আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুসন্ধিত্সা



বেশ দূরে ভাটাতে যাওয়া শ্রমিকদেরকে ছায়ার মতো লাগে। সূর্য তখনো ঘোমটা খোলেনি। নূরী শুদ্ধস্নানে ব্যস্ত। নদীতে আজ কোনো জেলের তত্পরতা নেই। তাই পুরো শরীরেই সুগন্ধী সাবান লাগিয়ে বেশ আয়েশে নদীর জলে ডুবে ডুবে অতীতকে ভুলতে চায় নূরী।

নদীর পূর্বপাড়ে মৃত্যুর পর পোড়ানো হয় আর পশ্চিম পাড়ে মৃত্যুর পর কবর দেয়া হয়। দু'পাড়ের পার্থক্য এটুকুই। গভীর রাতে নূরীর ওই শুদ্ধস্নানের সাক্ষি এতদিন শুধু চন্দ্র তারাই ছিল কিন্তু আজ নূরীকে দেখে ফেলে পশ্চিমপাড়ের কবরস্থানে বসে থাকা লাল্টু। সারারাত জেগে থাকার পর লাল্টুর যখন তেষ্টা পায় তখন এই ভোর ভোর। তেষ্টা মেটানোর জন্যে নদীতে যায়।

আর তখনি দেখতে পায় নূরীকে। ভেজা গায়ে নূরীর শীতল শরীর। ড্যাব ড্যাব করে চেয়ে থাকলেও নূরী তেমন ভ্রুক্ষেপ করে না লাল্টুকে দেখে। লাল্টু ভাবে রাতে যখন সে অমিয়'র কবরের পাশে শুয়ে ছিল তখন কি এই নূরীই কবরের পাশে এসে কেঁদেছিল? কবরের পাশে অস্পষ্ট যে ছায়ামেয়েটি কেঁদেছিল তার চেহারাটা লাল্টু ঠিক স্মরণ করতে পারে না। তখন ছিল রাত গভীর, আর অন্ধকার।

তার শরীরটাও বেশ দুর্বল ছিল কারণ, বেশ কয়েকটা শেয়ালের সঙ্গে রীতিমতো লড়াই করতে হয়েছিল অমিয়কে রার জন্যে। মানুষের মধ্যে এক ধরনের আত্ম-অস্বীকৃতির প্রবণতা থাকে কিন্তু লাল্টুর মধ্যে তা নেই। অমিয় একদিন বেশ করে কাঁদলে লাল্টু এসে তার চারপাশ ঘুরে ঘুরে তার নিজস্ব ভাষায় শান্ত্বনা দেয়ার চেষ্টা করছিল, আর শুনতে পেয়েছিল পাশের গ্রামের বধুবিদায়ের উথলে ওঠা কান্নার সুর। লাল্টুর এটুকুই শুধু মনে পড়ে। আর গত হয়ে যাওয়া রাতে অমিয়'র কবরের পাশে যে মানুষটিকে কাঁদতে দেখেছে তাকে এবার মনে পড়ে।

অমিয়'র সাথে মেয়েটির কত রাগ-অভিমানেরই না সাক্ষি হয়ে রয়েছে লাল্টু। লাল্টুর চোখেও তখন জল...!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.