আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রবাস ভাবনা-সিডনীতে ঈদ!!

আসুন আমরা ভন্ডমুক্ত সমাজ গড়ি। ভন্ডরা বন্ধু হলেও পরিত্যাজ্য। এরা সমাজের বিষাক্ত কীট্!

সিডনতে প্রথম ঈদ। কিছুটা মন খারাপ,কারন এবারই প্রথম মা-বাবা,স্বজন,বন্ধু-বান্দব ছাড়া ঈদ করছি। আবার কিছুটা এক্সসাইটেড।

অনকেই হয়তবা ভাবেন বিদেশের ঈদ আর কতটা মজার? কিন্তু আমি ভাবি এ ঈদ আরো মাজার। সিডনিতে প্রায় ৪-৫ লাখ মুসলমানের বসবাস। তাদের মধ্যে লেবানীজরা সংখ্যাগরিষ্ঠ,যাদেরকে সবাই আড়ালে লেবু বলে ডাকে। বহুজাতির মুসলমানের সাথে ঈদের নামাজ পড়ার আনন্দ! তাদের বেশভূষাও আলাদা রকম। ইন্ডিয়ান,পাকিস্তানী,আফ্রিকান,ইন্দোনেশিয়ান এবং বাংলাদেশী মুসলিম ভাইদের সথে একই কাতারে নামাজ পড়ার আনন্দে মন ভরে গেলো।

সিডনিতে আসার পরে চাচার বাসায় থাকি। সকালে চাচা-ভাইস্তা মিলে চাচীর হাতে বানানো মিষ্টি খেয়ে নামাজ পড়তে গেলাম। রাস্তায় বের হয়ে তো দেখি সে এক আপূর্ব সি্ন-লাক্স কিয়া ছি্ন হ্যায়! হাজার হাজার মানুষ পান্জাবি-টুপি পড়ে নামাজে যাচ্ছে। মনটা ভরে গেলো। ল্যকেম্বা মসজিদের কাছাকাছি আসার পরে দেখি চারদিকে পুলিশের গাড়ি, রোড ব্লক।

সারা রাস্তা জুড়ে শুধু মানুষ আর মানুষ। একটু সামনে গিয়ে তো চোখ আমার ছানাভরা। রাস্তার দুদিকে সুন্দরি লেবানীজ তরুনিরা দাড়িয়ে দাড়িয়ে শোভা বর্ধন করছে। আমি ভাবি এ আবার কেমন কালচার! তরুন আর যুবকদের আকর্ষন যেন ওদিকে একটু বেশি। নামাজের আগে শুনলাম নিউ সাউথ ওয়েলসের প্রিমায়ার বব্ কার এসেছে ঈদ আনন্দ শেয়ার করতে।

শুনে খুব ভাল লাগলো। যাই হোক , একসময় নামাজ শুরু হল। ছোটবেলা থেকে ৬তাকবিরের নামাজ পড়তে অভ্যস্ত কিন্তু এখানে দেখি ১৩ তাকবিরের পর সবাই রুকুতে যায়। বাংগালীরা অনকেই ৪ তাকবরিরের পর রুকুতে যাবার উপক্রম করল। নামাজ শেষে দেখি সবাই তল্পিতল্পা গুটিয়ে কোলাকুলি শুরু করল।

আমি বলি একি কলি কাল! খুতবা, মুনাজাত এগুলা গেলো কই? নামাজ শেষে চাচার সাথে বিভিন্ন বাসায় ঘুরে অতঃপর নিজের বাসায় পদার্পন। শুরু হল মেহমান আপ্যায়ান। এদিকে আমার ব্যাকুল মন তো চণ্চল, সামাজিকতার যাতাকলে পিষ্ট। কারন এ মন চায় যে মোর!! বন্ধুদের টানে মন আকুল। আরো অবাক করা এক কান্ড ঘটে গেল, আমি এই বুড়ো বয়সে ঈদ সেলামি পেতে শুরু করলাম চাচামামাদের কাছ থেকে।

বিকালের দিকে তাদের সাথে ঘুরাঘুরি শেষে রাতে বাসায় পদার্পন। এবার মা-বাবা,চাচা -ফুফু,মামা-মামি,খলা-খালু, দেশের বন্ধুদের কাছে ফোন দেওয়া শুরু। সারা রাত কথা বলে ক্লান্ত হয়ে দেখি ভোর হয়ে গেছে! তারপরে এক লম্বা ঘুম...। যতটা খারাপ হবে বলে ভেবেছিলাম ঈদ আসলে ততটা খারাপ হয়নি। চাচা-মামরা থাকার কারনে মনে হ্য়েছে যেন দেশেই ঈদ করছি,ফ্যামিলীর সাথেই আছি।

আর এ সবই ছিল আমার ঈদের এক্সপেরিয়েন্স! এখন আর নিয়ে আন্দোলিতো হইনা। এবারে ঈদে নামাজই পড়া হইনি।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।