আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইবাদত-বন্দেগীতে ভারসাম্য বজায় রাখার বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের শিক্ষা

"অবশ্যই আমার নামাজ আমার এবাদাত আমার জীবন আমার মৃত্যু সবকিছুই সৃষ্টিকুলের মালিক আল্লাহর জন্যে। "

*** মুমিনের জীবনের সব কাজের মধ্যে একটা ভারসাম্য থাকা দরকার। কোন একদিকে বেশী ঝুঁকে পড়লে অন্যদিকের কাজের অবশ্যই ক্ষতি হবে। এজন্য প্রতিটি কাজের গুরুত্ব অনুযায়ী সময়, অর্থ ও শ্রম দান করা অপরিহার্য। যে কোন কাজ নিয়মিত করলে তাতে বরকত হয় এবং তাতে যোগ্যতাও বাড়ে।

নিয়মিত কাজ অল্প হলেও সেটা স্থায়ী হয় এবং তাতে ভালো ফল পাওয়া যায়। কোন ব্যাপারে সীমা লংঘন করে বাড়াবাড়ি করলে বা মাত্রাতিরিক্ত করলে তাতে যেমন বিশৃংখলা সৃষ্টি হয়, তেমনি তাতে ক্লান্তও হয়ে যেতে হয় এবং এতে যোগ্যতার বিকাশও হয় না। কারণ জীবনের কাজ তো অনেক। আল্লাহর হক আদায় করার সাথে সাথে বিভিন্ন বান্দার হকও আদায় করতে হয়। আর এজন্য আবার নিজের জরুরী ও প্রয়োজনীয় হকও আদায় করতে হয়।

নতুবা কোন হকই ঠিকমতো আদায় করা সম্ভব হবে না। হঠাৎ করে জয্‌বায় এসে অনেক কাজ করে ফেলা এবং তারপর আর কোন তত্পরতা না থাকা ইসলামের মেজাজ নয়। তাই প্রত্যেকের পূর্ণ শক্তিকে সঠিকভাবে কাজে লাগিয়ে ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় সব কাজ নিয়মিতভাবে করতে থাকা কুরআন ও হাদীসের দাবি। _________ "... আল্লাহ তায়ালা তোমাদের (জীবন) আসান করে দিতে চান, আল্লাহ তায়ালা কখনোই তোমাদের (জীবন) কঠোর করে দিতে চান না। ..." (সূরা আল বাকারাঃ আয়াত ১৮৫) "(হে নবী,) আমি (এ) কোরআন এ জন্যে নাযিল করিনি যে, তুমি (এর দ্বারা) কষ্ট পাবে," (সূরা ত্বাহাঃ আয়াত ২) আনাস (রা) থেকে বর্ণিত।

তিনি বলেন, তিনজন লোক নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের স্ত্রীগণের বাড়িতে আসে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের ইবাদত সম্পর্কে জানার জন্য। যখন তাদেরকে এ সম্পর্কে অবহিত করা হল, তারা এটাকে (নিজেদের জন্য) কম মনে করল। তারা বলতে লাগল, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের তুলনায় আমরা কোথায়? তাঁর পূর্বাপর সব তো মাফ করা হয়েছে। তাদের একজন বলল, আমি অনবরত সারা রাত নামাযে মগ্ন থাকব। আরেকজন বলল, আমি অনবরত রোযা থাকব, কখনও রোযাহীন থাকব না।

একজন বলল, আমি নারীদের থেকে দূরে থাকব এবং কখনও বিবাহ করব না। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের কাছে এসে বললেন, তোমরা কি এরূপ এরূপ কথা বলেছ? আল্লাহ্‌র শপথ ! তোমাদের চেয়ে আমি আল্লাহকে বেশ ভয় করি এবং বেশী তাক্‌ওয়া অবলম্বন করি। কিন্তু আমি তো রোযা রাখি আবার খাই, নামায পড়ি আবার ঘুমাই এবং বিয়েশাদীও করি। যে ব্যক্তি আমার নিয়ম পালন করবে না সে আমার (দলভুক্ত) নয়। (বুখারী ও মুসলিম) ইবনে মাসঊদ (রা) থেকে বর্ণিত।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, অযথা কঠোরতা অবলম্বনকারীরা ধ্বংস হয়েছে। তিনি এ কথা তিনবার বলেছেন। (মুসলিম) আইশা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কারো নামাযরত অবস্থায় ঘুম এলে সে যেন শুয়ে যায়, যতোক্ষণ না তার ঘুম চলে যায়। কেননা তন্দ্রা অবস্থায় নামায পড়লে সে হয়ত ক্ষমা প্রার্থনা করতে গিয়ে নিজেকে গালি দিতে থাকবে।

(বুখারী ও মুসলিম) ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবাদানকালে এক ব্যক্তিকে দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় দেখতে পেলেন। তিনি তার সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে সাহাবীগণ বললেন, এ ব্যক্তি আবু ইসরাইল। সে মানত করেছে যে, সে রোদে দাঁড়িয়ে থাকবে, বসবে না, ছায়ায় যাবে না এবং কারও সাথে কথা বলবে না, আর রোযা রাখবে। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তাকে হুকুম দাও যেন সে কথা বলে, ছায়ায় যায়, বসে এবং তার রোযা পূর্ণ করে।

(বুখারী)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।