আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অসভ্য দেশদ্রোহী বাহিনী (!?)


৩রা মে ১৯৮৪ এর এক পড়ন্ত বিকেলে ধানমন্ডির বঙ্গবন্ধু ভবনে বসে গল্প করছেন বঙ্গবন্ধু কন্য জননেত্রী শেখ হাসিনা সহ কয়েকজন। গল্পে গল্পে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ ও পাকিস্থানী সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গ উঠলো। প্রসঙ্গ উঠলো ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যে দিয়ে গড়ে উঠা আমাদের সেনাবাহিনীর কথা। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সম্পর্কে বললেন, এটা একটা সেনা বাহিনী হলো ? এটা একটা বর্বর, নরপিশাচ, উচ্ছৃংখল, লোভী, বেয়াদপ বাহিনী। এই বাহিনীর আনুগত্য নেই , শৃংখলা নেই , মানবিকতা নেই, নেই দেশ প্রেম।

এটা একটা দেশদ্রোহী অসভ্য হায়েনার বাহিনী। তোমরা পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কথা বল। সারা বিশ্বে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মতো এতো ভদ্র, নম্র, সভ্য, বিনয়ী এ‌বং আনুগত্যশীল বাহিনী খঁজে পাওয়া যাবেনা। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মানবিকতা বোধের কোন তুলনাই চলেনা। কি অসম্ভব সভ্য আর নম্র তারা।

পচিশে মার্চ রাতে তারা ( পাকিস্তান আর্মি) এলো, এসে আব্বাকে (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব) সেলুট করলো, মাকেও সেলুট করলো, আমাকেও সেলুট করলো। সেলুট করে তারা বলল, স্যার আমরা এসেছি শুধু আপনাদের নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য। অন্য কোন কিছুর জন্য নয়। আপনারা যখন খুশি যেখানে খুশি যেতে পারবেন। যে কেউ আপনার এখানে আসতে পারবে।

আমরা শুধু আপনাদেন নিরাপত্তা নিশ্চিত করবো। আপনারা বাইরে গেলে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য আমরা আপনাদের সাথে যাবো। কেউ আপনাদের এখানে এলে আমারা তাকে ভালভাবে তল্লাশি করে তার পর তাকে এখানে ঢুকতে দিব। এসবই করা হবে আপনাদের নিরাপত্তার জন্য। সত্যিই পাকিস্তানী সেনাবাহিনী যা করেছে তা সম্পুর্ন আমাদের নিরাপত্তার জন্য করেছে।

২৬ শে মার্চ দুপুরে আব্বাকে (শেখ মুজিব) যখন পাকিস্তানী বাহিনী নিয়ে যায়, তখন জেঃ টিক্কা খান নিজে এসে আব্বাকে ও মাকে সেলুট দিয়ে আদবের সাথে দাড়িয়ে বলে, স্যার প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান আলোচনার জন্য নিয়ে যেতে বলেছেন। আমি আপনাকে নিয়ে যেতে এসেছি। আপনাকে নেওয়ার জন্য বিশেষ বিমান তৈরি(স্পেশাল ফ্লাইট রেডি) আপনি তৈরি হয়ে নেন এবং আপনি ইচ্ছা করলে ম্যাডাম (বেগম মুজিব) সহ যে কাউকে সঙ্গে নিতে পারেন। আব্বা-মা'র সাথে আলোচনা করে একাই গেলেন। পাকিস্তান আর্মি যতদিন ডিউটি করেছে এসেই প্রথমে সেলুট দিয়েছে।

শুধু তাই নয়, আমার দাদীর সামান্য জ্বর হলে পাকিস্তানীরা হেলিকপ্টার করে টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকা পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছে। জয় তখন আমার পেটে, আমাকে প্রতি সাপ্তাহে সি এম এইচ নিয়ে ওরা চেকআপ করাতো। জয় হওয়ার একমাস আগে আমাকে সি এম এইচ-এ ভর্তি করিয়েছে। ৭১ সালে জয় জন্ম হওয়ার পর পাকিস্তান আর্মিরা খুশিতে মিষ্টি বাটোয়ার করেছে এবং জয় হওযার সমস্ত খরচ পাকিস্তান আর্মিরাই বহন করেছে । আমরা যেখানে খুশি যেতে পারতাম।

পাকিস্তানীরা দুটি জীপে করে আমাদের সাথে যেতো নিরাপত্তার জন্য আমাদের পাহারা দিতো। আর বাংলাদেশের আর্মিরা! জানোয়ারের দল, অমানুষের দল এই অমানুষ জানোয়ারেরা আমার বাবা-মা, ভাই সবাইকে মেরেছে- এদের যেন ধ্বংশ হয়। সুত্র : আমার ফাঁসি চাই (৫৩ ও ৫৪ পৃষ্টা) লেখক : মতিউর রহমান রেন্টু
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।