চলে যেতে যেতে বলে যাওয়া কিছু কথা
"মাসুদের সাথে আমার সম্পর্কের কথাটি একটুও ভাবলে না। "
জোহরা মামার দিকে অভিমানী দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে।
"আমরা তোকে ভেবে চিন্তেই পাত্রস্থ করছি। " মামা জোহরাকে আশস্থ করেন।
"আর গত ৬ বছর ধরে ত ও লাপাত্তা।
"
"বাবা ওকে যেভাবে অপমান করেছেন তারপরও কি তার পক্ষে সম্ভব ছিল যোগাযোগ রাখা। "
জোহরা মাসুদের পক্ষ নিয়ে যুক্তি দেখায়।
"দেখ তোর বাবার পক্ষেও সম্ভব ছিলনা চালচুলোহীন একটা ছেলের সাথে তোর বিয়ে দেয়া। "
"তাই বলে এখন কওয়া নেই বলা নেই হুট করে একটা ছেলের সাথে বিয়ের পিড়িতে বসব তাও কালকে। আমি তোমাকে এত বিশ্বাস করতাম আর তুমি কিনা?"
"আমি তোর বিস্বাসের অমর্যাদা করবনারে পাগলি।
"
"কিন্তু তুমি ত জান মাসুদ ছাড়া অন্য কাউকে আমি মেনে নিতে পারবনা। "
"দেখ জোহরা জীবনে অনেক কিছুই মেনে নিতে হয় যা মেনে নেয়া কঠিন হয়। "
জোহরার বাবা এবারের বিয়েতে আর অমত করেন নি। দুটো কারন, এক জোহরার মামার চয়েস, দুই ছেলেটির বায়োডাটা দেখে উনি সন্তুষ্ট। যদিও ছেলেটিকে উনি দেখেননি।
জোহরার মামার মুল্যায়ন ছেলেটি দেখতেও মন্দ নয়।
"জোহরা ছেলেটি দেখতে কিন্তু দারুন স্মার্ট, তোর দেখে পছন্দ হবে। " মামা জোহরাকে বললেন।
মামা মাসুদকে দেখেননি, চার বছর আগে উনি যখন দেশে ফিরেন তখন অলরেডি জোহরা আর মাসুদের সম্পর্কে নিষেধাক্ষা জারি করেছেন জোহরার বাবা।
আগামীকালের মধ্যেই বিয়ের তাগিদ দিয়েছে ছেলেটি, দুদিনের মধ্যেই কর্মস্থল আমেরিকায় যাত্রা করতে হবে।
টিকেট আর বিবিধ ঝামেলায় পাত্রী পক্ষের সাথে ইন্টারভিও দেয়ার সুযোগ নেই।
তাই মামা ছাড়া পাত্র সম্পর্ক মামা ছাড়া পাত্রী পক্ষ অন্ধকারে আছে বললেই চলে।
সারারাত নিজের সাথে বোঝাপড়া চলল জোহরার, গলায় দড়ি দেয়ার চিন্তাও এসেছিল মাথায়, কিন্তু কাজটা তার মত সাহসী আর বুদ্ধিমান মেয়ের জন্য অপমানজনক হবে ভেবে ক্ষান্ত দিল।
মা অসুস্থ, বাবা বুড়িয়ে গেছেন, মামাকে উনাকে সন্তানের চাইতেও বেশি আদর করেন।
আর একটি ছেলের জন্য সারাজীবন নিঃসংগ একাকী জীবন কাটিয়ে দেয়াটা বোকামী।
এমনও ত হতে পারে মাসুদ বিয়ে সাদি করে সুখের সংসার করছে, এ কয় বছরে একটিবার হলেও ত যোগাযোগ করা উচিত ছিল ওর।
ভোর অবদি নিজেকে চোখের জলে ভাসাল জোহরা। শেষে সিদ্ধান্ত নিল বিয়েটাকে স্বাভাবিকভাবে মেনে নেবে।
বাসর রাত্রি।
জোহরা অজানা লোকটার সামনে ঘোমটা দিয়ে বসে আছে।
"শুনেছি অনেক বছর আগে তোমার একজন প্রেমিকা ছিল। তাকে ভুলে আমাকে গ্রহন করতে পারবে ত। "
লোকটির কথায় চমকে উঠল জোহরা, বাসর রাত্রে একিরকম কথোপকথন।
মামা কি মাসুদের কথা লোকটিকে বলে দিয়েছেন।
ভয়ে কাপুনি এসে যায় জোহরার।
আগে আমার দিকে তাকাও, আপাতত চেহারাটা পছন্দ কিনা বল?
লোকটি আস্তে আস্তে জোহরার মুখের ঘোমটা খুলে নেয়।
ভয়ে ভয়ে চোখ মেলে তাকায় জোহরা।
তাকিয়ে দেখে মাসুদ মিটিমিটি হাসছে, নতুন যোগ মুখে চাপ দাড়ি।
প্রায় চিতকার করে উঠে জোহরা, সবাভাবিক হয়ে এলে মাসুদের দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করে, "মামাকি সব জানতেন?" তাতক্ষনিক কোন উত্তর দেয় না মাসুদ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।