আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একা দীর্ঘ পথ (কিছু লেখার চেষ্টা। উপন্যাস না গল্প কনফিউজড )

বাস্তবতা ফেরী করে বেড়াচ্ছে আমার সহজ শর্তের সময়গুলোকে

১. সকাল থেকেই ঝিরঝির বৃষ্টি হচ্ছে। একটু পর থামে, আবার ঝিরঝির করে নামে। বৃষ্টি নাকি মানুষের মনকে নষ্টালজিক করে তুলে। নষ্টালজিক হতে চাইলেও এইমুহুর্তে অনেক কাজ বাকি পড়ে আছে। কাপড় চোপড় সবই অগোছালো।

তারপর অন্যান্য জিনিষপত্রতো রয়েছেই। কম নাকি? দীর্ঘ সাত বছরের ব্যবহার্য্য জিনিষপত্র। কানাডার এই অঞ্চলটার একটা বৈশিস্ট্য হলো হুটহাট বৃষ্টি নামে। বাইরে বৃষ্টি আর ঘরের ভিতর জিনিষপত্র গোছাতে হচ্ছে। রাতেই ফ্লাইট।

তারপর বাংলাদেশের দিকে উড়ে যাওয়া। আহ , মাতৃভুমি বাংলাদেশ। দুর কাজের সময় সঠিক জিনিষপত্র খুজে যাওয়া যায় না। ডায়েরী আবার কোথায় রাখলাম! জীবনানন্দের কবিতার বইটাইবা কোথায়? ধুর এতসব বিষয আগে থেকেই গুছিয়ে রাখা উচিত ছিল। করবো করবো করে করা হয়ে উঠেনি।

এমন সময় কলিং বেলের শব্দ। ধুর ঝিরঝির বৃষ্টির মধ্যে আবার কে এলো? দেখতে হয় এই প্রবাসে কে আমার জন্য এত মায়া দেখাতে আসলো। ওহ তুমি! কেমন আছ লিহান? এতক্ষণ লাগলো দরজা খুলতে? অভিমানী কন্ঠ বেশ পরিস্কার। আসলে এই গোছানোর কাজ টাজ করছিলাম। তাই দেরি হয়ে হয়ে গেল।

সরি ডিয়ার। এত ফরমাল হলে কবে থেকে। নাকি চলে যাবে বলে ফরমাল সাজছো? তুমি কি এতসব প্রশ্ন করার জন্যই বৃষ্টির মধ্যে ভিজে চলে আসছো? আর বলোনা আমার গাড়িটার ড্রাইভারটা নাকি তার গার্লফ্রেন্ডের সাথে কোথায় বেড়াতে যাবে। বাধ্য হয়ে ছুটি দিতে হলো। আর জানইতো আমি নিজে গাড়ি চালাতে তেমন স্বস্তিবোধ করি না।

তাই অগত্যা টেক্সি করেই আসতে হলো। আচ্ছা, ঠিক আছে প্যাচাল বন্ধ করে এইবার আরাম করে বসো। তোমার জন্য এককাপ গরম কফি নিয়ে আসি। সঙ্গে অন্য কিছু খাবে? এই ধরো স্যান্ডউইচ অথবা বার্গার? আরে দাড়াও তুমি আজ চলে যাবে। আর কোনদিন হয়তো তোমার সাথে বসে কফি খেতে পারবো না।

আজকের কফিটা আমিই বানাই। এই দেশে এসে বেশ কিছু রান্নাবান্না করতে শিখেছি। বুঝলে? হুমম.. আচ্ছা তুমি কি সত্যিই সত্যিই চলে যাচ্ছো দেশে? আর কখনোই কি তোমার সাথে আমার দেখা হবে? কখনোই কি হাটা হবে সেই ক্যাম্পাসটায়? মানুষ যে হঠাৎ করেই কিভাবে কেদে ফেলে বুঝি না। এই মুহুর্তে লিহানের চোখে পানি। আমি শান্তনা দেই কিভাবে ভেবে পাচ্ছি না।

আর শান্তনা দিয়েও কি খুব লাভ হবে? আমাকে এখানকার বন্ধন ছেড়ে যেতেই হবে। হয়তো এইখানে থাকলে একটু খুঁজলে একটা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানীতে চাকুরী হয়ে যাবে। ভালো বেতনও পাওয়া যাবে। লিহানের সাথে সম্পর্কটা আরো গভীর হতেও পারে। হয়তো সেটা সংসার পর্যন্ত গড়াতে পারে।

কিন্তু আমার এর কোনটিতেই ইচ্ছা নেই। তারচেয়ে দেশেই ফিওে যাই। পরে অন্য কিছু দেখা যাবে। মেয়েটার চোখে এখনও পানি। আচ্ছা কতো কাঁদতে পারে মেয়েটা? আচ্ছা চলে যাওয়ার দিনটাতে তুমি কেদে কেদে সাগর বানিয়ে ফেলবে নাকি? এমনিতেই সকাল থেকেই বৃষ্টি তার উপর আবার তোমার কান্না।

পানির জন্য শেষ পর্যন্ত এয়ারপোর্টে পৌছাতে পারলেই হয়। কান্নার মধ্যে হেসে দিল লিহান। চোখের জল মুছতে মুছতে ঠিক হয়ে নিল। তুমি পারোও বটে। আমি কতো সিরিয়াস, আর তুমি এটা নিয়ে ফান করছো।

এই যে চলে যাচ্ছো তুমি তোমার কি কোনই কষ্ট হচ্ছে না? (চলবে)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।