শুভ সকালেও নেমীর টেলিফোনের কথা মনে রেখেছিল। আবার কি মনে করে ভাবল মেয়েদের কত কৌশল থাকুক অপেক্ষায়। ও আগে হাতের কাজগুলো সেরে ফেলুক , ইসফাক মাহমুদের টাকার যাকাত দিয়ে নিক, যাতে কোন মেয়ে ও প্রতি অধিকারের দাবী না রাখতে পারে। ফোন করে তামান্নাকে জানাল - ন'টার মধ্যে পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে চলে এসো।
যথাসময়ে শুভ এসে দেখল তামান্না দাড়িয়ে আছে।
ওর সহজাত একটা হাসি দিয়ে বলল- কেমন আছ সুন্দরী । তামান্না হেসে দিয়ে বলল- ভাল , তবে বিস্মিতও হোল একটু । এ যে শুভ - এত সহজে ওর সান্নিধ্য ভাবাই যায় না। শুভ ওকে নিয়ে লাইব্রেরীর সিড়িতে বসল , কিছুক্ষন রুপের প্রশংসা করে বলল- আচ্ছা তামান্না তুমি ভায়োলিন বাজাতে পার।
প্রতিউত্তর না আসাতে যেন ও ভীযন দু:খ পেয়েছে এমন একটা ভাব দেখিয়ে বলল-
প্লিজ তামান্না তুমি ভায়োলিন শিখ না , আমার অত্যন্ত প্রীয় ইনস্ট্রুমেন্ট।
রাতে শোওয়ার আগে না শুনলে আমার ঘুমই আসে না।
- তাতে আমার লাভ ।
-লাভ মানে । তমি কি আমার পর নাকি। তাছাড়া দু'দিন পরে তোমার সাথে আমার বিয়ে হচ্ছে না।
তামান্না কি যেন বলতে চাইছিল কিন্ত শুভ সে সুযোগ তাকে না দিয়েই বলল-
তুমি আর অমত কোর না। আমি মাসুদকে বলে রেখেছি , ও সপ্তাহে দু'দিন তোমাকে শিখিয়ে আসবে। তবে মনে রেখো ও কিন্ত আমার বন্ধু।
- ঠিক আছে শিখব তবে কথা দিতে পারছি না তোমার সাথেই আমার বিয়ে হবে। মা ছেলে দেখেছে ইউ এস এ থাকে।
সম্ভবত: এ বছরের শেযের দিকে দেশে আসছে তখনই বিয়ে হয়ে যেতে পারে।
শুভ মনে মনে ভাবল সেই ভাল । তবুও দেখি সুন্দরী তোমার মন।
নেমীর আগমন দেখেই তামান্নার মাথায় হিংসার আগুন জ্বলে গেল। এই মিন মিনে মেয়েই শুভকে ওর থেকে সরিয়েছে, ওকে আজ দেখিয়ে দেবে শুভ তোমারও একার নয়।
আবার ভাবল ছোট জাত অপমান বোধ বুঝলে তো। দ্রুতই ও নিজের হাতটা শুভর বা হাতের বগলের নিচ দিয়ে ঢুকিয়ে দিল। তামান্নার ঐ আকস্মিক কান্ডতে শুভ বিস্ময়ে ওর দিকে তাকাল। তামান্নাও যেন সামনে কেউ নেই এমন খেয়ালে শুভর হাতটা আরো কাছাকাছি টেনে নিল।
নেমী কয়েক গজ দুর থেকেই শুভকে দেখল এবং পেয়েছে এ রকম একটা বিজয়ের আনন্দে ওর সব রাগ ভুলে গেল।
মুখ টিপে হাসল এই ভেবে যে, পাগলের কান্ড দেখ মেয়েটাকে নাচাচ্ছে। শুভ সামনের দিকে চাইতেই চমকে উঠল আর নেমী শুভর এই লজ্জিত চেহারা দেখে ওর পাগল করা হাসি হেসে দিল।
শুভর মুখ দেখেই ও বুঝেছে ও ভীযন লজ্জা পেয়েছে আর নেমীও জীবনে দ্বিতীয়বার ওর পরাজিত মুখ দেখল। মনে করল - প্রথমবার শুভর ঘরে সেই ভয়ংকর কান্ডখানার পর অবিকল সেই অপরাধীর মুখ।
শুভ ধমক দিয়ে হাতটা ছাড়িয়ে নিল - এ সব কি হচ্ছে তামান্না ? আই আ্যম টলায়েট ইউ ?
তামান্না কিছু বলার আগেই নেমী শুভকে ধমক দিল - শুভ ।
শুভ ওর দিকে তাকাতেই নেমী হেসে দিয়ে বলল- কি ছেলেমানুযি করছ। হাত ধরেছে তাতে কি হয়েছে। থাক না একটু। চেয়ে দেখল তামান্নার দিকে মুখটা একেবারে কালো হয়ে গিয়েছে। তামান্না ওর দিকে তাকতেই নেমী হেসে দিয়ে বলল-
তুমি মন খারাপ কোর না।
ও গাধাটা ওরকমই। হঠাৎ ভাল হঠাৎ মন্দ। তোমরা গল্প করো আমি একটু লাইব্রেরী থেকে আসছি। সিড়ি দিয়ে উঠতে উঠতে বলল- তামান্না যেয়োনা কিন্ত। তোমার সাথে আমার কথা আছে , বলেই লাইব্রেরীর দরজা দিয়ে ঢুকে গেল।
.........চলবে ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।