কোন বাজে মন্তব্য করবেন না...যন্ত্রনা কিভাবে শুরু হইছে আইজ তার বয়ান দিমু....) পুরাতন পর্বঃ পর্ব-১ পর্ব-২ পর্ব-৩ পর্ব-৫ পর্ব-৬

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.