ধুলো থেকে আগমন আবার ধুলোতেই প্রত্যাবর্তন
ভাল না বাসতে বাসতেই মানুষ একদিন ভালবাসে
যদিও কখনও কখনও ভালবাসতে বাসতে মানুষ ঘৃনাও করে
ঘৃনা করলেও মানুষ আসলে ভাল না বেসে পারেনা।
ভালবাসার জন্য মানুষের জীবন অতি ক্ষুদ্র
কিন্তু জীবন ক্ষুদ্র বলেই ভালবাসার মধুরতা এত তীব্র"
পৃথিবীর মানুষদের নাকি প্রীয় শব্দের তালিকায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে আছে,"ভালবাসি" শব্দটি। কিন্তু কখনও শিশির বিন্দুর মত অথবা কখনও অপেক্ষার মুহূর্তের মত সুদীর্ঘ মানবজীবনের জন্য অতীব গুরুত্বপূর্ণ এই শব্দটির মর্মার্থ কি? "ভালবাসা" ব্যাপারটা আসলে কি? অনেক গুণিজন এ ব্যাপারটা নিয়ে অনেক ভেবেছেন, অনেক Hypothesis দাঁড় করিয়েছেন- ফলাফল শূণ্য। সেই সকল হাইপোথিসিস আর গবেষনার কিছু কথাই তুলে ধরছি-
কেউ কেউ বলেছেন ভালবাসার বাস মনে। মন যেহেতু আমাদের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে তাই বৈজ্ঞানিক কোন যন্ত্রেও ভালবাসাকে ধরা-ছোঁয়া যাবেনা।
একদল বললেন-মন আবার কি?মস্তিষ্কই মন। মানুষের যাবতীয় আবেগের একমাত্র নিয়ন্ত্রক হল মস্তিষ্ক। মস্তিষ্ক মানুষের ধরা-ছোঁয়ার বাইরে নয় তাই ভালবাসাও মানবজাতীর ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে হতে বাধ্য, বাইরে নয়। Brain এর Temporal Lobe এ বাস করে ভালবাসা বা Love নামক শব্দ যেটাকে আমরা স্পর্শ করতে পারিনা কিন্তু অনুভব করতে পারি। প্রত্যেক ভালবাসার যে নিজস্ব একটা ধরণ আছে, আছে একটা নিজস্ব প্রকৃতি তা ঐ মস্তিষ্কেরই জটিলতার অংশ।
প্রত্যেকের ভালবাসার প্রকাশও হয়ে থাকে ভিন্ন।
আরেকদল বলেন- কিছুই হয়নি। মানুষের আবেগ,ভয়-ভিতী সবকিছুর মূল নিয়ন্ত্রক হল পিটুইটারী গ্ল্যান্ড। একটা মেয়ে যখন একটা ছেলের প্রেমে পড়ে তখন ছেলেটিকে দেখামাত্রই পিটুইটারী গ্ল্যান্ড থেকে একধরণের বিশেষ এনজাইম বের হতে থাকে। সে Enzyme এর কারণেই ছেলেটি তখন যাই করে মেয়েটির কাছে তাই ভাল লাগে।
ছেলেটি যদি ফোত্ত শব্দ করে নাক ঝেড়ে সিকনিতে হাত ভর্তি করে ফেলে তখনও মেয়েটির কাছে মনে হয়-" আহারে কি সুন্দর করেই না নাক ঝাড়ছে। "
ভালবাসার সর্বশেষ Theory তে বৈজ্ঞানিকরা বলেছেন- প্রকৃতির প্রধান ইচ্ছা হল তার সৃষ্ট জীবজগত যেন টিকে থাকে। জীব জগতের কোন বিশেষ ধারা যেন পরিবর্তিত না হয় বা বিলুপ্ত না হয়ে যায়। প্রানী জগতের একটি প্রধান ধারা হচ্ছে - Homo sapians - মানবজাতী। মানবজাতীকে টিকে থাকতে হলে তাদের সন্তান হতে হবে এবং উত্কৃষ্ট সন্তান হতে হবে।
সন্তান হবার জন্য মানব মানবীকে খুব কাছাকাছি আসতে হবে। কাজেই তাদের ভেতর একের জন্য অন্যের একটা প্রবল শারিরীক আকর্ষন তৈরী করতে হবে। এই শারিরীক আকর্ষণের একটা রুপ হচ্ছে ভালবাসা। সেই ভালবাসার তীব্রতারও হের ফের হয়। প্রকৃতি যখন দেখে দুটি বিশেষ মানব মানবীর মিলনে উত্কৃষ্ট সন্তান তৈরীর সম্ভাবনা তখন তাদের ভালবাসাকে অতি তীব্র করে দেয় যেন তারা একে অন্যকে ছেড়ে চলে যেতে না পারে।
কোন বাধাই তখন তাদের কাছে বাধা বলে মনে হয়না। ছেলেরা রুপবতী মেয়েদের প্রেমে পড়ে কারণ প্রকৃতি চায় পরবর্তি প্রজন্ম যেন সুন্দর হয়। গুণী মানুষদের প্রেমে মেয়েরা যুগে যুগে পাগল হয়েছে কেননা প্রকৃতির সেই পুরোনো খেলা -প্রকৃতি চাচ্ছে পুরুষদের গুণ গুলো যেন পরবর্তী প্রজন্মে D.N.A এর মাধ্যমে প্রবাহিত হয়। প্রকৃতি প্রান পনে চাচ্ছে সম্প্রদায়ের গুণ গুলো যেন নষ্ট না হয়ে যায়, যেন প্রবাহিত হতে হতে একসময় পূর্ণ বিকশিত হয়। তৈরী হয় একটা অসাধারণ মানব সম্প্রদায়।
এইসব গবেষনা, তথ্য, এগুলো যে সব গুলোই অর্থ ও গুরুত্ব বহন করে বা করবে তা কিন্তু নয়। কিন্তু একটা ব্যাপার কমন আর তা হল- ভালবাসায় অবগাহন করা। ভালবাসা বাসির কারণ যাই হোকনা কেন ভালবাসাটাই মূল। আসুন আমরা সকল বিভেদ এবং হিংসা ভুলে গিয়ে কেবল মাত্র একটা অসাধারণ মানব সম্প্রদায় গড়ার কাজে লেগে যাই-পৃথিবীর কোন কিছুই মানুষের আওতার বাইরে নয়। শিখিয়ে পড়িয়ে যদি ডাক্তার , ইন্জিনীয়ার বানানো যায় তবে অসাধারণ কিছু মানুষ কেন গড়া যাবেনা? অবশ্যই যাবে।
আমরাই পারি Impossible শব্দটিকে কেবল মাত্র ডিকশনারীতে স্থান দিতে। আমরাই পারি সোনালী ইতিহাস হয়ে রয়ে যেতে যুগান্তরের পাতায় পাতায়। নইলে গর্ভধারিনী জন্মদাত্রী মায়ের দশমাসের কষ্ট যে বিফলে যাবে! মূল্যহীন হয়ে যাবে তার মৃত্যু যন্ত্রনাসম প্রসব যন্ত্রনার কাতরতা! পবিত্রতা হারাবে সন্তান জন্মানোর পর পৃ্থিবীর সকল পিতার চোখের পানির-আনন্দের অশ্রুর! এ ধরার প্রতিটি বৃক্ষ যে ধিক্কার জানাবে যারা এত দিন ধরে প্রশ্বাসে প্রশ্বাসে অক্সিজেন বইয়ে দিয়ে সচল রেখেছে আমাদের! আসুন শোধ করি পিতা-মাতা আর একটি চিরনীরব বৃক্ষের নিঃস্বার্থ ঋন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।