ধর্মান্ধ মুমিন বান্দাদের লন্ডভন্ড করব ! "ব্যস্ত শহর নিঝুম যখন রাত্রির আগমনে
আলোকোজ্জল সব পথে পথে নামে মায়াবী আঁধার
জোস্না রঙের আলোয় ভেজা প্রতিটি শোবার ঘরে
নর-নারীকে জাগিয়ে রাখে স্বীকৃত সব আদিম যৌনাচার
নিকোটিন বিষে নীলকন্ঠ কেউ কাতরায় ফুটপাতে
খুঁজে খুঁজে ফেরে , ছুঁতে চায় কারো নির্ভরতার হাত
তখন ঘরের ভাঙ্গা দরজায় শিকল টেনে দিয়ে
সোডিয়াম আলোয় শহরের পথে শুরু হয় তার অভিসার"
....
-কষ্টের কবিতা , বিপ্লবের কবিতা এখন ভাল লাগছে না রে । জোস্না নিয়ে একটা সুন্দর কবিতা বল ।
-রোমান্টিক ?
-খারাপ না ।
.
আমরা এখন বসে আছি ছাদে । ও আমার কোমর জড়িয়ে মাথা রেখেছে কাঁধে ।
আকাশ ভরা পূর্ণিমা ঢলে পড়ছে আমাদের শরীরে । আমি আবৃত্তি শুরু করলাম :
.
-"কোথাও কোন শব্দ নেই
ভাঙ্গা ইটের রাস্তাটি বোধহয় খুব বেশী দীর্ঘ নয়
অগ্রহায়নের কুয়াশা ভেজা মাতাল জোস্নায়
সেই পথটিও আর দেখা যাচ্ছে না
আমাদের পদশব্দেও পালাচ্ছে না জংলী জন্তুকীট
শুধু মায়াময় জোছনায় দুটি প্রাণ যেন ছুঁতে চাইছে দুজনাকে......
..............................................বাদল দিনের প্রথম কদমফুলটি গুঁজে দিতে পারিনি তোমার হাতে
তবে আজ আমি হাত বাড়িয়ে দিব, এখনই দিব
এই নিস্তব্ধ জোস্না রাতে কদমফুল দিতে না পারি
তোমার হাত ভরে দেব আমার হাত দিয়ে...."
-সেই অসাধারণ দিনটির কথা তাই না ?
-জ্বি ম্যাডাম । সেদিন এমনই জোস্নায় তোমার হাতে রেখেছিলাম আমার হাত ।
.
ও আরও চেপে বসল । হাতের বাঁধন শক্ত হল আরও ।
.
- সেই যে ধরেছিলাম , জীবনেও ছাড়ব না । তোকে সারাজীবন জ্বালিয়ে মারব । বুঝলি শয়তান ?
- তোর দেয়া যন্ত্রনা তো আমার কাছে শরতের সমীরণ ।
- থাক ন্যাকামো করতে হবে না । এই ছাড় !
- ই...ই...ই... আমি কি তোকে ধরেছি নাকি ? তুই তো আমাকে তখন থেকে চেপে ধরে আছিস ।
- ধরবই তো । তোকে ধরব না তো কাকে ধরব ?
- অবিবাহিতা মেয়ে , এত রাতে অনাত্বীয় ছেলের সাথে বসে আছে । ঈশ্বর কিন্তু তোর উপর ক্ষেপে যাচ্ছে । তুই তো নরকে যাবি !
- নরকে গেলে সাথে তো তুইও যাবি । সমস্যা কি ?
- সেখানে যে আরও উনসত্তরজন থাকবে.....
- ওদের দিয়ে ব্যাবসা করাবি ।
- হা...হা...হা...হা... নাস্তিক প্রেমিকা হইলে এই সমস্যা । আমি তো ভেবেছিলাম....
- তুই কি ভেবেছিলি আমি জানি । তার কোন চান্স নেই জনাব ।
- তাই বুঝি ! হা...হা...হা...হা...
- হাসবি না । খেয়ে ফেলব কিন্তু !
- খেয়ে ফেল না ।
- দিব লাথি ?
- না । চুমু দিতে পারিস ।
- ও..ও...ও..রে.... ! আমার কি ঠেকা পড়ছে । যা বালটা !
- আমি বাল না । আমি তোর শয়তান ।
- চোপ !
- ওকে ।
- একটা গান শোনাবি সোনা ?
- আবার গান ? আমি কি তোর টেপরেকর্ডার ?
- অবশ্যই টেপরেকর্ডার । শোনা না একটা রবীন্দ্রসঙ্গীত...
- তাহলে চুমু দিবি ?
- না । তুই শোনাবি না উঠে চলে যাব ?
- ওকে ওকে ম্যডাম ।
.
জোত্স্না রাতে মাতাল হাওয়া বইছে ।
এসময় কবিগুরুকে না স্মরিলে কি চলে ? আমি শুরু করলাম । "আজি বিজন ঘরে নীশিথ রাতে/আসবে জানি শুন্য হাতে/আমি তাই তে কি ভয় মানি/ জানি বন্ধু জানি তোমার আছে তো হাতখানি/"
.
গান থেমে গেল । পূর্ণিমার চাঁদ এসে দাঁড়াল আমাদের সামনে । আমি ওর মুখের দিকে তাকালাম । কি এক প্রবল প্রশান্তিতে উদ্ভাসিত ওর মুখ ।
ওকে অনেক সুখী মনে হলো । নিস্তব্ধতায় কতক্ষণ কেটে গেল জানি না । জোস্নারানী বিদায় নিতে শুরু করল । ও উঠে দাঁড়াল । আমার হাতটি শক্ত করে ধরে বলল-
"চল" ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।