আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সকল অসহায়দের সুবিচার কামনা করছি। এ দেশে কি তা সম্ভব?

আসুন আমরা ভন্ডমুক্ত সমাজ গড়ি। ভন্ডরা বন্ধু হলেও পরিত্যাজ্য। এরা সমাজের বিষাক্ত কীট্!

আজ থেকে প্রায় অনেক বছর আগে একটি দৈনিক পত্রিকায় নিউজ পড়তে পড়তে হঠাত্ করে আমার চোখ আটকে যায়। আমি বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাই। নড়াচড়া করার শক্তি হারিয়ে ফেলি।

একজন অসহায় নারীকে একদল সন্ত্রাসীরা ঘরের বেড়া কেটে তাকে ধর্ষন করার পরে তার গোপনাঙ্গে ধান কাটার কাঁচি ঢুকিয়ে দিয়ে চলে যায়। আমার শিশুমনে এ ঘটনা প্রচন্ডভাবে নাড়া দেয়। আমি ভয়ে শিউরে উঠি। একটু ভাবুন কতটা পাষন্ড ,বর্বর ,অসভ্য ও ইতর ওরা। একদল মানুষ কতটা পশু হলে এইরকম জঘন্য কাজ করতে পারে।

কতটা মানসিক ও শারিরীক যন্ত্রনা ঐ মহিলাকে সহ্য করতে হয়ছিল। বিভিন্ন কারনে আমি আর এ ব্যাপারে ফলোআপ করতে পারিনি। আমি আসলে হয়তবা অবচেতনভাবে আর খবর নিতে চাইনি। কারন আমি এ ঘটনা মানসিক ভাবে গ্রহন করতে পারিনি। আজও আমার শরীর কাঁটা দিয়ে উঠে।

এরপর বয়স বাড়ার সাথে সমাজের বিভিন্ন অসংগতি চোখে পড়তে থাকে। একের পর এক এসিড সন্ত্রাস ,ধর্ষন খুনের ঘটনা প্রতিদিন খবরের কাগজে পড়তে পড়তে আমিও যেন এক রোবটে পরিতত হয়ে যাই। এরও অনকদিন পরে উচ্চশিক্ষার্থে সিডনীতে চলে আসার পরে একই রকম আরেকটি ঘটনা আমাকে নাড়া দেয়। আমার মনের আকাশের সবকিছু ওলোট-পালট হয়ে যায়। আর সেটি হল রাহেলার ঘটনা।

যে সমাজে একজন মানুষ আরেকজন মানুষকে হত্যা করার পরে তার দেহকে বিভিন্ন খন্ডে খন্ডিত করে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে দেয়, একজন মহিলাকে ধর্ষন করার পরে এসিড ছুড়ে দেয়, মা-বাবার সামনে কন্যাকে ধর্ষন করা হয়, স্বামীকে বেধে রেখে স্ত্রীকে ধর্ষন করা হয়, পু্ত্র-কন্যার সামনে মাকে ধর্ষন করে,শুধুমাত্র হিন্দু ,খ্রীস্টান,বৌদ্ব কিংবা উপজাতি হবার কারনে কিংবা রাজনৈতিক মতভিন্নতার কারনে অবলিলয়ার খুন করা হয়, ঘরে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে মারা হয়, সম্পত্তি থেকে উত্তক্ষাত করা হয়, দেশ ছাড়া করা হয় ,যেদেশের মেয়েরা রাস্তায় বের হলে বখাটেদের ইভটিজিং এর শিকার হয় এবং একপর্যায়ে সুইসাইডকে তাদের নিয়তি বলে মেনে নেয়। যেদেশে রক্ষক ভক্ষক হয়ে যায়,যেদেশের মন্ত্রীরা চোর , বিচারপতিরা ঘুষখোর ( বিচারপতি ফজলুল হক)ও জাল সার্টফিকেটধারী (বিচারপতি ফায়েজী) সেদেশের মানুষ কার কাছে যাবে বিচারে জন্য। যেদেশের পুলিশ থানা হাজতে অসহায় নারীদের ধরে ধর্ষন করে । যেদেশের মানুষ, মানুষকে মানুষ বলেই মনে করেনা। সেদেশের একজন মানুষ হিসেবে নিজেকে আমার নরকের কীট্ মনে হয়।

নিজেকে আমার বলেই মানুষ মনে হয়না। মনে হয় মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার অধিকার আমার নেই। ধিক্ আমার জন্ম। লজ্জায় আমার মাথা হেট হয়ে যায়। একবার ভাবুন যে শিশু ২,৩,৫,৮,১২ বা ১৪ বছর বয়সে ধর্ষনের বা যৌন হয়রানীর শিকার হয় সে শিশু কি ভয়াবহভাবে ,কতটা মানসিক ক্ষত নিয়ে সে বড় হচ্ছে।

আমি জানিনা আদালতপাড়ার সেই ধর্ষিতা শিশুর কিংবা ইয়াসমিনের আসল হত্যাকারীদের বিচার হয়ছিল কিনা। নাকি রাজনৈতিক ভন্ডামীর কারনে আসল খুনীরা পার পেয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমি আর চুপ থাকবনা। আজ জনতা জেগেছে। আজ আমার শরীরে ও মনে বি্দ্রোহের সূর।

আজ আমার রক্তে বান ডেকেছে। আজ আমার মতো সামহোয়্যারইনের সব ব্লগারের রক্তে জোয়ার এসেছে। বিভিন্ন মতাদর্শের হয়েও তারা কিছু ইস্যুতে এক হয়ে গেছে। আমি এ ব্লগে সবাইকে রাহেলা ও প্রাপ্তির ব্যাপারে এক হতে দেখেছি। আজ এইসব ইস্যুতেও তারা এক হবেই বলে মনে হচ্ছে।

না হয় এই ব্লগ লেখাই সার্ হবে। যে লেখা সমাজের মঙ্গল ও পরিবর্তনের কথা বলেনা, সে লেখার তো মুল্য নেই। এই ব্লগের সবাই সচেতন। আর সচেতন মানুষ মানেই দেশ নিয়ে ভাবেন বলেই আমার ধারনা। আমি এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করেই যাবো।

মানবী আপুর সাথে কন্ঠে কন্ঠ মিলাবো। আসুন আমরা সবাই দেশের জন্য এক হয়ে কাজ করি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।