আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওহে, তোমাদের আনন্দ দেখে আমার যে খারাপ লাগে.... {কাঠামোবদ্ধ/সৃজনশীল প্রশ্ন নিয়ে আলোচনা}

এই পৃথিবীতে শুধুমাত্র দুই রকমের মানুষ আছে। ভালো মানুষ যারা ভালো কাজ করে। আর খারাপ মানুষ যারা খারাপ কাজ করে। এটাই মানুষদের মধ্যে একমাত্র পার্থক্য। আর কোন পার্থক্য নেই... আমি ভাল মানুষ...☺☺☺

আপনারা সবাই জানেন আজকে আমার অংক পরীক্ষা হলো।

আপনাদের সকলের দোয়ায় আর নিজের চেষ্টায় ইনশাল্লাহ পাশ নাম্বারটা জুটাতে পারবো। সবাইকে ধন্যবাদ শুভকামনার জন্য। কালকে ইংরেজি ১ম পত্র পরীক্ষা (আহা কি আনন্দ আকাশে-বাতাসে)। ইংরেজী আমার সবচাইতে প্রিয় সাবজেক্ট। (অবশ্যই বাংলার চেয়ে বেশিনা) অনেক প্যাচাল হইলো।

এইবার আসি আসল কথায়। সরকার আমাদের নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের জন্য একটা উপহার এনেছিল। যেই উপহারটা পেয়ে আমার মতো কিছু ছাত্র অবশ্যই খুশি হয়েছিল। কিন্তু এই হঠাৎ উপহারটাকে অনেকেই গ্রহণ করতে রাজী হয়নি। ফলে তাদের বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদেরকে এই উপহার পাওয়া থেকে বিরত করতে আন্দোলনে নামলো।

সরকার পরে ভাবলো, "ওরা যখন উপহারটাকে নিতে চায়না তখন আমাদের এত সাধাসাধির দরকার কি?" সরকার উপহারটাকে ফিরিয়ে নিল। পাঠকরা কি বুঝতে পেরেছেন আমি কোন উপহারের কথা বলছি? যারা বুঝতে পেরেছেন ভাল। যারা পারেননি তাদেরকে বলছি। আমি বলছি কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন নামক উপহারটির কথা যার নতুন নাম সৃজনশীল প্রশ্ন। আজকে অংক পরীক্ষায় আমার ধারণার পুরোপুরি সত্যতা পেলাম।

আমাদের পরীক্ষার প্রশ্ন সনাতন পদ্ধতিতে হলেও ৬ষ্ট থেকে ৮ম শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের প্রশ্ন হয়েছিল নতুন সৃজনশীল পদ্ধতিতে। তারা নিজেদের সৃজনশীলতার সঠিক পরিচয় পরীক্ষার খাতায় লিখে খুশিমনে পরীক্ষার হল থেকে বেরোলো। আমি কষ্ট পেলাম। আহারে!!! সৃজনশীল প্রশ্ন নামের আশীর্বাদটারে আমাদের দেশের মানুষ চিনতে পারলো না। একটু বিশ্লেষণ করে দেখা যাক।

কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন চালু হবার পরেই শুরু হল অভিভাবকদের একটা আন্দোলন। তাদের কথা এটাকে বন্ধ করতে হবে!!! পাতিহাস সরি ইতিহাস বলে, "ইংরেজী ১ম পত্রে সিন কমপ্রেনশান পদ্ধতি চালু হবার পরেও নাকি তারা এ আন্দোলন করেছিলেন। কিন্তু তখন কোন কাজ হয়নি। " এখন প্রশ্ন হল, "সিন কমপ্রেনশান চালু করায় কি আমাদের সুবিধা হল নাকি অসুবিধা হল?" আমার উত্তর, "সিন কমপ্রেনশান চালু করায়ই আমি এখন পরীক্ষার আগের দিন এতো শান্তিতে আছি। " আমি একটা ছেলে যে কোনদিন ইংরেজীর একটা প্যারাগ্রাফ আর বাংলার একটা রচনা মুখস্থ করতে পারিনি।

এটা আমার কথা। কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নকে আমি আগেই আশীর্বাদ বলেছি। তার কারণটা এবার একটু বলি, বাংলায় একটা প্রবাদ আছে। "গ্রন্থগত বিদ্যা আর পরহস্তে ধন। নহে বিদ্যা নহে ধন হলেই প্রয়োজন।

" কাঠামোবদ্ধ প্রশ্ন হলে এই গ্রন্থগত বিদ্যা থেকে আমরা মুক্তি পেতাম। অনেক শিক্ষার্থী যারা শুধু বইয়ের পাতার পর পাতা মুখস্থ করে যেত তারা জানতো বইয়ের বাইরেও একটা দুনিয়া আছে। কারণ, কাঠামোবদ্ধ প্রশ্নে বইয়ের চেয়ে বেশি এই দুনিয়া সম্পর্কে লিখতে হতো। একটা বই-ই কি সব? অবশ্যই না। একটা বই পড়ে মানুষ বাথরুমে যাওয়া পর্যন্ত শিখতে পারেনা।

। । কিন্তু দূঃখজনক হলেও সত্য যে এই সৃজনশীল প্রশ্নটাকে আমরা আর পাচ্ছি না। অন্তত আমি আর পাচ্ছি না। কারণ এই আলোটাকে অন্ধকার দিয়ে ঢেকে দিতে চাচ্ছে দেশের কিছু মানুষ।

যাদের সম্পর্কে বলার মতো কোন শব্দ আমার কাছে নেই। তাই আজকে যখন স্কুলের ছোট ভাইরা এই সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে হাসিমুখে বের হল। তখন আমার খুব খারাপ লাগলো। আহারে, কি সুযোগটাইনা মিস করলাম সালাম রইলো তাদের প্রতি। যারা এই পদ্ধতিটার প্রবর্তক।

আর শুভকামনা রইলো তাদের প্রতি, যারা এই পদ্ধতিটাতে পরীক্ষা দেবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।