আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বায়ান্ন-পূর্ব সিলেটে ভাষা আন্দোলন



বায়ান্ন-পূর্ব সিলেটে ভাষা আন্দোলন সুকেশ চন্দ্র দেব ------------------------------------ একুশে ফেব্রয়ারি সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃত। জাতিসংঘ একুশে ফেব্রচ্ছারিকে এই স্বীকৃতি প্রদান করে যেমন বাঙালি জাতির সংগ্রামী ঐতিহ্যকে সম্মানিত করেছে তেমনিই স্বীকৃতি দিয়েছে পৃথিবীর সকল জাতিসত্তার ভাষার অধিকার তথা সংস্কৃতির অধিকারকে। আর এই স্বীকৃতির মধ্যদিয়েই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে সমস্ত অন্যায়, অবিচার ও শোষণের বির"দ্ধে পৃথিবীব্যাপী মানুষের সংগ্রামের ইতিহাসকে। ১৯৫২ সালের মহান একুশে ফেব্রচ্ছারি মাতৃভাষা আন্দোলনের যে চূড়ান্ত পর্ব, তার পথ বয়ে ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি জাতির প্রথম জাতিরাষ্ট্র স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্বে সিলেটবাসীর রয়েছে এক গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা আর এই ভূমিকার পেছনে রয়েছে বায়ান্ন পূর্ব সিলেটে ভাষা আন্দোলনের উদ্ভব ও বিকাশ।

মধ্যযুগের শেষার্ধে যে কজন বাঙালি কবি বাংলাকে কাব্য রচনার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন তাদের মধ্যে সিলেটের অন্যতম কবি সৈয়দ সুলতান। সৈয়দ সুলতানকে নিয়েও কম টানাহ্যাঁচড়া হয়নি। অবশেয়ে গবেষণায় পরিশুদ্ধ হয়ে ‘হবিগঞ্জের গৌরব’ হিসেবে তিনি স্বীকৃতি লাভ করেছেন। কবি সৈয়দ সুলতান সাহসিকতার সঙ্গে লেখেন, ‘যারে যেইভাবে প্রভু করিল সৃজন/সেই ভাষ হয় তার অমূল্য রতন’। মাতৃভাষাকে অমূল্য রতন আখ্যায়িত করার মাধ্যমে বাংলা ভাষার প্রতি সৈয়দ সুলতানের গভীর মমত্ববোধ ফুটে উঠেছে।

পরবর্তীকালেও মাতৃভাষার প্রতি সিলেটের কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী ও রাজনীতিবিদদের নিষ্ঠার পরিচয় পাওয়া যায়। ১৯০৯ সালে সিলেটের একজন বিশিষ্ট চিন্তাবিদ মৌলভী হামেদ আলী সুস্পষ্টভাবে বলেন, ‘আমাদের পূর্বপুর"ষ আরব, পারস্য, আফগানিস্তান অথবা ভারতের অধিবাসীই হোক, আর এতদ্দেশবাসী হিন্দুই হোক, আমরা এক্ষণে বাঙালি-আমাদের মাতৃভাষা বাংলা’ (দুমুখী লড়াই আমরাই বাঙালি, এস আর আখতার মুকুল, পৃষ্ঠা ২০, প্রকাশকাল ১৯৯২) ১৯১১ সালে ধনবাড়ির জমিদার আসাম ও বঙ্গীয় আইনসভার এককালের সদস্য নওয়াব আলী চৌধুরী রংপুর প্রাদেশিক শিক্ষা সম্মেলনে উপমহাদেশের অন্যতম ভাষা হিসেবে বাংলা ভাষার গুর"ত্বের কথা উল্লেখ করেন এবং জাতীয় পর্যায়ে এর স্বীকৃতির জন্য আহ্বান জানান। ১৯২১ সালে রাষ্ট্রভাষা প্রসঙ্গে আলোচিত হলে তিনি বাংলাকে এতদঞ্চলের রাষ্ট্রভাষা করার দাবি উত্থাপন করেন (ভাষা আন্দোলন ১৯৪৭ ও ১৯৫৬ দৈনিক বাংলা, ২১ ফেব্রচ্ছারি সংখ্যা ১৯৯৭ এ বি এম শামসুদ্দীন আহমদ) বাঙালি মুসলমানদের মাতৃভাষা বাংলা এই সত্যটি প্রতিষ্ঠিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশ বিভাগের আগেই বাংলাকে সরকারি ভাষা এবং রাষ্ট্র ভাষা করার প্রশ্নটি সামনে আসে। ১৯২৭ সালে সরকারি ভাষা হিসেবে বাংলার দাবি জোরালোভাবে উচ্চারণ করেন সিলেটের রাজনীতিবিদরা। এ বছর তৎকালীন আসাম প্রদেশের অন্তর্গত সিলেট জেলার এমএলএ গণসংসদে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার প্রতিষ্ঠা করেন।

এ বছর একটি আপিল মামলা নিষ্পত্তি বিষয়ক প্রস্তাবকে কেন্দ্র করে বাংলা ভাষা প্রশ্নটি নিয়ে আসাম প্রাদেশিক ব্যবস্থাপনা পরিষদে বিতর্ক দেখা দেয়। পরিষদে দোষী একজন পুলিশ কর্মকর্তার বরখাস্তের দাবি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব সিলেট থেকে নির্বাচিত পরিষদ সদস্য গোপালগঞ্জের রনিকেলি গ্রামের আবদুল হামিদ চৌধুরী বাংলা ভাষায় পেশ করেন এবং এ বিষয়ে সরকারি সিদ্ধান্ত জানতে চান। কিš' যেহেতু বাংলা ভাষায় প্রশ্ন করলে উত্তর দেওয়ার বিধান আইনে ছিল না তাই সরকার পক্ষ উত্তরদানে বিরত থাকে। এ ঘটনা সিলেট থেকে নির্বাচিত সদস্যদেরকে প্রতিবাদমুখর করে তোলে। তারা প্রত্যেক সদস্যের মাতৃভাষায় বক্তৃতাদানের অধিকারসহ সরকার পক্ষ থেকে প্রস্তাবের জবাবদানের বিধান তৈরি করার দাবিতে দৃঢ় অবস্থান গ্রহণ করেন।

এ নিয়ে পরিষদে দেড় ঘণ্টাব্যাপী বাকবিতণ্ডা চলে এবং পরে সদস্য আব্দুল হামিদ চৌধুরী বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখার সুযোগ লাভ করেন। তখন থেকে আসাম ব্যবস্থাপনা পরিষদের বাংলা বক্তব্য রাখার এবং প্রশ্ন উত্থাপন করার অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। পরিষদ সদস্য আব্দুল হামিদ চৌধুরীর সঙ্গে এ বিষয়ে গুর"ত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন গোপেন্দ্র লাল চৌধুরী ও রাজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী প্রমুখ সদস্য। (সিলেটের দুশ বছরের আন্দোলনÑ তাজুল মোহাম্মদ ১৯৯৫ পৃষ্ঠা ৪১-৪২) ১৯৩৮ সালের ৫ ডিসেম্বর আসাম বিধান সভায় প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন সংক্রান্ত একটি বিলের আলোচনা পর্বে স্বাস্থ্যমন্ত্রী রামনাথ দাস একটি প্রশ্নের জবাব ইংরেজিতে প্রদান করলে মওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী এর প্রতিবাদ করলে তার পক্ষ সমর্থন করে সিলেট সদর (দক্ষিণ) থেকে নির্বাচিত সদস্য স্পিকার বসন্ত কুমার দাস বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখার জন্য মন্ত্রীকে অনুরোধ করে বাংলা ভাষার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করেন। মন্ত্রী অপারগতা প্রকাশ করলে স্পিকার বসন্ত কুমার দাস মন্ত্রীর ইংরেজি জবাব বাংলায় অনুবাদ করে দেন (বাংলা ভাষার পক্ষে মওলানা ভাসানী, বসন্ত কুমার দাস ও ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত, সৈয়দ আবুল মকসুদ, আজকের কাগজ, ২৪ এপ্রিল সংখ্যা, ১৯৯৮ সাল) ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভক্ত হয়ে পাকিস্তানের জন্ম হওয়ার মাত্র ৩ মাসের মাথায় ১৯৪৭ সালের ৯ নভেম্বর সিলেট কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদ ‘পাকিস্তানের রাষ্ট্র ভাষা’ শীর্ষক এক আলোচনা সভার আয়োজন করে।

এ আলোচনা সভাই আমাদের ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসে প্রথম আনুষ্ঠানিক আলোচনা সভা। বিশিষ্ট সাহিত্যিক মতিন উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তৎকালীন শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা মুসলিম চৌধুরী। মুসলিম চৌধুরী পঠিত প্রবন্ধের ওপর সারগর্ভ আলোচনা করেন মৌলভী সৈয়দ আমির"ল ইসলাম, হেনা দত্ত (হেনাদাস), মাওলানা ছখাওয়াতুল আম্বিয়া, মৌলভী সয়ফুল আলম খান, মাওলানা কাজী বদর"দ্দীন হায়দার, মৌলভী হানিফ লস্কর, মৌলভী সিরাজুল ইসলাম, সৈয়দ আব্দুল মালেক, কবি মহিউদ্দিন প্রমুখ। মুসলিম চৌধুরী তার দীর্ঘ প্রবন্ধের উপসংহারে লেখেনÑ ‘পূর্ব পাকিস্তান রাষ্ট্রভাষা হইবে বাংলা। পশ্চিম পাকিস্তানের কোন ভাষা গৃহীত হইবে এ নিয়া মাথা ঘামাইবার আবশ্যক।

আমাদের এই মাতৃভাষা ছাড়া অন্য কোন ভাষা আমাদের শিক্ষার বাহন হইতে পারে না। যতোদিন পর্যন্ত বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান, দর্শন ও ধর্ম প্রভৃতি বিষয়ক গ্রন্থাদি যথেষ্ট পরিমাণ অনূদিত ও রচিত না হইয়াছে ততোদিন পর্যন্ত বাংলা ও ইংরেজি এই দুই ভাষায়ই পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রের কাজ চলিবে। প্রতিভাশালী লেখক ও আরবি, ফরাসি ভাষার অভিজ্ঞ বাংলার আলেমগণকে কালবিলম্ব না করিয়া প্রয়োজনীয় বাংলা গ্রন্থ রচনার কাজে আত্মনিয়োগ করিতে বিনীত অনুরোধ জানাইতেছি। ’ (আল ইসলাহ, ৬০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী সংখ্যা, পৃষ্ঠা ১২১) রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে মুসলিম সাহিত্য সংসদের অন্যতম আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৪৭ সালের ৩০ নভেম্বর সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা হলে। প্রখ্যাত সাহিত্যিক সিলেটের কৃতী সন্তান সৈয়দ মজুতবা আলীকে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা উর্দু হবে না বাংলা হবে এর ওপর আলোচনার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়।

উক্ত আলোচনা সভাকে বানচাল করার জন্য বাংলা ভাষা বিরোধী কতিপয় নেতা চেষ্টা চালিয়েও ব্যর্থ হন। রস সাহিত্যিক মতিন উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সারগর্ভ প্রায় ৩ পৃষ্ঠার ভাষণটি ‘আল-ইসলাহ’ ১১ বর্ষ ৭ম-১২শ সংখ্যা ‘পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা’ শিরোনামে প্রকাশিত হয়। এ ছাড়া এ ঐতিহাসিক ভাষণটি কলকাতার ‘চতুরঙ্গ’ পত্রিকায়ও প্রকাশিত হয়। ১৯৪৮ সালে ২৩, ২৪, ২৫ ফেব্রচ্ছারি ও ২ মার্চ গণপরিষদের অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কুমিল্লার সদস্য ধীরেন্দ্র নাথ দত্ত গণপরিষদে ইংরেজি ভাষার পাশাপাশি বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখার প্রস্তাব করেন।

কিš' নাজিম উদ্দিন এ প্রস্তাবের বিরোধিতা করলে কলকাতায় অনুষ্ঠিত যুব সম্মেলনে যোগদানকারী সিলেটের আখলাকুর রহমান ও হাজেরা মাহমুদ এক বিবৃতি দিয়ে নাজিম উদ্দিনের বিরোধিতার প্রতিবাদ করে ধীরেন্দ্রনাথ দত্তকে অভিনন্দন জানান। ধীরেন্দ্রনাথ দত্তের দাবি প্রত্যাখ্যান হলে ঢাকায় ছাত্র-জনতা আন্দোলনে নামে। এ সময় গঠিত হয় ‘রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ’। পরিষদ ১১ মার্চ দেশব্যাপী ধর্মঘট আহ্বান করে। সিলেটেও পীর হাবিবুর রহমানকে আহ্বায়ক করে সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ গঠিত হয়।

মার্চের শুর"তেই সিলেটে চলতে থাকে হরতালের প্র¯'তি। এ উপলক্ষে বড়ো ধরনের কর্মসূচি হিসেবে ১৯৪৮ সালের ৮ মার্চ সিলেটের গোবিন্দ পার্কে (বর্তমান হাসান মার্কেট) তমদ্দুন মজলিস এবং সিলেট জেলা মুসলিম ফেডারেশনের উদ্যোগে এক সভার আয়োজন করা হয়। মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে সভা শুর" হওয়া মাত্র মুসলিম লীগের প্রতিক্রিয়াশীল অংশের হামলায় সভা পণ্ড হয়ে যায়। এই ঘটনার প্রতিবাদে আন্দোলনকারীরা ১০ মার্চ প্রতিবাদ সভা আহ্বান করলে সরকার সিলেটে দুই মাসের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করে। ৮ মার্চ সভার দুই আহ্বায়ক অহিদুর রহমান ও আব্দুস সামাদ আজাদ একটি প্রতিবাদলিপি নওবেলালে পাঠান এবং তা ছাপা হয়।

সরকার ও মুসলিম লীগের বাধা সত্ত্বেও ১১ মার্চ সিলেটে সফলভাবে হরতাল পালিত হয়। ১৯৪৯ সালের ডিসেম্বর মাসে সুনামগঞ্জ কলেজে ভাষা সংক্রান্ত একটি সভা হয়েছিল বলে ‘ভাষা আন্দোলনে সুনামগঞ্জ’ প্রবন্ধের লেখক হাজেরা খাতুন উল্লেখ করেন। এ সভার আহ্বায়ক ও সভাপতি ছিলেন কলেজ ছাত্র আব্দুল মতিন। সভা শুর" হতে না হতেই পুলিশি আক্রমণে সভা পণ্ড হয়ে যায়। সভা থেকে পুলিশ সুনামগঞ্জের ভাষা আন্দোলনের নেতা হোসেন বখতকে গ্রেপ্তার করে।

বিচারে তার ৬ মাসের জেল হয়। এদিকে ১৯৪৮ সালের শুর" থেকেই সিলেটের নারী সমাজ বিভিন্ন তৎপরতার মাধ্যমে ভাষা আন্দোলনে অবদান রাখেন। ১৯৪৮ সালের ১১ জানুয়ারি পাকিস্তান সরকারের যোগাযোগ মন্ত্রী আব্দুর রব নিশতার সিলেটে এলে স্থানীয় মহিলাদের একটি প্রতিনিধিদল তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার জোরালো বক্তব্য তুলে ধরেন। এদের মধ্যে জোবেদা খাতুন চৌধুরী, শাহেরা বানু, সৈয়দা লুৎফুন্নেছা খাতুন, সৈয়দা নজিবুন্নেছা খাতুন ও রাবেয়া খাতুন ছিলেন অন্যতম। মহিলারা মুখ্যমন্ত্রী খাজা নাজিম উদ্দিন বরাবরে একটি স্মারকলিপি প্রেরণ করেন।

ভাষার দাবিতে মহিলারা ১৯৪৮ সালের ১০ মার্চ এক সভা করেন। কিš' সভা শুর"র কিছুক্ষণের মধ্যে সিলেটের ডিসি ১৪৪ ধারা জারি করে সভা বন্ধ করে দেন। সিলেটের উলেমা এবং ধর্মীয় নেতৃবৃন্দও বাংলার পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন। জমিয়ত-ই-উলেমা-ই-ইসলামের উদ্যোগে রাজনগর থানার মুন্সিবাজারে এক সভা হয়। এ সভায় পাকিস্তান সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করে এই মর্মে প্রস্তাব গৃহীত হয় যে, পশ্চিম পাকিস্তানের সরকারি ভাষা হবে উর্দু এবং বাংলা হবে পূর্ব পাকিস্তানের ভাষা।

এ ছাড়া বাংলা ও ইংরেজি হবে পশ্চিম পাকিস্তানের যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা সরকারি ভাষা। একইভাবে উর্দু ও ইংরেজি হবে পূর্ব পাকিস্তানের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ভাষা (সিলেট ইতিহাস ও ঐতিহ্য, পৃষ্ঠা ১৯০) সিলেট থেকে প্রকাশিত সাপ্তাহিক ‘নওবেলাল’ ও কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের মুখপত্র ‘আল-ইসলাহ’-এর বায়ান্ন-পূর্ব সিলেটে ভাষা আন্দোলনে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সুকেশ চন্দ্র দেব : লেখক। ----------------------------------- ভোরের কাগজ / ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০০৮

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।