১.
বলতে পারিস সন্ধ্যে বেলা
আমার কেন এমন লাগে?
দিব্যি দিয়ে বলছি তোকে
ঘুম জোটেনা কুসুম বাগে।
একটা ঘরে একলা ঘুমাই
কান্না নিয়ে গাল ফোলা
নাকের ওপর ঝুলতে থাকে
বাদুর ব্যাটার কলার ঝোলা।
স্বপ্ন যদি আসতো চোখে
পঙ্খিরাজের পাখায় চেপে
ধুত্তরি ছাই ভুলেই যেতাম
দুঃখ দিতাম কবেই মেপে!
২.
ভাঙা পুলের অই দিকটায়
নদীর ধারে ঝোপ আছে না?
একটা শালিখ রোদ দেখেই
মনের সুখে আর বাঁচে না!
বুক সমান এক ছোট্ট গাছে
একটা বাসায় তিনটে ছানা
শালিখ মামা বলল হেসে
তোমার যেতে নেইক মানা।
ছোট্ট ছানা ছোট্ট ছানা
চাইছ কেন পিটপিটিয়ে ?
সামনে মাসে তোমায় দেব
নানুর সাথে ঠিক বিয়ে!
এই খুশিতে ঝোপে ঝাড়ে
গাইছি মিলে গান।
ছোট্ট ছানাও চাইছে খেতে
মহেশখালীর পান।
হঠাৎ দেখি আকাশ থেকে
ছো দিয়েছে পাজি একটা চিল।
মাটি থেকে আমরা সবাই
মারছি ছুড়ে হাজার খানেক ঢিল ।
দেখতে দেখতে পালিয়ে গেল
মেঘ-পাহাড়ের আড়ালে।
সেই দুখেরই কান্না শুনি
পুলের পাড়ে দাঁড়ালে।
৩.
চাচা এল রে চাচা এল
চাবি দিস না ছুড়ে
আমার চাচা কানা ব্যাটা
কপাল যাবে ফুঁড়ে।
ঝোলার ভেতর কি আছে তার
শোন তবে বেশ
একটা ঘোড়া এক লাফেতেই
পার হয়ে যায় দেশ।
দৈত্যটা তো এক থাবাতেই
খেয়ে ফেলে মস্ত পাহাড়।
এটাই নাকি তাদের দেশের
সকাল বেলার জলখাবার।
চাচাই আমার আদু ভাই
নয়তো সে ব্যাক্কেল
এক বসাতেই সাবাড় করে
গন্ডা দুই নারকেল।
চাচার আবার ব্যারাম আছে
দিনের বেলা তাল কানা।
আম্মু বলেন টিভি দেখো
বোকার সাথে খেলতে মানা।
আমায় ছাড়া চাচার যখন
ডুকরে ওঠে বুকের পিলে
দৌড়ে এসে বলি তারে
তুইই আমার ছোট্ট ছেলে।
আম্মু আমার লক্ষ্ণী ছাড়া
বলে কেন আর থাকিসনে ঘরে?
দুদিন বাদে চাচা গেলে
মনটা আমার কেমন যেন করে।
৪.
উতল একটা হাওয়া এসে
চুলগুলো দেয় ঘুড্ডি করে
কার হাতে যে লাটাই থাকে
শীত কালেও হায় বৃষ্টি ঝরে!
চুলের ভেতর বাঁধা ছিল
সাদা রঙের সেই ফিতে
ঘোর বাদলে তারেই দেখি
পথে ঘাটে চমকাতে!
৫.
ধুত্তরি ছাই বিশ্রী লাগে
সবাই আমায় ছোট্ট বলে
আমি কি আর খুকু আছি
খেলতে যাই পাখির দলে।
পাখ-পাখালি কইছে আমায়
নেইক তারা একটু সুখে
যখন তখন সাথী হারায়
পোষ মানা অই বন্দুকে।
বন্দুকটা যে কে বানালো
ভাবছি বসে আজ
ধুত্তরি ছাই এই তো দেখি
বড়দেরই কাজ।
৬.
দাদু বলেন আজব কথা
ঘরের ভেতর ইসকুল
খেলাও নাই মাঠও নাই
সত্যি বলছি বিলকুল।
বস্তা খানেক বই কাধে
মা যায় তার হাতটি ধরে
এত ভারে খুকুটি হায়
মাটির সাথে নুয়ে পড়ে।
ছুটি শেষে দল বেধে সব
ঢুকে পড়ে কোচিং ঘরে
ফিরে এসে অনেক রাত্র
বুলবুলিয়ে কি সব পড়ে।
একটু খানি সুযোগ পেলে
ব্যস্ত থাকে কম্পিউটারে
কোত্থেকে এক বিদ্যা এল
ভূত চাপিল সবার ঘাড়ে।
(আমি বলি) দাদু তুমি দারুণ বোকা
বুদ্ধি থাকলেও নাইক হুশ
আম কুড়ানোর দিন কি আছে?
বোতল ভরা ম্যাংগো জুস!
৭.
অষুধ খেয়ে আম্মু তুমি যেই দিয়েছ ঘুম
ছাদের ওপর শুনতে থাকি ঝুম ঝুমা ঝুম ঝুম।
অষুধ খেয়ে আম্মু তুমি যেই দিয়েছ ঘুম
খাটের নীচে শুনতে থাকি হুম হুমা হুম হুম।
বন্ধ চোখে ভয়েই মরি চোখ খোলা যে দায়
কাঠের ভেতর ঘুন পোকারা শীবের গীত গায়।
পর্দাটাকে নাড়িয়ে দিয়ে কে যেন যে ঢুকলো ঘরে
মোড়ায় বসে আপন মনে একটানা যায় বইটা পড়ে।
কিভাবে যে গেল কেটে বৃষ্টি-ধরা শীতল একটা রাত
আম্মু বলে তোর তো দেখি নানুর মত স্বপ্ন দেখার ধাৎ।
সেই থেকে সে প্রায় রাতেই জানলা দিয়ে এসে
এটা সেটা নেড়ে দেখে খিলখিলিয়ে হেসে।
অষুধ খেয়ে আম্মু তুমি যেই দিয়েছ ঘুম
ভূতের মাসি অমনি করে আমায় দিল চুম।
ভূতের মাসি ভূতের মাসি বাড়ি তোমার কই
‘ঘুমের অষুধ খেয়ে আমি তোমার সাথে রই। ’
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।