আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দি দি রমেশ চন্দ্র মজুমদার-১



ডান হাতের আঙুলগুলিকে ভাঁজ করে মধ্যমাকে একটু উপরের দিকে ঠেলে, গ্রমিন আটপৌঢ়ে সবুজ শাড়ির মত সরকারী কাঠের দরজায় টোকা পড়ল; আবার টোকা পড়ল......আবার টোকা পড়ল.....আবার টোকা পড়ল। ভেতর থেকে কেউ একজন বিরক্তি মেশানো কন্ঠে চিৎকার করে জানতে চাইলো কে? যেনো এখানে কারো আসার কথা নয়। যেনো এখানে যারা আসে তারা অনাহুতো হয়। যেনো এখানে যারা আসে তাদের পরিচয় থাকতে হয়। আগন্তুক একবার কেশে বলে ওঠে 'আই এ্যাম দি দি রমেশ চন্দ্র মজুমদার'।

চুপচাপ কিছু সময় ছিটকেনি খুলে বেড়িয়ে যায় আর তিনি ভেতরে প্রবেশ করেন। তার পায়ে পাখির পালকের পাদুকা। তিনি হাঁটলে অসংখ্য পালকের চিৎকার কনসার্ট করে গান গায়। সে বেতের চেয়ারে গা এলিয়ে বসে থাকে; যেনো এখানে তিনি বসে থাকতে পারেন অনায়াসে অনন্তকাল। কিছুক্ষণ পর তিনি ওঠেন এবং পাদুকা খুলে লোহার পাদানিতে তুলে রাখেন।

তিনি ধীর পায়ে ফ্রীজের কাছে যান আর ভেতর থেকে বের করে আনেন বহুদিন আগের একরাত্রি জ্যোস্না; তিনি এবার ষ্টোর রুমের দিকে যান ও ভেতর থেকে একরাত্রি টাটকা অন্ধকার নিয়ে ডাইনিং টেবিলে রাখেন। যে লোকটি বিরক্তি নিয়ে তাকে দরজা খুলে দিয়েছিলো সে বিরক্তি নিয়ে ঘুমাতে চলে গেছে আবার; সকালে বিরক্তি নিয়ে তাকে বিদায় জানিয়ে ঘুমোতে চলে যাবে আবার......... আর কিছুক্ষণের মধ্যেই দি দি রমেশ চন্দ্র মজুমদার অবধারিত নিঃসঙ্গতায় পতিত হয়ে, পরিত্রাণের সিঁড়ি বেয়ে বেয়ে জ্যোস্না আর অন্ধকারের ব্লেন্ডার করা আলোয় প্রশ্বাস নিতে থাকে। কিন্তু তার ডিপ্রশান বাড়তে বাড়তে তা একসময় সাইক্লোনে রূপ নেয় আর সারা ঘরময় উড়তে থাকে পাখির পালক; তবুও সে বসে থাকে। সে যে কেউ, গুরুত্বপূর্ণ অথবা গুরুত্বহীন; জ্ঞানী অথবা মূর্খ; নিতান্ত পেশাদার ভালো মানুষ অথবা ভীষন ধারীবাজ; সত্য অথবা মিথ্যা; দৃশ্যত অথবা অদৃশ্য। এসবে তার কিছুই আসে যায় না।

এভাবে বসে থাকার চাইতে পৃথক আর কোন অস্তিত্ত নাই। (২০০৪)

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।