আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

= এবার বোধ হয় চাঁদকে নিয়ে লেখার সময় এসেছে

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

'আয় আয় চাঁদ মামা টিপ দিয়ে যা চাঁদের কপোলে চাঁদ টিপ দিয়ে যা। " আম্মুর মুখে শোনা এই ঘুম পাড়ানী গানেই বোধহয় প্রথম চাঁদকে মামা হিসেবে চিনেছি। তারপর দাদীর মুখে চরকী কাটার গল্প শুনে চাঁদকে বুড়ি হিসেবে চিনেছি; যদিও মনে করে নিয়েছিলাম যে, দাদী বুড়ি ছিলেন বলেই চাঁদ মামাকে বুড়ির সাথে তুলনা করেছেন। তারপরও চরকীটা দেখার কি দারুন ইচ্ছে। হেমন্তের ধানকাটা দিনে খড়ের গাদায় মাগরিবের নামাজের পর আমাদের এক দফা কুস্তি প্রতিযোগিতা হয়ে যেত, রেফারী থাকতেন শহুরে পড়ুয়া ছোটমামা।

কারণ, বাজারের টেলিভিশনে কুস্তি দেখা আমাদের জন্য তখন বৈধতা পেয়েছিল, নাটক-সিনেমা বা খবরের জন্য ছিল কঠোর নিষেধ। তারপর পড়াশোনার ফাঁকে অথবা ছুটির আগেরদিন রাতে উঠোনে শুকোতে দেয়া খড়ের বিছানায় বসে বসে বড়রা যখন গাল-গল্পে মেতে থাকতেন, তখন শুয়ে শুয়ে আমি আকাশ দেখতাম, খুউব গভীরভাবে লক্ষ্য করে বুঝতে চেষ্টা করতার চাঁদ মামা কিংবা বুড়িটি কিভাবে একটু একটু করে পূর্ব দিগন্ত থেকে পাড়ি দিয়ে পশ্চিমের অন্ধকারে হারিয়ে যায়। এসব গবেষণাগুলোর ফলাফল  আবার আমার পিচ্ছি বন্ধুদের শোনাতাম। আর রাতের আকাশের তারাগুলোর সাথে পরিচিত হতাম মেঘমুক্ত সেই হেমন্ত অথবা বসন্তের প্রথম দিকেই, কেননা অন্যান্য ঋতুগুলোতে হয় বৃষ্টি অথবা শীত অথবা সেঁতসেঁতে ভাব থাকত। ভোরের সূর্যোদয়ে হলুদ-গোলাপী আর সোনালী আকাশ দেখতে আমার দারুন ভাল লাগতো, তাই তো খুব ছোট্ট বেলায় খুব সকালে নানার ফজরের আযান শুনে উঠে গিয়ে দহজিলে থাকা নামাজের টঙ-এ গালে হাত দিয়ে বসে বসে সূর্যোদয় দেখতাম, যতক্ষণ না সে উত্তাপে বিরক্ত করত।

মাঝে মাঝে বিকেলের পূর্বাকাশে শিমুল তুলোর মত পুঞ্জিভূত মেঘেদের বেড়ে উঠা দেখতাম, খুউব ইচ্ছে হত মেঘেদের সাথে, মেঘেদের দেশে উড়ে বেড়াতে। উড়োজাহাজে যাতায়াতের সময় কথাগুলো অনেক মনে পড়ে যায়। রঙধনুর কথা আর নাইবা বললাম, কেননা ওরা ঝিঙে ফুল ফোটা বিকেলে হঠাৎ হঠাৎ এসেই চলে যেত। অবশেষে এলো শহুরে দিনকাল, ধোঁয়া-ধুলি আর হৈচৈয়ের মাঝে হারিয়ে যেতে চাইতো আমার আকাশ দেখা, চাঁদ দেখা। কিন্তু প্রিয়কে কি কেউ হারাতে পারে? ঢাকার দিনগুলোতে, তারপর লোহিত সাগর তীরের দিনগুলোতেও আমি মাঝে মাঝেই আকাশ দেখতাম, সাগর তীরে বসে সাগরের সাথে আকাশের তুলনা করে ভাবতাম কাকে বেশী ভালবাসি? আজো চলার পথে, লোকারণ্যে কিংবা একাকী আমি মাঝে মাঝে আকাশে তাকাই; তখন পেছনের লোকটি হয়ত ভাবে- আধা....., কবি....., ভাবুক....., আমি লজ্জা পাই না, থেমে যাই না, আকাশটা খুব পছন্দ হলে পকেট থেকে গরীব মুঠোফোনটা নিয়ে ধরে রাখি প্রিয় আকাশকে, প্রিয় মুহূর্তকে; অন্তরে আর চিত্রনে।

ব্লগের এই সুন্দর প্রায়, শালীন পরিবেশে আজ হঠাৎ চাঁদ নিয়ে, আকাশ নিয়ে ভাবনাগুলো লিখতে ইচ্ছে করল, তাই লিখলাম। ভাল লাগতো সকল ব্লগ লেখকগণ যদি কাদাছোঁড়াছুঁড়ি রেখে সুন্দরের চর্চা করতেন......। কবিতা মনে এসে গেলো: "রাজ পথ উত্তপ্ত হয়ে উঠুক দাবী আদায়ের কথাতে সংগ্রামে, সংঘাতে আর গতিতে আমি শুধু মনের আকুতি গুলো টেনে আনবো স্মৃতিতে আর লিখে যাবো এ আন্তর্জালীয় ব্লগের পাতাতে। " -  শুভ ব্লগিং 09.01.2008, মদীনা মুনাওয়ারা, সৌদি আরব। ছবি: নিজস্ব।

রিয়াদে একমাস অবস্থানকালীন সময়ে যখন রাত্রি জেগে কবিতা লিখতাম, তখনকার কোন এক রাতে তোলা চাঁদের ছবি। ছবি লিংক।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।