আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নাটক: অন্ধকারের গল্প



নাটক: অন্ধকারের গল্প শুধী দর্শক শ্রোতা অন্ধকারের গল্প মূলত অন্ধকারে ঘটে যাওয়া কোনও গল্পকাহিনী নয়, বরং যেসব কাহিনী অনধকারে চাপা পড়ে গেছে সেসবের উদ্বোধন। আমাদের সমাজে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যা আমরা তাক্ষণিকভাবে সহ্য করতে পারি না, অথচ কালের আবর্তে আমরা তা ভুলে যাই। আমরা হাসি খেলি বাঁচি, নতুন করে কিন্তু থেকে কারও কারও জন্য বেদনাময় কিছু স্মৃতি। থেকে যায় ঘটনার গভীর দাগ। আমরা তেমনি কিছু ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরবো ধারাবাহিকভাবে।

আজ থাকছে.... ধর্ষিতা পুতুলের গল্প। পুতুলের সত্যিকারের নামটি প্রকাশ করা সম্ভব হলো না, কারণ... কারণ আপনারা সবাই জানেন। ধর্ষিতার ছবি বা নাম প্রকাশে তার কোনও উপকারতো নাই বরং এসব সংবাদ তাকে বাস্তব পৃথিবী থেকে আড়াল হতে বাধ্য করে, বাধ্য করে আত্মহননের পথ বেছে নিতে। তবে পুতুল ওরই নাম। নামটি আমার দেওয়া।

আমি এবং আমার সঙ্গে আরও দুয়েকজন ওকে এই নামেই সম্বোধন করে। সাধারণে প্রচলিত নয়। পুতুলের বয়স তখন ছয় কি সাত। বাংলাদেশে তখন শুরু হয়েছে ২২ বছর ধরে সাধনারত একটি দলের শাসন ক্ষমতা। আর তাতে হঠাৎ করেই রাতারাতি কিছুলোকের ভাগ্যও পরিবর্তিত হয়ে গেল।

চালচলনে এলো দাপট। অন্যদের ভীতি প্রদর্শন এর এইটা আর ওর সেইটা কেড়ে নেবার প্রতিযোগিতা। সাজমুল সেই গ্রুপের একজন। ওকে সবাই চিনত হাতুড়ি সাজমুল হিসেবে। সাজমুলের বাবা একজন সরকারি চাকুরে।

জি.কে প্রজেক্ট ভেড়ামারা ব্্রাঞ্চের অধস্তন ইলেক্ট্রিশিয়ান। সরকারি কলোনীতে ছিল তাদের আবাস। এই কলোনীতেই পাশাপাশি থাকত পুতুলের পরিবার। ছোট্ট পুতুল তখন পুতুল নিয়ে খেলত। ইশকুল থেকে এসে এ বাড়ি ও বাড়ি ঘুরে বন্ধু সংগ্রহকরে খেলতে বসতো।

সেইদিন তার একই রুটিন ছিল। হঠাৎ সাইকেলচেপে সাজমুল আসে। মামা মামা করে ওর কাছে ছুটে যায় পুতুল। পুতুলকে নিয়ে ঘরের ভেতর ঢোকে সাজমুল। কিছু একটা খেতে দিয়ে নানাভাবে আদর করে পুতুলের মতো মেয়ে পুতুলকে।

তারপর... এর পরের অংশটুকু পুতুল যেভাবে বলেছে তাতে সভ্যসমাজের মানুষের কাছে প্রকাশ করা সম্ভব না। ডাক্তারের কাছে দৌড়াদৌড়ি, স্যালাইন, ব্লাড ইত্যাদি করে দুইদিন পর বাসায় নিয়ে আসা হয় পুতুলকে। সাজমুল তখন গাঢাকা দিয়ে আছে। আর পুতুলের বাবাÑমা পুতুলের চে বেশি চিন্তিত লোকসমাজে তার মান সম্মানের কথা ভেবে। পরহিতকারী সুশীল সমাজের মান্যিগণ্যিরা পরামর্শ দিলেন এটা বাড়াবাড়ি করে কোনও লাভ নেই।

স্রেফ শিশুনির্যাতন আইনে কিছুটা শাস্তি হতে পারে। কিন্তু তাতে মানসম্মান আরও ডুববে। তবু কারও কারও পরামর্শে থানা পর্যন্ত গিয়েছিল পুতুলের বাবা। কিন্তু কী বিচার পেল তা নিশ্চই আমরা জানি! সাজমুলের বাবা ও সাজমুল আওয়ামীলীগের নির্বাচনী কাব করে নিজেদের বড় নেতা বানিয়ে নিয়েছিল, এখন দল ক্ষমতায় অতএব কে করে কার বিচার! পুতুল এখন অনেক বড় হয়েছে। সৌন্দর্যে যে কাউকে কাছে টানতে পারে।

ওকে এখন পুতুল ডাকতে আমারই লজ্জা হয়। সবকিছুই হয়ত ঠিক আছে, হয়ত ঠিক হয়ে যেত, শুধু কথাবলার শক্তিটা ওর ফিরে এলো না পুরোপুরি। তোতলামির ভাবটুকু আর সমাধান হয়নি। সাজমুল বিয়ে করেছে, ওর ঘরেও এসেছে একটি ফুটফুটে মেয়ে, সেও এখন বেশ বড় হয়েছে আমরা জানি না তার ভাগ্যে কী ঘটবে। শুধু জানি পাপ ছাড়ে না তার বাপকেও!


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.