আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মন্ত্রী এমপি পুলিশে শিবির আতঙ্ক। হা হা। শিবিরই পারবো পুলিশ লীগকে সামলাতে। পিপার স্প্রে গেলো কই?

মন্ত্রী, এমপি, বিচারক ও সরকারি কর্মকর্তাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের মধ্যে এখন শিবির আতঙ্ক বিরাজ করছে। ছাত্রশিবিরের ঝটিকা মিছিল ও হামলার আশঙ্কায় মাঠপর্যায় দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এখন তটস্থ। শিবির কখন হামলা চালায়-এমন আতঙ্কের মধ্যে দায়িত্ব পালন করছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। জনগণের জানমালের নিরাপত্তার প্রদানের চেয়ে এ মুহূর্তে তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়েই বেশি ব্যস্ত। সম্প্রতি শিবিরের হামলায় বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের উদ্বেগ-উত্কণ্ঠা বেড়ে গেছে।

অতিরিক্ত সতর্কতা নিয়ে মাঠে দায়িত্ব পালন করছে তারা। এ অবস্থায় খোদ ডিএমপি কমিশনার শিবির দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার এ বক্তব্যে দেশে তোলপাড় চলছে। এতে পুলিশের গুলিতে নিরীহ জনসাধারণের জীবননাশের আশঙ্কা রয়েছে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। সম্প্রতি শিবিরের তত্পরতায় রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

মন্ত্রী, এমপি, সচিব, বিচারক, সরকারি কর্মকর্তা, পুলিশ, র্যাব ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। প্রত্যেককে নিজ নিজ অবস্থানে থেকে অতিরিক্ত সতর্কতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়েছে। যে কোনো ধরনের হামলা এড়াতে সচিবালয়, কূটনৈতিক জোন ও রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। এ পরিস্থিতিতে গতকাল ডিআইজিসহ ৭২ পুলিশ কর্মকর্তাকে বদলি ও পদোন্নতি দেয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত সোমবার শিবিরের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বাধা দেয়ায় সচিবালয়, রাজধানীর মতিঝিল, তেজগাঁও, লালবাগ এলাকায় পুলিশের ওপর ছাত্রশিবিরের কর্মীরা অতর্কিতে হামলা চালায়, গাড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে।

এরই ধারাবাহিতায় গতকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ককটেল বিস্ফোরণ, ভিক্টোরিয়া পার্কের সামনে বাসে আগুন দেয়ার পর রাজধানীজুড়ে পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে বলে পুলিশের ঊর্ধ্বতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন। বিশেষ করে ঢাকায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বেষ্টিত প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয় এলাকায় ৩ সচিব ও অর্থমন্ত্রীর প্রটোকল গাড়ি, বিআরটিসির দোতলা বাস ও পুলিশের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুর করা হয়। এ ঘটনার পর প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন। তিনি সচিবালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা আরও জোরদার করার নির্দেশ দেন। এরপরই পুলিশের উচ্চ পর্যায়ে বৈঠক করে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও স্থাপনার নিরাপত্তা আরও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় বলে জানা গেছে।

সূত্র জানায়, যুদ্ধাপরাধ মামলায় জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযম, বর্তমান আমির আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল কামারুজ্জামান, এটিএম আজহারুল ইসলাম, আবদুল কাদের মোল্লা ও মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাইদীসহ জামায়াতের শীর্ষ নেতারা এখন কারাগারে। জামায়াত নেতাদের গ্রেফতারের পর শিবিরের কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের নেতাদেরও আটক করা হয়। এরই মধ্যে একটি মামলায় যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনাল জামায়াতের সাবেক নেতা মাওলানা আবুল কালাম আযাদের ফাঁসির রায় দেয়। যেকোনো মুহূর্তে ঘোষণা করা হতে পারে মাওলানা সাঈদী ও আবদুল কাদের মোল্লার মামলার রায়। শিবির আতঙ্ককে পুুঁজি করে গোয়েন্দা সূত্রগুলো সরকারকে জানিয়েছে যে বিচার বাধাগ্রস্ত করতে জামায়াত-শিবিরকর্মীরা হামলা চালাতে পারে।

গোয়েন্দাদের ধারণা, শিবিরের পরবর্তী টার্গেট এখন মন্ত্রী, সরকারদলীয় সংসদ সদস্য ও সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। দেশের আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দিয়ে দলের শীর্ষ বন্দী নেতাদের মুক্তির এজেন্ডা নিয়ে মাঠে নেমেছে তারা। গতকাল ভোর থেকে বঙ্গভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সচিবালয়, সংসদ ভবন, আদালত এলাকা, বিমানবন্দর, কূটনৈতিক জোনসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। এসব স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ও গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। বসানো হয়েছে একাধিক চেক পোস্ট।

নগরীর কিছু চিহ্নিত এলাকায় উঁচু ভবনের ছাদে দূরবীক্ষণ যন্ত্র নিয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা পর্যবেক্ষণ করছে। ফ্লাইওভারগুলোতে মোবাইল ডিউটি করছে পুলিশ ও গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। নিরাপত্তা বাহিনীর ধারণা, উঁচু ভবন ও ফ্লাইওভারের ওপর থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে হামলা চালানো হতে পারে। এছাড়া নগরীর বিভিন্ন সড়কে চেক পোস্ট স্থাপন করে সন্দেহজনক কোনো যানবাহন দেখলে থামিয়ে তাতে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। গুলশানে বিভিন্ন দূতাবাসের সামনে অতিরিক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

সচিবালয়ের চারপাশে তারকা হোটেলের সামনে এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোর সামনে পুলিশ ছাড়াও সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এছাড়া রাজধানীর প্রবেশমুখ, পুরানা পল্টন, মতিঝিল, বায়তুল মোকাররম ও মগবাজারে জামায়াতের কেন্দ্রীয় অফিস এলাকায় পুলিশ ও গোয়েন্দাদের তত্পরতা বাড়ানো হয়েছে। পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, সোমবার পুলিশের ওপর ঝটিকা হামলার পরই পুলিশকে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। তাই চোরাগুপ্তা হামলা প্রতিরোধে প্রস্তুত রয়েছে পুলিশ। ডিবির ডিসি মনিরুল ইসলাম জানিয়েছেন, গত সোমবার শিবিরের ঝটিকা মিছিল ও হামলা চালানোর খবর আগে থেকেই ছিল।

তাই ওদিন সকাল ৭টা থেকেই পুলিশ ব্যাপক তত্পর ছিল। এ কারণে শিবিরের ব্যাপক প্রস্তুতি থাকলেও আইনশৃঙ্খলা বহিনী তা রুখে দিতে সক্ষম হয়। তিনি বলেছেন, পুলিশের মনোবল ভেঙে দিতে শিবির পরিকল্পিতভাবে এ হামলা চালিয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার বেনজীর আহমেদ বলেছেন, জামায়াত-শিবির তাদের বেশভূষা এবং আক্রমণের ধরন পরিবর্তন করায় তাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.