আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আরও ৮০ জন সন্দেহভাজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ব্যক্তির নামের তালিকা প্রকাশ



সন্দেহভাজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজ হিসাবে আরও ৮০ ব্যক্তির নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। তালিকার প্রথম নামটি ঢাকার মেয়র সাদেক হোসেন খোকার এবং দ্বিতীয় নামটি খুলনার মেয়র শেখ তৈয়বুর রহমান। তালিকায় আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের মধ্যে তোফায়েল আহমদ, সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী ও খ ম জাহাঙ্গীর হোসাইনের নাম রয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা বিচারপতি ফজলুল হকের নাম আছে এ তালিকায়। বিএনপি’র বেশ ক’জন সংস্কারপন্থী নেতার নামও এতে রয়েছে।

তাছাড়া তালিকায় বেশ ক’জন সরকারি আমলা এবং প্রকৌশলীর নামও রয়েছে। সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের সর্বশেষ এ তালিকায় বিএনপি নেতা রয়েছেন ২০ জন ও আওয়ামী লীগের ১১ জন। এছাড়া কর্ণেল (অবঃ) অলি আহমদের নেতৃত্বাধীন এলডিপির ২ জন, জামায়াতে ইসলামীর ২ জন ও জাতীয় পার্টির একজন নেতা রয়েছেন। তালিকায় ১৭ জন আমলা, ৮ জন ইঞ্জিনিয়ার, ১২ জন ব্যবসায়ী ১ জন এনজিও সংগঠক, ১ জন সিবিএ নেতা, একজন পৌরসভা চেয়ারম্যান ও কয়েকজন ওয়ার্ড কমিশনার রয়েছেন। আছেন পলাতক বিএনপি নেতা হারিছ চৌধুরীর ব্যবসায়িক পার্টনার কৃষিবিদ জাভেদ ইকবাল ও প্রশিকার চেয়ারম্যান ড: কাজী ফারুক আহমেদ।

বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্ব গ্রহণের পর সন্দেহভাজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজদের এটি তৃতীয় তালিকা। এর আগে দু’দফায় ৫০ জন করে মোট ১০০ জন সন্দেহভাজন শীর্ষ দুর্নীতিবাজের নামের তালিকা প্রকাশ করা হয়েছিল। তাদের অনেকেই ইতিমধ্যে গ্রেফতার হয়ে জেল-হাজতে রয়েছেন। গুরুতর অপরাধ ও দুর্নীতি দমন জাতীয় সমন্বয় কমিটি গতকাল যে ৮০ জনের নামের তালিকা প্রকাশ করেছে এরমধ্যে আটক রয়েছেন অন্ততঃ ৬ ব্যক্তি। বাকিদের কেউ কেউ বিগত কয়েক মাস যাবৎ দেশের বাইরে অবস্থান করছেন।

তালিকায় বিএনপির ২ মেয়র ছাড়া আরও যেসব সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজের নাম রয়েছে, তারা হলেন সাবেক প্রবাসী কল্যাণ ও নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী মেজর (অবঃ) কামরুল ইসলাম, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সাবেক ত্রাণ উপমন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলু, বিএনপি দলীয় সাবেক এমপি মেহেদী আহমেদ রুমী (কুষ্টিয়া), শহীদুল হক জামাল (বরিশাল), শহিদুল ইসলাম (ঝিনাইদহ), আবুল খায়ের ভূঁইয়া (লক্ষীপুর), ডা: দেওয়ান সালাহউদ্দিন বাবু (সাভার), ফজলুল হক মিলন (গাজীপুর), আব্দুল গফুর ভুঁইয়া (কুমিল্লা), ইলিয়াস আলী (সিলেট), অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ওরফে ভিপি জয়নাল (ফেনী) ও সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল (নরসিংদী)। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহমদ, সাজেদা চৌধুরী ও খ ম জাহাঙ্গীর ছাড়া অন্য যাদের নাম রয়েছে তারা হলেন সাবেক এমপি আব্দুল লতিফ মির্জা, বরিশালের আওয়ামী লীগ নেতা শওকত হোসেন হীরন, আটক আওয়ামী লীগ নেতা কাজী জাফর উল্লাহ, সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ইসহাক আলী খান পান্না, এনামুল হক শামীম, আবুল হাসনাত আব্দুল্লাহর ছেলে সাদেক আব্দুল্লাহ, সাবেক এমপি রহমত উল্লাহ, শামীম ওসমানের ভাই নাসিম ওসমান ও ওয়ার্ড কমিশনার সলিমুল্লাহ সলু। এলডিপির দু’জন হলেন সাবেক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপিকা জাহানারা বেগম ও মীরেশ্বরাইয়ের সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ। জামায়াতের দুই নেতা হলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও দৈনিক নয়া দিগন্ত পত্রিকার চেয়ারম্যান মীর কাশেম আলী এবং গাজীপুর জেলা জামায়াতের সেক্রেটারী মাওলানা সামিউল হক ফারুকী। বিএনপির অন্য নেতারা হলেন বিআরটিসির সাবেক চেয়ারম্যান ও নারায়ণগঞ্জের বিএনপি সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার, কমিশনার নবীউল্লাহ নবী, রাজশাহীর শীশ মোহাম্মদ, ঢাকার ওয়ার্ড কমিশনার শহীদ ওরফে শহীদ কমিশনার, সাবেক অর্থমন্ত্রী এম সাইফুর রহমানের পুত্র সফিউর রহমান বাবু।

তালিকায় সাবেক ও বর্তমান আমলাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইন সচিব আলাউদ্দিন সরদার, সাবেক যোগাযোগ সচিব রেজাউল হায়াত, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার দুই এপিএস আব্দুল মতিন ও শামসুল আলম, প্রটোকল অফিসার ফরিদুল ইসলাম, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এপিএস আলাজউদ্দিন নাছিম, বগুড়ার সাবেক জেলা প্রশাসক (বর্তমানে যুগ্মসচিব) রফিকুল মোহাম্মেদ, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ইব্রাহিম খলিল, ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশনের সাবেক মহাপরিচালক প্রফেসর হাবিবুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এজিএম গোলাম মোস্তফা, টেলিটকের সাবেক এমডি মো: ওবায়দুল্লাহ, টিএ্যান্ডটির ডিভিশনাল ইঞ্জিনিয়ার মো: তৌফিক, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য আলী আহমদ ও অতিরিক্ত কমিশনার গোলাম মোস্তফা, বাংলাদেশ গ্যাস ফিল্ড কোম্পানীর শহীদুল আবেদীন, বঙ্গভবনের সাবেক সহকারী সচিব মো: নাছির। ব্যবসায়ীদের মধ্যে তালিকায় নাম রয়েছে ট্রান্সকম গ্রুপের চেয়ারম্যান ও দৈনিক প্রথম আলো-ডেইলী স্টারের মালিক লতিফুর রহমান, বেঙ্গল গ্রুপের আবুল খায়ের লিটু, ইসলাম গ্রুপের মঞ্জুরুল ইসলাম বাবু, এম জি এইচ গ্রুপের আনিস আহমেদ গোর্কি, চট্টগ্রামের ব্যবসায়ী শওকত হোসেন, র‌্যাংগস গ্রুপের চেয়ারম্যান রউফ চৌধুরী, নিটল গ্রুপের চেয়ারম্যান আব্দুল মাতলুব আহমাদ, যুবকের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী, রেজা কনস্ট্রাকশনের ইঞ্জিনিয়ার আফতাব, আব্দুল মোনেম লিমিটেডের আব্দুল মোনেম, তালুকদার মানি এক্সচেঞ্জের আব্দুল আওয়াল তালুকদার ও নরসিংদীর ব্যবসায়ী কাদের মোল্লা। ইঞ্জিনিয়ারদের মধ্যে রয়েছেন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের সাবেক চীফ ইঞ্জিনিয়ার ফজলুল হক, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী খন্দকার আজাদুর রহমান, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী গিয়াসউদ্দিন তুলু, শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের সাবেক প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান, সিভিল এভিয়েশন অথরিটির প্রধান প্রকৌশলী হারুনুর রশীদ, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্বাহী প্রকৌশলী মোজাফফর হোসেন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের জহিরুল করিম। এছাড়া শ্রীমঙ্গলের পৌরসভা চেয়ারম্যান মোহসীন মিয়া ওরফে মধুমিয়া এবং জনৈক হাজী আমিনুল হক শামীম ও জনৈক সরকারি কর্মকর্তা মোসলেউদ্দিনের নাম রয়েছে তালিকায়। শেষোক্ত দু’জনের বিস্তারিত পরিচয় তালিকায় উল্লেখ করা হয়নি।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, এই ৮০ জনের পর আপাতত সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের আর কোন তালিকা প্রকাশ করা হচ্ছে না। তবে দুর্নীতি দমনের প্রচলিত আইনে দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্বাভাবিক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে দুর্নীতি দমন কমিশন। সে ক্ষেত্রে কমিশনের চাহিদামাফিক প্রয়োজনীয় সহায়তা দেবে সরকার। সুত্র: ইত্তেফাক

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।